আগাম শীতের কারণ জানা গেল
<![CDATA[
দেশের উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে ইতোমধ্যেই ঠাণ্ডা পড়ে গেছে। ভোরের দিকে ভারি কিছু গায়ে জড়াতে শুরু করেছেন অনেকেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে শীতের আমেজ দ্রুত টের পাওয়া যাচ্ছে।
সোমবার (৩১ অক্টোবর) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মত।
আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এখনই শীতের অনুভূতি হওয়ার মূল কারণ কদিন আগে বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সাধারণত আমাদের দেশে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। এখন যে তাপমাত্রা আমরা অনুভব করছি সেটা সাধারণত ওই সময় হওয়ার কথা। কয়দিন আগে যে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সারা দেশে যে অসময়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে, এতে তাপমাত্রা কমে যায়। তাই শীতের অনুভূতি হচ্ছে। এই তাপমাত্রা এখন ওইভাবে আর বাড়বে না। এ কারণেই এই আবহাওয়াকে অগ্রিম শীতের বার্তা বলে মনে হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরের সঙ্গে এ বছরের পার্থক্য হচ্ছে অক্টোবরে হঠাৎ এতটা বৃষ্টিপাত। এ বছর সারা বর্ষার মৌসুমে ঢাকায় বৃষ্টিপাত ছিল ৩৫০ মিলিমিটারের মতো। কিন্তু সেই তুলনায় শুধু অক্টোবর মাসে ২৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার মূল কারণ ঘূর্ণিঝড়।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তৌহিদা রশীদ জানিয়েছেন, পুরো এশিয়াজুড়ে এ বছর শীতের প্রকোপ বেশি হতে পারে।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, যে পূর্বাভাস দিলো আবহাওয়া অধিদফতর
তিনি বলেন, তার সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে এই বছর বর্ষা মৌসুমে অন্যান্য বছরের তুলনায় কম বৃষ্টিপাত।
তিনি বলেন, সিত্রাংয়ের কারণে যে বৃষ্টি হয়েছে, সেটা মাত্র একদিনের বৃষ্টি। আমরা যেটা পর্যবেক্ষণ করেছি যে এ বছর পুরো কয়েক মাসের বৃষ্টির মৌসুম অনেক শুকনো ছিল। এই বর্ষা মৌসুমে খুব কম বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যেটা হয়েছে মাটিতে আর্দ্রতা কম, মাটি শুকনো। মাটি ভেজা থাকলে সূর্যের আলোতে এক ধরনের তাপমাত্রা তৈরি হয় যা উপরিভাগকে গরম রাখে, তাপ ধরে রাখে। কিন্তু মাটিতে আর্দ্রতা কম থাকলে সেটা হবে না। মাটির শুকনোভাব শীতের তীব্রতা বাড়াতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
অধ্যাপক তৌহিদা রশীদ আরও বলেন, বর্ষা মৌসুমের বায়ু ইতোমধ্যেই চলে গেছে, যা সাধারণত আসে বঙ্গোপসাগর থেকে। বর্ষা মৌসুমের বায়ু চলে যাওয়ার পর শুরু হয় উত্তরের বাতাস যা শীত বয়ে আনে। উত্তরের বাতাস ইতোমধ্যেই বইতে শুরু করেছে। সিত্রাংয়ের কারণে কয়েকদিনের মধ্যে তাপমাত্রা বেশ হঠাৎ করে পড়ে গেছে বলে তিনি মনে করছেন। বাতাসে জলীয় বাষ্প কম হওয়ার সঙ্গেও শীতের সম্পর্ক রয়েছে। বাতাসে জলীয় বাষ্প কমে গেলে আবহাওয়া শুষ্ক এবং বাতাস ভারী হয়ে পড়ে। তার ফলেও শীত বাড়ে।
তিনি বলেন, শীত অনেক আগেই চলে আসবে সেটা বলা যাবে না। হয়ত একটু আগে আসতে পারে। যেহেতু কয়েকদিন আগেও অনেক বেশি গরম ছিল তাই এখন হঠাৎ এই হালকা ঠাণ্ডাকে অনেকের শীত বলে মনে হচ্ছে।
]]>




