এরদোগান একজন প্রভাবশালী বিশ্বনেতা: পুতিন
<![CDATA[
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, এরদোগান একজন বিশ্বস্ত ও প্রভাবশালী বিশ্বনেতা। মস্কোভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভালদাই ডিসকাশন ক্লাবের বার্ষিক ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
মস্কোভিত্তিক ভালদাই ডিসকাশন ক্লাব একাধারে রাশিয়ার শীর্ষ গবেষণা সংস্থা, বুদ্ধিজীবী সংগঠন ও আলোচনা ফোরাম। গত সোমবার (২৪ অক্টোবর) শুরু হয় সংগঠনটির ১৯তম বার্ষিক সম্মেলন। সম্মেলনের শেষদিন বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) এতে বক্তব্য দেন পুতিন।
ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আট মাস পর দেয়া গুরুত্বপূর্ণ এই ভাষণে ইউক্রেন ইস্যুতে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করেন তিনি। একই সঙ্গে রুশ সমাজের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ইউক্রেন সংঘাতের অবসানের লক্ষ্যে তুরস্ক ও এর প্রেসিডেন্ট এরদোগানের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন পুতিন। তিনি বলেন, তুরস্ক রাশিয়ার একটি সহযোগী ও বন্ধুরাষ্ট্র। পুতিনের কথায়, এরদোগানের চিন্তা-চেতনায় কেবলই তুরস্কের কৃষি, অর্থনীতি ও জনগণের উন্নয়ন। তিনি বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে দেশের ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলোর সংস্কার করেছেন।
আরও পড়ুন: আরও অস্ত্র তৈরির নির্দেশ পুতিনের
তুরস্কের উন্নয়নে এরদোগানের ভূমিকা উল্লেখ করে পুতিন বলেন, তুরস্কের উন্নয়নকে টেকসই করতে জ্বালানি খাতকে সমৃদ্ধ করেছেন এরদোগান। তুর্কস্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইন স্থাপনের মাধ্যমে তুরস্ক এখন রাশিয়ার প্রধান গ্যাস বিতরণকেন্দ্র হতে যাচ্ছে। এরদোগানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে তুরস্ক এখন ইউরোপ তথা বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী একটি দেশে পরিণত হয়েছে।
এরদোগানের প্রশংসা এখানেই শেষ নয়, পুতিন আরও বলেন, এরদোগানের সবচেয়ে বড় গুণ হচ্ছে- তিনি অন্য কারও কথায় অনর্থক যুদ্ধে জড়িয়ে নিজের দেশের মানুষকে বিপদে ফেলেন না। তার ভাষায়, ‘বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় এরদোগানের অবদান অনস্বীকার্য। যুদ্ধাবস্থায় তিনি ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির ব্যবস্থা করে দিয়ে বিশ্বকে একটি দুর্ভিক্ষের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন।’
ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে পুতিন বলেন, পশ্চিমারা ইউক্রেন যুদ্ধ উসকে দিয়েছে। কিন্তু এর ভবিষ্যৎ নিয়ে তাদের শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গেই আলোচনায় বসতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্ব ব্যবস্থার নতুন নতুন ভরকেন্দ্র তৈরি হচ্ছে। ভবিষ্যৎ বিশ্ব কীভাবে চলবে তা নিয়ে আমাদের সঙ্গে বসতে হবে পশ্চিমকে। সেটা যত দ্রুত হবে ততই মঙ্গল।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে বেড়েই চলেছে দক্ষিণ এশীয়দের প্রভাব
যুক্তরাষ্ট্র ডলারকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন পুতিন। তিনি বলেন, ডলারকে অস্ত্র করে আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থা নষ্ট করেছে ওয়াশিংটন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, সামনের দিনগুলোতে ডলার নির্ভরতা কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি। অন্যান্য দেশগুলোও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ডলারের বিকল্প মুদ্রা ব্যবহার করবে।
সামনের দশককে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালের চেয়েও বিপজ্জনক উল্লেখ করে পুতিন বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনে ভয়ংকর খেলা শুরু করেছে। যুদ্ধে ইন্ধন জোগাচ্ছে তারা। ভাষণে সতর্ক করে পুতিন বলেন, আসন্ন দশক হবে ১৯৪০-এর দশক তথা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালের চেয়েও বিপজ্জনক। তার ভাষায়, সামনে সম্ভবত সবচেয়ে বিপজ্জনক ও গুরুত্বপূর্ণ দশক আসছে।
পুতিন বলেন, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর বন্ধু হতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা রাশিয়ার এ চেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্য রাশিয়াকে কোণঠাসা অবস্থায় দেখতে চেয়েছিল।
]]>