অবশেষে ফিরলেন নবজাতককে হাসপাতালে ফেলে যাওয়া সেই মা
<![CDATA[
তিনদিনের সদ্য নবজাতককে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে মা চলে গেছে তার বাবার বাড়ি। অন্যদিকে সেই সন্তানকে বাঁচাতে নবজাতকের মাকে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে আকুতি জানায় বাবা মোকছেদ আলী।
এমন সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশের পর দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার, ওসি চিত্তরঞ্জন রায় ও গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটনের সহযোগিতায় সেই মা তিনদিন পর মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) মধ্যরাতে পৌঁছালেন হাসপাতালে। সন্তানটি বর্তমানে সুস্থ রয়েছে।
নবজাতকের বাবা ও পুলিশ জানিয়েছে, দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পাকেরহাট গুন্দুশাহ পাড়ার মোকছেদ আলী ও গোয়ালডিহির সাঁকোরপাড় এলাকার আব্দুস সাত্তারের মেয়ে আয়শা সিদ্দিকার সাথে বিয়ের পর কয়েক মাস থেকে ঝগড়া-বিবাদ লেগে থাকত। এরপরও সংসার জীবনে ২ নভেম্বর সন্ধ্যায় দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। ৫ নভেম্বর হাসপাতালে নবজাতকের বাবার সাথে মা ও নানা-নানীর কথা কাটাকাটির জেরে সন্তানকে হাসপাতালের বেডে রেখে মা-নানা-নানী কাউকে কোনো কিছু না বলে গোপনে বাড়ি চলে যায়।
এদিকে সন্তান মায়ের দুধের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে আত্মীয়দের মাধ্যমে বাড়ি চলে যাওয়ার খবর জানতে পেরে ৬ নভেম্বর সকালে নবজাতকের বাবা রাগ-অভিমান ভুলে স্ত্রীকে হাসপাতালে ফিরিয়ে আনতে শ্বশুর বাড়িতে গেলেও স্ত্রী ফিরে আসেনি। এদিকে সন্তানের অবস্থাও দিন দিন সংকটাপন্ন হওয়ায় রোববার (৬ নভেম্বর) থেকে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) পর্যন্ত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে না পারেননি।
আরও পড়ুন: শেরপুরে ড্রেন থেকে নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার
নবজাতকের বাবা মোকছেদ আলী বলেন, তিনদিন ধরে মায়ের দুধ না পেয়ে সন্তান ছটপট করে কান্নাকাটি করেছিল। এমনকি সন্তানের অবস্থাও ভাল ছিল না। আমার স্ত্রী যদি সংসার নাও করে তবুও সন্তানটিকে বাঁচার জন্য তাকে হাসপাতালে আনার অনেক চেষ্টা করছি। সে তো আসেনি বরং আমাকে ফোনে মামলা হামলার হুমকি দিচ্ছে। সন্তানকে বাঁচানোর জন্য সংবাদ প্রচারের পর রাতেই আমার স্ত্রী হাসপাতালে এসেছে। বর্তমানে সন্তান সুস্থ রয়েছে।
গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন লিটন বলেন, আমি মেয়ের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তাদের হাসপাতালে যাওয়ার কথাও ছিল। কিন্তু ফেসবুকে দেখি তিনি যাননি। পরে ইউএনও ও ওসির সহযোগিতায় রাতেই সেই মাকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশিদা আক্তার বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হলেও একজন মা কখনো এরকম কাজ করতে পারে না। সংবাদটি দেখার পরেই ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সেই মাকে হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও সন্তানটির চিকিৎসার জন্য সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দেন নির্বাহী কর্মকর্তা।
]]>