আত্মসমর্পণকারী সেই ১০১ ইয়াবা কারবারির রায় ২৩ নভেম্বর
<![CDATA[
কক্সবাজারের টেকনাফে প্রথম দফায় আত্মসমর্পণকারী ১০১ ইয়াবা কারবারির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুটি মামলার রায় ঘোষণার দিন আগামী ২৩ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। একই সঙ্গে আদালতে হাজির থাকা ১৮ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল রায়ের দিন ধার্য করে এ আদেশ দেন।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি আরও জানান, সোমবার (১৪ নভেম্বর) আসামিদের পক্ষে দুজন সাফাই সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন: টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মৌলবি আজিজ উদ্দিন ও ছাত্রদলের সাবেক নেতা গিয়াস উদ্দিন ভুলু। তাদের আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ জেরা শেষে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়। এরপর আদালত ২৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জানান, ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আত্মসমর্পণকারী ১০২ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মাদক ও অস্ত্র আইনে পৃথক ২টি মামলা করে। যার মধ্যে একজন আসামির মৃত্যু হয়। অপর ১০১ জনের বিরুদ্ধে থাকা পৃথক দুটি মামলার রায় ২৩ নভেম্বর ঘোষণা করা হবে। মঙ্গলবার আদালতে উপস্থিত থাকা এ মামলার ১৮ আসামির জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: তমব্রু সীমান্তে সংঘর্ষ: আহত র্যাব সদস্য ঢামেকে
পিপি ফরিদুল আলম আরও জানান, গত ৩০ অক্টোবর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টেকনাফ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) এবিএমএস দোহার সাক্ষ্য প্রদানের মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আদালতে মামলায় মোট ২১ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এরপর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারা বলে আসামিদের পরীক্ষা এবং সাফাই সাক্ষ্য উপস্থাপন ও যুক্তিতর্কের পর রায় ঘোষণা হবে ২৩ নভেম্বর।
২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফ সদরের টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে ১০২ জন আত্মস্বীকৃত ইয়াবা কারবারি ও গডফাদার সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবা, ৩০টি দেশীয় তৈরি বন্দুক ও ৭০ রাউন্ড গুলিসহ আত্মসমর্পণ করেন। ওইদিনই
আত্মসমর্পণকারী ১০২ জনকে আসামি করে টেকনাফ মডেল থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা করা হয়। বাদী হয়ে মামলাটি করেন টেকনাফ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (অপারেশন) শরীফ ইবনে আলম। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে পরিদর্শক এবিএমএস দোহাকে নিয়োগ দেয়া হয়। মামলা করার দিনই আদালতের মাধ্যমে সব আসামিকে গ্রেফতার দেখিয়ে কক্সবাজার জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ১০২ জন আসামির মধ্যে মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে ২০০৯ সালের ৭ আগস্ট মোহাম্মদ রাসেল নামে এক আসামি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহর আদালতে ১০১ আসামির বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরবর্তী সময়ে মামলাটি বিচারের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। একই বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল সব আসামির উপস্থিতিতে শুনানি শেষে মামলার চার্জ গঠন করেন।
আরও পড়ুন: ডিজিএফআই কর্মকর্তা নিহতের ঘটনায় তদন্ত চলছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন: সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ভাই আব্দুর শুক্কুর, বদির ভাই আমিনুর রহমান ওরফে আব্দুল আমিন, নুরুল হুদা, দিদার মিয়া, বদির ভাগনে মো. সাহেদ রহমান নিপু, আব্দুল আমিন, নুরুল আমিন, বদির ভাই শফিকুল ইসলাম ওরফে শফিক, বদির ভাই ফয়সাল রহমান, এনামুল হক ওরফে এনাম মেম্বার, একরাম হোসেন, ছৈয়দ হোসেন, বদির বেয়াই সাহেদ কামাল ওরফে সাহেদ, মৌলভী বশির আহমদ, শাহ আলম, আব্দুর রহমান, মোজাম্মেল হক, জোবাইর হোসেন, নুরুল বশর ওরফে কাউন্সিলার নুরশাদ, বদির ফুপাত ভাই কামরুল হাসান রাসেল, আব্দুর রহমান, বর্তমানে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ওরফে জিহাদ, মোহাম্মদ শাহ, নুরুল কবির, মারুফ বিন খলিল ওরফে বাবু, মোহাম্মদ ইউনুচ, ছৈয়দ হোসেন ওরফে ছৈয়দু, মোহাম্মদ জামাল ওরফে জামাল মেম্বার, মো. হাসান আব্দুল্লাহ, রেজাউল করিম ওরফে রেজাউল মেম্বার, মো. আবু তাহের, রমজান আলী, ফরিদ আলম, মাহবুব আলম, মোহাম্মদ আফছার, হাবিবুর রহমান ওরফে নুর হাবিব, শামসুল আলম ওরফে শামশু মেম্বার, মোহাম্মদ ইসমাঈল, আব্দুল গনি, মোহাম্মদ আলী, জামাল হোসেন, আব্দুল হামিদ, নজরুল ইসলাম, রশিদ আহমেদ ওরফে রশিদ খুলু, মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে দানু, মোহাম্মদ সিরাজ, মোহাম্মদ আলম, মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, হোসেন আলী, মোহাম্মদ তৈয়ব, নুরুল কবির মিঝি, শাহ আজম, জাফর আহমেদ ওরফে জাফর, জাফর আলম, রুস্তম আলী, মোহাম্মদ হোছাইন, নুরুল আলম, মোহাম্মদ হাশেম ওরফে আংকু, শফি উল্লাহ, আবু তৈয়ব, আলী নেওয়াজ, মো. জহুর আলম, মোহাম্মদ হুসাইন, মোহাম্মদ সিদ্দিক, রবিউল আলম, মঞ্জুর আলী, হামিদ হোসেন, মোহাম্মদ আলম, মোহাম্মদ আইয়ুব, মোহাম্মদ রাসেল (এরইমধ্যে মারা গেছেন), নুরুল আমিন, বোরহান উদ্দিন, কামাল হোসেন, ইমান হোসেন, মোহাম্মদ হারুন, শওকত আলম, হোছাইন আহম্মদ, মোহাম্মদ আইয়ুব, মো. আবু ছৈয়দ, মো. রহিম উল্লাহ, মোহাম্মদ রফিক, মোহাম্মদ সেলিম, নুর মোহাম্মদ, নুরুল বশর ওরফে কালাভাই, বদির খালাত ভাই মং অং থেইন ওরফে মমচি, মোহাম্মদ হেলাল, বদিউর রহমান ওরফে বদুরান, আব্দুল করিম ওরফে করিম মাঝি, ছৈয়দ আলী, মোহাম্মদ হাছন, নুরুল আলম, আব্দুল কুদ্দুস, দিল মোহাম্মদ, আলী আহম্মেদ, মো. সাকের মিয়া ওরফে সাকের মাঝি, আলমগীর ফয়সাল ওরফে লিটন, জাহাঙ্গীর আলম, নুরুল আলম, সামছুল আলম শামীম, মোহাম্মদ ইউনুচ, নুরুল আফসার ওরফে আফসার উদ্দিন ও মোহাম্মদ শাহজাহান আনছারী।
]]>