খুলনায় প্রকাশ্যে মাদক সেবন
<![CDATA[
খুলনার বিভিন্ন সড়কে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করছে ছিন্নমূলদের বড় একটি অংশ। আর মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে জড়িয়ে পড়ছে ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কাজে। এতে আতঙ্কিত সাধারণ পথচারীরাও।
পারিবারিক কলহের জেরে পরিবার ছেড়ে রেলস্টেশনে ঠাঁই হয়েছে খুলনার খালিশপুর গাবতলা এলাকার কিশোর লিমনের (ছদ্মনাম)। আলোর দেখা না পেয়ে বেছে নিয়েছেন অন্ধকারের পথ। অতীত ভুলে থাকার জন্য এখন সে মাদক সেবন করেন।
লিমন বলেন, ‘এই পথে আসছি কষ্টে। নানি প্রতিদিন কয় আমার ঘরে থাকতে হইলে, আমার ভাত খাইতে গেলে, প্রতিদিন ২০০ টাহা দেয়া লাগবে। তুমি কাজও ঠিক কইরা দিবা না, রিকশাও কিন্না দিবা না। তুমি যদি কও, প্রতিদিন ২০০ টাহা দেয়া লাগবে। তাইলে আমি পামু কই? তাইলে আমার চুরি করা লাগব। আর সবাই চায় একটা ভালো সুন্দর পরিবেশে মানুষ হবো। কিন্তু কীভাবে?’
জন্মের কিছুদিন পর মাকে হারান লিমন। বয়স যখন সাড়ে তিন বছর তখন সড়ক দুর্ঘটনায় বাবাকেও হারান। এরপর তার নানির মা (বড় মা) তাকে লালনপালন করেন।
শুধু লিমন নয়, খুলনার ছিন্নমূল মানুষের বেশির ভাগই মাদকাসক্ত। যাদের বড় একটি অংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক। নগরীর ডাকবাংলা, সাতরাস্তার মোড়, পাওয়ার হাউস মোড়, রেলস্টেশন রোডসহ বিভিন্ন সড়কে প্রকাশ্যে মাদক সেবন করছে তারা। বিশেষ করে ড্যান্ডি নামে একধরনের নতুন ও সহজলভ্য মাদকে আসক্ত তারা। শুধু ড্যান্ডি নয়, বিভিন্ন প্রকার মাদকে আসক্ত তারা। মাদকের টাকা সংগ্রহ করতে জড়িয়ে পড়ছে ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কাজে। এতে আতঙ্কিত সাধারণ পথচারীরাও।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ৩০
খুলনা সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘ছিন্নমূলরা মাদক গ্রহণ করে তাদের ইচ্ছায় নয়, এর পেছনে বড় একটি গ্যাং কাজ করে। যারা এদের মাদক সেবন করিয়ে, প্রলোভন দেখিয়ে এদের দিয়ে বিভিন্ন অপরাধ সংঘটন করে। বিভিন্ন ধরনের ছিনতাই, শিশু পাচার এবং তারা একটা জেনারেশনকে নষ্ট করছে। এটা ভয়াবহ ব্যাপার। এগুলো বন্ধ করতে গেলে প্রশাসনকে সচেতন হতে হবে।’
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘খুলনাকে মাদকমুক্ত রাখতে প্রতিদিনই মাদকবিরোধী অভিযান চলছে। তবে কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অভিনব পদ্ধতিতে মাদক বিক্রি করছে। এ ছাড়া নগরীতে কিছু কিছু ছিন্নমূল মানুষ মাদক সেবন করছে। আমাদের কাছে যখনই এ ধরনের অভিযোগ আসছে, আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছি এবং তাদের আইনের আওতায় আনছি। খুলনা মহানগরীতে এ বছর প্রায় এক হাজার মাদক সংক্রান্ত মামলা হয়েছে।’
]]>