বিনোদন

ইউরোপ-রাশিয়ার যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে সার্বিয়াকে: জার্মানি

<![CDATA[

সার্বিয়াকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলো জার্মানি। দেশটি বলেছে, ইউরোপ-রাশিয়ার মধ্যে যেকোনো একটিকে বেছে নিতে হবে সার্বিয়াকে। কসোভের সঙ্গে সার্বিয়ার চলমান উত্তেজনার মধ্যে মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) এ আলটিমেটাম দেয় জার্মানি। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

কসোভো সার্বিয়া থেকে আলাদা হয়ে গেলেও সীমান্ত দিয়ে উভয় দেশের নাগরিকদের চলাচল নিয়ে এখনও দ্বন্দ্ব রয়ে গেছে। একই ইস্যুতে সম্প্রতি আবারও উত্তেজনা শুরু হয়েছে। মূলত কসোভোর জাতিগত সার্ব নাগরিকদের গাড়িতে সার্বিয়ার নম্বর প্লেট ব্যবহারকে কেন্দ্র করে এ দ্বন্দ্ব।

কসোভো সরকার বলছে, জাতিগত সার্ব নাগরিকদের অবশ্যই সার্বীয় লাইসেন্স জমা দিয়ে নতুন লাইসেন্স নিতে হবে। এ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে নিজেদের সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছে সার্বিয়া। এমন পরিস্থিতিতে পশ্চিম বলকানের ছয়টি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে চলতি সপ্তাহে বার্লিনে শুরু হতে যাচ্ছে পশ্চিম বলকান সম্মেলন।

সম্মেলন সামনে রেখেই মঙ্গলবার সার্বিয়াকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জার্মানি। দেশটির সিনিয়র এক কর্মকর্তা বলেন, ‘সার্বিয়াকে অবশ্যই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে চায় নাকি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে।’

আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ / খাদ্যশস্য চুক্তি নিয়ে সুখবর দিলেন এরদোয়ান

নাম প্রকাশ না করার শর্তে জার্মান ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সার্বিয়ার সঙ্গে জার্মানির সম্পর্ক বেশ জটিল। সম্পর্কটা আলো-আঁধারির মতো। রাশিয়ার সঙ্গে সার্বিয়ার সম্পর্কই সেই ছায়া ফেলছে। এমন অবস্থায় সামনের দিনগুলো দেশটিকে একটা সিদ্ধান্তে অবশ্যই আসতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, সহযোগিতার বিষয়ে সার্বিয়া ও রাশিয়ার মধ্যে একটি চুক্তির কারণে বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ পেয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের যোগদানে ইচ্ছুক প্রার্থীদের রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইইউর নিষেধাজ্ঞাগুলো গ্রহণ করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান বলকান অঞ্চলেও উত্তেজনা ছড়িয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়ার জাতীয়তাবাদী ও সংশোধনবাদী দৃষ্টিভঙ্গি অঞ্চলটিতে সমর্থন পাচ্ছে। মস্কোর সমর্থকদের মধ্যে রয়েছেন সার্বিয়ার প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার ভুচিক, বসনিয়ার সার্ব নেতা মিলোরাড দদিক ও হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান।

সাধারণভাবে সার্বিয়া রাশিয়ার মিত্র হিসেবেই পরিচিত। ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের কারণে মস্কোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বানে সাড়া দিতে অস্বীকৃতি জানায় দেশটি।

আরও পড়ুন: সংকটের মধ্যে আলোর উৎসব, সমালোচনার মুখে জার্মানি

আলবেনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ কসোভো ২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে পৃথক হয়ে যায়। কসোভোর ৯২ শতাংশ বাসিন্দা আলবেনীয় আর ৬ শতাংশ সার্বীয়। তা হলেও কসোভোর সিদ্ধান্তকে কখনোই ভালোভাবে নেয়নি সার্বিয়া। ফলে কসোভোর সরকার ও দেশটির সংখ্যালঘু সার্বীয়দের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।

গত জুলাই মাসে সার্বীয় অধিবাসীদের গাড়ির জন্য লাইসেন্স প্লেট ইস্যু এবং সার্বিয়া থেকে আসা ব্যক্তিদের প্রবেশে বিশেষ অনুমতির ব্যবস্থা চালু করতে একটি আইন করেছে কসোভো সরকার।

বিষয়টি নিয়ে নতুন করে সংঘাত শুরু হয়। অবশ্যই ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যস্থতায় আলোচনার মাধ্যমে সেই দ্বন্দ্বের কিছুটা অবসান হয়। তবে গাড়ির নম্বর প্লেটের বিষয়টি এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।

রাশিয়া কসোভোর নতুন আইনের সমালোচনা করেছে। ওই আইনকে সার্বিয়ার জনগণকে উচ্ছেদের একটি পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছে মস্কো। সম্প্রতি রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা কসোভো, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নকে উসকানি বন্ধ ও কসোভোতে সার্বদের অধিকার রক্ষার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

আরও পড়ুন: পানির জন্য হাহাকার / ইউক্রেনে একযোগে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা

এদিকে রাশিয়া ও চীন এখনও কসোভোকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। এমনকি সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ন্যাটোর যুদ্ধের নিন্দা জানিয়ে আসছে বর্তমান বিশ্বের এই দুই প্রভাবশালী দেশ। ১৯৯৯ সালে ন্যাটো জোট একটি সামরিক অভিযান শুরু করেছিল। স্বাধীনতার জন্য লড়াইরত কসোভার আলবেনিয়ান জাতিগোষ্ঠীর ওপর সার্বিয়া নিপীড়ন বন্ধে ওই অভিযান চালায় ন্যাটো।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!