কাশির সিরাপে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান ডব্লিউএইচওর
<![CDATA[
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কাশির সিরাপ খেয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। একইসঙ্গে দূষিত ওষুধ থেকে শিশুদের সুরক্ষায় অবিলম্বে সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
গেল বছর গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও উজবেকিস্তানে কাশির সিরাপ খেয়ে ৩ শতাধিক শিশুর মৃত্যু হয়। যাদের বেশিরভাগেরই বয়স ৫ বছরের নিচে। সোমবার (২৩ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও জানায়, কিডনিতে মারাত্নক সংক্রমণের কারণে এসব শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
তারা আরও জানায়, কাশির সিরাপগুলোতে উচ্চ মাত্রার ডাইথাইলিন গ্লাইকোল এবং ইথিলিন গ্লাইকোল ছিল। এসব শিল্প দ্রাবক এবং অ্যান্টিফ্রিজ এজেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত বিষাক্ত রাসায়নিক। এসবের অল্প ব্যবহারেই মানুষের মারাত্নক ক্ষতি হতে পারে এবং কোন অবস্থাতেই ওষুধে এসবের উপস্থিতি থাকা উচিত নয়।
ইতোমধ্যে ভারতীয় সিরাপ খেয়ে উজবেকিস্তানে ১৯ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা- ডব্লিউএইচও। শিশুদের চিকিৎসায় আপাতত ওই সিরাপ দিতে নিষেধ করেছে সংস্থাটি এবং ভারতীয় দুই কোম্পানির কাশির সিরাপ সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দেয় সংস্থাটি।
গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর উজবেকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দাবি করে ভারতীয় কোম্পানির তৈরি সর্দি-কাশির সিরাপ খেয়ে ১৮ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ২১ জনের মধ্যে ১৮ শিশু ম্যারিওন বায়োটেকের ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ খেয়েছিল। তারপরই তীব্র শ্বাসকষ্টে তাদের মৃত্যু হয়। সর্দি ও ফ্লুর উপসর্গের চিকিৎসা হিসেবে কোম্পানির ওয়েবসাইটে এটি বাজারজাত করা হয়।
আরও পড়ুন: উজবেকিস্তানে শিশুমৃত্যু, ভারতে কাশির সিরাপ উৎপাদন বন্ধ
১৮ শিশুর মৃত্যুর পর দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছিল, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই বাড়িতে শিশুদের ওই সিরাপ সেবন করতে দেয়া হয়েছিল, হয় তাদের বাবা-মা বা ফার্মাসিস্টের পরামর্শে। এটি পরিষ্কার নয় যে, সব শিশু স্ট্যান্ডার্ড ডোজের চেয়ে বেশি গ্রহণ করেছে কি না। এ ঘটনায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়া বা অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট ৭ জনকে বরখাস্ত করেছে।
এক সতর্কবার্তায় ডব্লিউএইচও গত ১১ জানুয়ারি জানিয়েছিল, ম্যারিওন বায়োটেকের তৈরি দুটি কাশির সিরাপ হলো অ্যাম্ব্রনল সিরাপ এবং ডক-১ ম্যাক্স সিরাপ। ল্যাবরেটরি পরীক্ষা দেখা গেছে, দুটি ওষুধে খুব বেশি পরিমাণে ডাইইথিলিন গ্লাইকল ও ইথিলিন রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতা জারি করে বলেছে, ম্যারিওন বায়োটেকের তৈরি ওষুধ সাবস্ট্যান্ডার্ড মেডিক্যাল প্রোডাক্টস। এই ওষুধ গুণগতমান পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। এগুলো নিরাপদ নয়।
আরও পড়ুন: ভারতীয় কাশির সিরাপ পানে গাম্বিয়ায় শিশু মৃত্যু, হু-র সতর্কতা জারি
উজবেকিস্তানে ১৯ শিশু মৃত্যুর সঙ্গে ওই কাশির সিরাপের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউওএইচও। এর আগে গামিবিয়ায় ৬৬ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় ভারতীয় একটি সংস্থার ৪টি কাশির সিরাপকে দায়ী করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
]]>