সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে আজও বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন সারাদেশের সাংবাদিকরা। এ সময় অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট বাতিল ও সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের দাবি তোলেন তারা। বৃহস্পতিবার (২০ মে) প্রতিবাদ-বিক্ষোভে মাঠে নামেন সংবাদমাধ্যম কর্মীরা। তথ্যকর্মীর বিরুদ্ধে তথ্যচুরির অপবাদের প্রতিবাদেই এ অবস্থান চলছে।
কারারুদ্ধ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবে সকাল থেকেই বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ সাংবাদিকদের বেশকিছু সংগঠন। এ সময় তারা, মামলা প্রত্যাহার ও রোজিনা ইসলামের হেনস্তাকারীদের শাস্তির দাবি তোলা হয়।
বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির অনুসন্ধান করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি দাবি ওঠে সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের।
মানববন্ধনে সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, রোজিনার প্রত্যেকটি কাজ সাংবাদিক হিসেবে মানুষের কল্যাণে ও দেশের কল্যাণে। ভালো সাংবাদিক শুধু বন্ধুবান্ধবই তৈরি করে না শুভাকাঙ্ক্ষীও তৈরি করে। ভালো সাংবাদিকের শত্রু তৈরি হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে রোজিনার সেই শত্রুও তৈরি হয়েছে। যারা মিলিয়ন মিলিয়ন টাকা ঘুষ খান, পাচার করেন সেই সেই চক্র রোজিনার বিরুদ্ধে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, যতই বলুক তারা (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) এটি আইনের আওতায় হয়েছে, তিনি অন্যায় করেছেন, যদি তাদের দৃষ্টিতে অন্যায় হয়ে থাকে, তাহলে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারতেন। সাংবাদিক নেতাদের ডাকতে পারতেন, প্রেস কাউন্সিলকে বলতে পারতেন। একটা সুরাহা করতে পারতেন। তা না করে কেন ৬ ঘণ্টা নির্যাতন করা হলো? এ সমাবেশ থেকে আমরা বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এদিকে, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে করা মামলায় তদন্তের স্বার্থে যা যা করা দরকার, তার সবই করা হবে বলে জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (রমনা বিভাগের) উপকমিশনার এইচএম আজিজুল হক।
এ ছাড়াও সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তির দাবিতে রাজধানী বাইরেও বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে। পালন করা হয় বিভিন্ন কর্মসূচি।
প্রসঙ্গত, এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে অনুমতি ছাড়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে দৈনিক প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের রিমান্ড আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মোহাম্মদ জসিম এ নির্দেশ দেন।
সচিবালয়ে অনুমতি ছাড়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখার পর শাহবাগ থানা পুলিশে সোপর্দ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
সোমবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ৮টার পরে শাহবাগ থানা পুলিশের একটি টিম সচিবালয় থেকে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নিয়ে যায়। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সিব্বির আহমেদ ওসমানী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।