আল আকসায় ইসরাইলের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের নিন্দা বাংলাদেশের
<![CDATA[
ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান আল আকসা মসজিদে ইসরাইলের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি সার্বভৌম ও কার্যকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ফিলিস্তিনের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার আদায়ে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত মুসলিম দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সংগঠন অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের (ওআইসি) নির্বাহী কমিটির জরুরি সভায় সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ওআইসির স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) এ আহ্বান জানান।
জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, জাতিসংঘের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবনা, আরব শান্তি উদ্যোগ ও কোয়ার্টেট রোড ম্যাপ অনুযায়ী ফিলিস্তিন ইস্যুতে ব্যাপক ও টেকসই সমাধানের বিষয়ে বাংলাদেশ তার নীতিগত অবস্থান অব্যাহত রেখেছে। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে।
যতই সময় গড়াচ্ছে, ফিলিস্তিনে ইসরাইলি নিপীড়ন-সহিংসতা বেড়েই চলেছে। গত বছর (২০২২ সালে) ইসরাইলি আগ্রাসনে ১৫০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন, এযাবৎকালের মধ্যে যা সর্বোচ্চ।
সম্প্রতি ইসরাইলের নতুন সরকার গঠনের পরপরই জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী বেন গভির পবিত্র আল আকসা মসজিদ পরিদর্শন করেন। এর ফলে পুরো মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: নেতানিয়াহু সরকারের বিরুদ্ধে হাজার হাজার ইসরাইলির বিক্ষোভ
আল আকসায় ইসরাইলের এ অপতৎপরতা নিয়ে আলোচনা করতে মঙ্গলবার সৌদি আরবের জেদ্দা শহরে বসে ওআইসির এক্সিকিউটিভ কমিটির জরুরি বৈঠক। বৈঠকে ইসরাইলের এসব কর্মকাণ্ডকে স্থানীয় ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, এ ধরনের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড মধ্যপ্রাচ্যের স্থায়ী শান্তি প্রক্রিয়াকে আরও দূরে ঠেলে দেবে।
তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদাসীনতায় দখলদার বাহিনী ইসরাইলের নৃশংসতা ও আগ্রাসন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেড়ে চলেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। নতুন বৈশ্বিক সংকট ও সংঘাতে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের গুরুতর পরিস্থিতি থেকে যাতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ সরে না যায়, সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ফিলিস্তিনের অধিবাসীরা একসময় নির্যাতিত ইহুদিদের আশ্রয় দিয়েছিল, আর সেই ইহুদিরাই এখন নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি, পরিবার এবং স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রত্যাশা ধ্বংস করছে। ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধ, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনে ওআইসির আরও জোরালো ভূমিকা রাখা প্রয়োজন বলে রাষ্ট্রদূত মন্তব্য করেন।
জরুরি সভার শুরুতে ফিলিস্তিন পরিস্থিতি ও আল আকসায় ইসরাইলের সাম্প্রতিক আগ্রাসনের বিষয়ে সভাকে অবহিত করেন ওআইসি মহাসচিব ও ফিলিস্তিনের স্থায়ী প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন: উন্মুক্ত স্থান থেকে ফিলিস্তিনের পতাকা অপসারণের নির্দেশ ইসরাইলের
এরপর উন্মুক্ত আলোচনায় বাংলাদেশ ছাড়াও জর্ডান, তুরস্ক, মরক্কো, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, মিশর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিরা ফিলিস্তিনের প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়ে বক্তব্য দেন। সভা শেষে ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দাজ্ঞাপন ও তা বন্ধে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি যৌথ বিবৃতি গৃহীত হয়।
এর আগে ইসরাইলি মন্ত্রীর পবিত্র আল আকসা মসজিদ সফর ইস্যুতে জরুরি বৈঠক করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। বৃহস্পতিবারের (৫ জানুয়ারি) ওই বৈঠকে ইসরাইলি মন্ত্রীর আল আকসা সফর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা। সেই সঙ্গে পবিত্র এ মসজিদ প্রাঙ্গণে স্ট্যাটাস কো তথা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার ওপর জোর দেন।
]]>