ইউক্রেনে জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন করেছে রাশিয়া: বাইডেন
<![CDATA[
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইউক্রেনে ‘নির্লজ্জভাবে’ জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন করেছে রাশিয়া। নিউইয়র্কে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে নিজের বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। বাইডেন বলেন, ইউক্রেনে ‘পাশবিক ও অপ্রয়োজনীয় যুদ্ধ’র মধ্যদিয়ে জাতিসংঘ সনদের মূল নীতির লঙ্ঘন করেছে মস্কো। খবর আল জাজিরা।
সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শুরু হয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশন। করোনা মহামারির কারণে প্রায় তিন বছর পর প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান।
তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিশেষ কারণে অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন না। তাদের পরিবর্তে মন্ত্রীরা অধিবেশনে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) অধিবেশনে যোগ দেন বাইডেন। বক্তব্যের শুরুতেই ইউক্রেনের সামরিক অভিযানকে ‘আগ্রাসন’ অভিহিত করে এর নিন্দা জানান তিনি। পুতিন নতুন করে পরমাণু হামলার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘পুতিনের পরমাণু হুমকি পরমাণু অস্ত্র নিরোধ চুক্তির অসম্মান।’
আরও পড়ুন: জেলেনস্কির অভিযোগ /‘ইউক্রেনকে রক্তের বন্যায় ডুবাতে চান পুতিন’
এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রিজার্ভ সেনা মোতায়েন পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, রিজার্ভ সেনা পাঠিয়ে ইউক্রেনকে রক্তের বন্যায় ডুবাতে চান পুতিন। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) পুতিনের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই এই মন্তব্য করেন জেলেনস্কি।
ইউক্রেনের ন্যাটোয় যোগদান ঠেকাতে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে দেশটিতে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এরপর প্রায় সাত মাস ধরে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ অভিযানে ইউক্রেনের এক পঞ্চমাংশ অঞ্চল দখল করে নিয়েছে রুশ বাহিনী।
তবে রুশ অধিকৃত ওইসব এলাকা পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে সম্প্রতি পাল্টা হামলা শুরু করে ইউক্রেনীয় বাহিনী। গত কয়েক সপ্তাহে কিছু সফলতাও পেয়েছে তারা। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় খারকিভ প্রদেশের ইজিয়াম শহর দখলমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে কিয়েভ। রুশ বাহিনীর পশ্চাদাপসারণে গত কয়েকদিন কার্যত চুপই ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। তবে বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সেই নীরবতা ভেঙে তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি।
এদিন জাতির উদ্দেশে দেয়া এক টেলিভিশন ভাষণে রাশিয়ার রিজার্ভ সেনার একাংশকে ইউক্রেন যুদ্ধে মোতায়েনের ঘোষণা দেন পুতিন। এজন্য প্রায় ৩ লাখ সেনাকে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন তিনি। পুতিন এমন সময়ে এই ঘোষণা দিলেন যখন ইউক্রেনে রুশ অধিকৃত চারটি অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দিতে গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: পুতিনের হুমকি, সংলাপের আহ্বান চীনের
ইউরোপ রাশিয়াকে পরমাণু অস্ত্রের হুমকি দিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করে ভাষণে পুতিন বলেন, ‘পশ্চিমারা আমাদের দেশকে ধ্বংস করতে চায়। রাশিয়ার সঙ্গে ছায়া যুদ্ধ শুরু করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। এটি অব্যাহত থাকলে মস্কো তার বিশাল অস্ত্রাগারের সব শক্তি দিয়ে জবাব দেবে। আর জবাব দেয়ার জন্য রাশিয়ার কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র রয়েছে।’
পুতিনের এ ঘোষণার পর রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানান, প্রাথমিকভাবে সামরিক অভিজ্ঞতা আছে রিজার্ভ সেনার এমন প্রায় তিন লাখ নাগরিককে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। পুতিনের এ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর এর প্রতিক্রিয়ায় জার্মান সংবাদমাধ্যম বিল্ডকে এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট বলেন, পুতিন আসলে ইউক্রেনকে রক্তের নদীতে ডুবাতে চাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, এরপরও দখল হওয়া ভূখণ্ডের পুনরুদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। তিনি আরও বলেন, আমরা পরিকল্পনা অনুসারে একটু একটু করে অগ্রসর হব। আমি নিশ্চিত আমরা আমাদের ভূখণ্ড মুক্ত করব।
]]>