কিশোরগঞ্জের কৃষি অর্থনীতি বদলে দিতে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে ড্রাগন ফলের চাষ
আনোয়ার হোসেন কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধিঃ
সুদূর চীন মালয়েশিয়া ভিয়েতনামসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের গন্ডি পেরিয়ে উত্তরের জেলা নীলফামারী কিশোরগঞ্জে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে ক্যাকটাস জাতীয় বিদেশী উদ্ভিদ ড্রাগন ফলের চাষ। গতানুগতিক কৃষির উপর নির্ভরশীল না হয়ে সময়ের প্রয়োজনে লাভজনক ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন উপজেলার চাঁদখানা ইউপি’র দঃ চাঁদখানা গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম কাজল।
জানা গেছে,গত বছর ওই গ্রামের কিশোরগঞ্জ রংপুর ভিন্নজগৎ সড়কের পাশে আবরার এগ্রো ফার্ম প্রজেক্টে প্রায় ৭০শতক জমিতে ৫শতাধিক পিলারে ২০হাজার ড্রাগনের চারা রোপন করা হয়েছে। চারাগুলো সংগ্রহ করেন যশোর জেলা থেকে। রোপণের ১০/১১মাসে চারা গাছগুলো হুষ্ঠ-পুষ্ঠ হয়ে ফল আসা শুরু হয়েছে। তিনি জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথম দিকে জমি প্রস্তুত করে নির্দিষ্ট দুরত্বে গর্ত করে জৈব কীটনাশক সার দিয়ে গর্ত ঢেকে রাখা হয়।
এরপর প্রতিটি গর্তের পাশে ৫ ফুট উঁচু একটি করে সিমেন্টের আরসিসি পিলার বসানো হয় ড্রাগন গাছ দাঁড়ানোর জন্য। এরপর প্রতিটি পিলারের চার দিকে একটি করে মোট ৪টি ড্রাগন চারা রোপন করা হয়। পরিচর্যা করে গাছগুলো ৫ ফুট লম্বা হওয়ায় বাড়ন্ত গাছ ঝুলে থাকার জন্য প্রতিটি পিলারের মাথায় মোটর গাড়ির পুরনো টায়ার বেধেঁ দেয়া হয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ গাছে শাখা-প্রশাখা বের হয়ে ডাটায় ফুল ও ফল আসা শুরু হয়েছে। আস্তে আস্তে শাখা-প্রশাখায় ঢেকে নেবে পুরো এলাকা।
তিনি আরো জানান, তাদের এ বাগান তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭ লাখ টাকা। তবে প্রথমে খরচ হলেও পরবর্তীতে শুধু পরিচর্যা করলে ২০ বছর ড্রাগনের ফলন পাওয়া যাবে। একটি করে গাছ থেকে ২৫/৩০ কেজি ফলন হবে। প্রতি কেজি ফলের মুল্য ৪/৫শ টাকা। এ বাজার দর অনুযায়ী ভালো ফলন হলে বাগান থেকে বছরে প্রায় ১০লক্ষাধিক টাকার ফল বিক্রি করতে পারবেন।
তবে শীতকাল ছাড়া বছরে সবসময় ভাল ফলন হয়। উপজেলার সংশ্লিষ্ট কৃষকেরা জানান, এ এলাকার মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের উপযোগী হওয়ায় সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পুষ্টিগুণে ভরপুর এ ফলের কৃষি বিপ্লব ঘটবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ১হেক্টর জমিতে ১৫/২০জন কৃষককে ড্রাগন চাষে উদ্বুদ্ধকরণের পাশাপাশি পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শখের বশে হলেও বাগানগুলো বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে। এ ফলে একদিকে এলাকার পুষ্টি পূরণ হবে অন্যদিকে কৃষকগণ অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন।