গণমাধ্যমই পারে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সুসংহত করতে: স্পিকার
<![CDATA[
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে সুসংহত করতে গণমাধ্যমকে কাজ করতে হবে। কেননা, গণমাধ্যমই পারে এ সম্পর্ককে বন্ধুত্বপূর্ণ করে গড়ে তুলতে। দুই বন্ধুরাষ্ট্রের যেকোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রেও সাংবাদিকরা বড় ভূমিকা রাখতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ও গণমাধ্যমের ভূমিকা: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সার্বিক উন্নয়নে গণমাধ্যমের ভূমিকা রয়েছে। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সঙ্গে আঞ্চলিক সম্পর্কের দিক দিয়েও যদি দেখি, তাহলে সে বিষয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। সেখানেও গণমাধ্যম ভূমিকা রাখতে পারে। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকবে। পাশাপাশি যেকোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, অর্থনীতি, শিল্প, সংস্কৃতি, যোগাযোগব্যবস্থাসহ আরও নানাভাবে বাংলাদেশ ও ভারত একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাই সরকারের পাশাপাশি দুই দেশের সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: এসএমইর উন্নয়নে ভারতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে আগ্রহী বাংলাদেশ
জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার অন্যতম বাতিঘর, অসাম্প্রদায়িক গতিশীল চেতনার ধারক, গণতন্ত্রের আধার ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য একটি অংশ এই জাতীয় প্রেসক্লাব।
এ সময় ভারতীয় সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি গীতার্থ পাঠক বলেছেন, দুই দেশের মধ্যে একই ধরনের ঐতিহ্য প্রচলিত রয়েছে, তিন বিঘা করিডোর, ফারাক্কা বাঁধ, তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে যে অধিকারের বিষয়গুলো রয়েছে, সেসব বিষয় নিয়ে দুই দেশের সাংবাদিকদের আরও কথা বলতে হবে। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে হলে মূল বিষয়গুলো ছাড় দেয়া উচিত নয়।
ধর্মান্ধতা দূর করতে দুই দেশেরই কাজ করা উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইন্দো-বাংলা ফোরামের দুই দেশের সাংবাদিকদের আদান প্রদান বাড়ানো জরুরি। সাংবাদিকদের পারস্পরিক বিনিময়ের স্বার্থে ভিসা জটিলতা যেন না থাকে, সে দিকেও লক্ষ রাখা উচিত।
ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, ‘আমরা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে না যাই। রিফিউজি ক্যাম্পে ভারতের জনগণ যে সহায়তা করেছে, তা অতুলনীয়। জনগণের ওপর ভিত্তি করে দুদেশের সম্পর্ক তৈরিতে সাংবাদিকরা অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার সফলতার সঙ্গে ভারতের বিষয়ে নিজেদের দায়িত্ববোধ প্রমাণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমস্যা যতই গভীর হোক, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে বন্ধুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ জরুরি।
উভয় দেশের অর্থনৈতিক চিত্র তুলে ধরে মাহফুজ আনাম বলেন, অর্থনৈতিক সমতা দরকার। ভারত ৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য বাংলাদেশে বিক্রি করে। বিপরীতে বাংলাদেশ বিক্রি করে মাত্র ২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এ পার্থক্য কমাতে হবে।
আরও পড়ুন: ‘গুণগত মানের মোবাইল ফোনসেবা নিশ্চিত করা কঠিন কাজ নয়’
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কিছু পরিবর্তন হলেও সন্তোষজনক পরিবর্তন হয়নি মন্তব্য করে তিনি বলেন, সাংবাদিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকলে এর সুফল পাওয়া সম্ভব। বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারতীয় সাংবাদিকদের পরিচ্ছন্ন ধারণা থাকতে হবে। বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতীয় সাংবাদিকদের দৃষ্টিভঙ্গি যেন আরও বিস্তৃত হয়।
সাংবাদিকদের একাত্মতা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই দেশ সম্পর্কে জানতে সমন্বিতভাবে ইনস্টিটিউট করতে হবে। যাতে স্বাধীন স্কলাররা দুই দেশ সম্পর্কে সব বিষয়ে সঠিক ধারণা পায়।
সেমিনারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরীসহ অনেকে।
]]>