খেলা

কফি চাষে মোখলেছুরের আয় লক্ষাধিক টাকা

<![CDATA[

কফি চাষ করে বাজিমাত করেছেন রংপুর তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার গোয়ালবাড়ি এলাকার মোখলেছুর রহমান। মাত্র ৫ বছরে কফি চাষ করে আয় করছেন কয়েক লাখ টাকা। শখের বসেই কফি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন তিনি।

মোখলেছুর রহমান পড়ালেখা শেষ করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মার্কেটিংয়ে চাকরি করতেন। পরে বাংলাদেশে কফি চাষ হচ্ছে বিষয়টি অনলাইনের মাধ্যমে জানতে পেরে কফি চাষে উদ্বুদ্ধ হন তিনি। এরপর শখ করে কফি চাষ শুরু করেন। ২০১৭ সালে ৬ অক্টোবর কক্সবাজারের জাহানারা গ্রিন এগ্রো থেকে উন্নত ফলনশীল এ্যারাবিয়াক জাতের ৪৫০টি চারা সংগ্রহ করে বাড়ির পাশে রাস্তার ধারের ২০ শতক জমিতে চাষাবাদ শুরু করেন। সে সময় তার খরচ হয় ৫০-৬০ হাজার টাকা।

উদ্যোক্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, ফেসবুকে কফি চাষের কথা জানতে পারি। পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি এলাকায় কফি চাষ হচ্ছে। সেখানে হলে আমাদের এখানে উঁচু জমিতে হবে না কেন? সেই কেন থেকেই একেবারে শখ করে কফি চাষ শুরু করা। এখন আমি একজন সফল উদ্যোক্তা।

অর্থকরী ফসল হিসেবে কফি চাষের মাধ্যমে রংপুরের পিছিয়ে পড়া অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে চান তিনি। এজন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা কামনা করেন এই উদ্যোক্তা। তিনি কফি চাষের পাশাপাশি বাণিজ্যিকভাবে চারা তৈরি করা শুরু করেছেন। এ বছর প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছেন মোখলেছুর। নার্সারিতে আরও চারা রয়েছে। সেগুলো বিক্রি হলে সবমিলিয়ে এবার চারা বিক্রি হবে প্রায় ৮ লাখ টাকা।

তিনি জানান, নিয়মিত পরিচর্যায় দীর্ঘ ১৮ মাস পর ফুল আসে কফি গাছে। পরবর্তী ৬ মাসে ফল ধরতে শুরু করেছে। ২০২০ সালে বাগান থেকে ২৫ কেজি গ্রিন বিন সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে ৬০ হাজার টাকা আয় করেন। ২০২১ সালে বাগান থেকে ৭০ কেজি গ্রিন বিন সংগ্রহ করেন এবং প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকায় বিক্রি করেন। চলতি বছরে মোখলেছুর রহমান বাগান থেকে ১০৭ কেজি গ্রিন বিন সংগ্রহ করে এরইমধ্যে পৌনে ৩ লাখ টাকা বিক্রি করেছেন। বাগানে সংগ্রহ করার উপযোগী আরও গ্রিন বিন রয়েছে।

আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কমলা চাষে সফল আলমগীর

মোখলেছুর রহমান কফি বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করে ম্যানুয়াল প্রসেসিং করে কফির ডাস্ট তৈরি করেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন বাজারে এ কফি বিক্রি করেন। বাগানের পাশেই রংপুর কফি ক্লাব নামে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। যেখানে বিকেল হলেই কফি আড্ডায় মেতে উঠেন সব বয়সী মানুষ। তার উদ্যোগে এরইমধ্যে ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, বগুড়া, রাজশাহী, খুলনা, ফেনিসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছোট বড় ৫২টি কফি বাগানে কফি চাষ হচ্ছে। সেখানে প্রায় ১৭ হাজার কফি গাছ রয়েছে।

কফি বাগান দেখতে আসা আশিকুর রহমান জানান, কফি বাগান দেখে তিনি মুগ্ধ। তিনিও বাণিজ্যিকভাবে এ কফি চাষ করতে চান। সে লক্ষে এখানে এসে সব বিষয়ে ধারণা নিচ্ছেন। শিগগিরই তার এলাকায় কফি বাগান গড়ে তুলবেন বলে জানান তিনি।

এদিকে রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল সময় সংবাদকে বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি সব ধরনের সহযোগিতা করার। যখন যা কারিগরি সহযোগিতার প্রয়োজন তা দেয়া হচ্ছে। সরকারিভাবে রংপুর জেলার দুটি উপজেলায় কফি চাষ শুরু হয়েছে। মোখলেছুর রহমানের কফি বাগান থেকে কেউ উদ্বুদ্ধ হয়ে বাগান করতে চাইলে জেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। রংপুরে এখন ১১২ বিঘা কফির আবাদে সমৃদ্ধ একটি জেলা। দিনে দিনে কফির চাষ বৃদ্ধি পাবে বলে আমরা প্রত্যাশা করছি।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!