অ্যাসাঞ্জের মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান বিশ্বের শীর্ষ পাঁচ গণমাধ্যমের
<![CDATA[
বহুল আলোচিত সংবাদমাধ্যম উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা ও সাংবাদিক জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের বিচার অবশ্যই ইতি টানতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। মার্কিন সরকারের প্রতি এমন জোরালো আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ গণমাধ্যমগুলো। তারা বলছে, উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের মামলা মতপ্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বর্তমানে লন্ডনের একটি কারাগারে বন্দি রয়েছেন। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে করা মামলায় তাকে বিচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেয়ার তোড়জোড় করছে যুক্তরাজ্য সরকার।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) একটি খোলা চিঠি লিখেছে বিশ্বের প্রধান পাঁচটি সংবাদমাধ্যম। সংবাদ মাধ্যমগুলো হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক টাইমস, যুক্তরাজ্যের দ্য গার্ডিয়ান, ফ্রান্সের লে মন্ডে, জার্মানির ডের স্পিগেল ও স্পেনের পাইস।
খোলা চিঠিতে খ্যাতনামা সংবাদ মাধ্যমগুলোর সম্পাদক ও প্রকাশকরা অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ‘অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও বিচার বাজে ও বিপজ্জনক নজির তৈরি করছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ভূলুণ্ঠিত করছে।’
আরও পড়ুন: অ্যাসাঞ্জের মুক্তির দাবিতে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সামনে মানববন্ধন
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, ‘গণতান্ত্রিক শাসবব্যবস্থায় দেশে দেশে সরকারগুলোকে জবাবদিহিতার আনার চেষ্টা মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের প্রধান কাজ।’ চিঠিতে তারা আরও বলেন, ‘তথ্য প্রকাশ করা কোনো অপরাধ নয়।’
২০০৬ সালে উইকিলিকস চালু করেন অ্যাসাঞ্জ। এতে তিনি একের পর এক গোপন মার্কিন নথিপত্র প্রকাশ করতে থাকেন। ২০১০ সালের জুলাইয়ে উইকিলিকস ‘ক্যাবলগেট’ নামে আফগানিস্তানে মার্কিন অভিযানের প্রায় ৭০ হাজার নথি প্রকাশ করেছিল। এসব তথ্য পরে বিশ্ব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক স্তরে দুর্নীতি, কূটনৈতিক কেলেঙ্কারি গুপ্তচর বিষয়ক ২ লাখ ৫১ হাজার গোপন নথি প্রকাশ করে অ্যাসাঞ্জের উইকিলিকস। সংবাদ মাধ্যমটির সূত্র ব্যবহার করে সেই সময় নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান, লে মন্ডে, ডের স্পিগেল ও এল পাইস ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এ কারণে বিব্রত যুক্তরাষ্ট্র তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়। এরপর থেকে গ্রেফতার এড়াতে সাত বছর ধরে যুক্তরাজ্যের ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। সেখান থেকে ২০২০ সালের ১১ এপ্রিল তাকে গ্রেফতার করে লন্ডন পুলিশ।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরজি অ্যাসাঞ্জের পরিবারের
গত জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের একটি নিম্ন আদালত এক দশক আগে গোপন মার্কিন সামরিক নথি প্রকাশের জন্য অ্যাসাঞ্জকে প্রত্যর্পণে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। তখন আদালত বলেন, অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো যাবে না। তার মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করতে পারে।
তবে মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তরাজ্যকে বলা হয়, যদি তারা অ্যাসাঞ্জকে হস্তান্তরে সম্মত হয়, তবে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা তার জন্মভূমি অস্ট্রেলিয়ায় যে কোনো মার্কিন কারাগারে সাজা ভোগ করতে পারবেন।
]]>