অপহরণ নাটক সাজিয়ে আত্মগোপন, মায়ের বিরুদ্ধে ছেলের জবানবন্দি
<![CDATA[
খুলনার আলোচিত রহিমা বেগম অপহরণ হননি। বরং স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। আদালতে এমনটা জানিয়ে জবানবন্দী দিয়েছেন ছেলে মিরাজ আল সাদী। সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর মাধ্যমে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারায় এ জবানবন্দী দেন তিনি।
পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জবানবন্দীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মিরাজ আল সাদী সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় নিজ উদ্যোগে আদালতে এ জবানবন্দী দেন বলে জানান তিনি। আদালতে জবানবন্দী দেয়ার বিষয়টি মিরাজ আল সাদী নিজেও সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানান, রহিমা বেগমের ছেলে মিরাজ আল সাদী দুপুরের পর খুলনা পিবিআই কার্যালয়ে এসে তার মায়ের ব্যাপারে কিছু কথা বলেছেন।
পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার জানান, তার মা অপহরণের নাটক সাজিয়েছেন। তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। কিন্তু তিনি আদালতে ভুল জবানবন্দী দিয়েছেন। বিষয়টি বুঝতে পেরে তার খারাপ লেগেছে। এ কারণে মিরাজ আল সাদী ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিতে চান। পরে তাকে আদালতে নেয়া হলে জবানবন্দী দেন তিনি। জবানবন্দিতে মিরাজ আল সাদী একই বিষয়ে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: ‘আত্মগোপনে’ ছিলেন মরিয়ম মান্নানের মা!
সৈয়দ মুশফিকুর রহমান জানান, মায়ের এই আত্মগোপনের পিছনে তিনি কোনভাবেই জড়িত নন বলে আদালতে জানিয়েছেন মিরাজ আল সাদী। তিনি বলেছেন, কিছুই জানতেন না তিনি। তার ওই জবানবন্দী আইনানুযায়ী আদালতে রেকর্ড হয়েছে।
গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের নলকূপে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। কিন্তু এক ঘণ্টা পরও তিনি বাসায় না ফেরায় তার সন্তানেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। নলকূপের পাশে তাদের মায়ের জুতা, ওড়না ও পানির পাত্র পড়ে থাকলেও মাকে তারা খুঁজে পাননি।
এ ঘটনায় ওই রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে মিরাজ আল সাদী দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন মেয়ে আদুরী আক্তার। এছাড়া বিষয়টি র্যাবকেও জানানো হয়। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মায়ের সন্ধান চেয়ে ঢাকায় মানববন্ধনের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে দৌড়ঝাঁপ করে আসছিলেন সন্তানরা।
আরও পড়ুন: জীবিত উদ্ধার মা, ‘সাজানো নাটক’ নিয়ে যে ব্যাখ্যা দিলেন মরিয়ম মান্নান
এর মধ্যে ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার বওলা গ্রামের ঝোপ থেকে উদ্ধার হওয়া লাশটি নিজের মায়ের বলে দাবি করেন মরিয়ম মান্নান। ‘লাশ শনাক্তে’ এরপর তিনি ফুলপুর থানায় যান। সে সময় মরিয়ম লাশটি তার মায়ের দাবি করে নিয়ে যেতে চান। সেখানে লাশের পরিহিত কাপড় দেখেন।
এরপর মরিয়ম দাবি করেন, লাশটি তার মায়ের। পরে মরিয়ম মান্নান ফুলপুর থানায় ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন করেন। নিখোঁজের ২৯ দিন পর ২৪ সেপ্টেম্বর খুলনা নগরের দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা এলাকা থেকে রহিমা বেগমকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
]]>