গাজীপুরে চিকিৎসকের অবহেলায় প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ
<![CDATA[
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের অবহেলায় এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মারা যাওয়া ওই নারীর নাম পারভীন আক্তার। তিনি উপজেলার বরমী ইউনিয়নের টান ভিটি পাড়া গ্রামের শহীদুল ইসলামের স্ত্রী।
শহীদুল ইসলাম জানান, গত শনিবার (২৯ অক্টোবর) শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার স্ত্রীর সিজারিয়ান অপারেশন করেন ডা. আয়েশা সিদ্দিকা। অপারেশন এ জন্ম হওয়া নবজাতক ভালো থাকলেও ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে পারভীন আক্তারের। রোববার সকাল আটটা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিচ তলায় ডা. আয়েশা রোগী দেখলেও দ্বিতীয় তলায় অসুস্থ পারভীনকে দেখতে যাননি বলেও অভিযোগ করেন শহীদুল।
তিনি বলেন, রোববার সন্ধ্যা সাতটার দিকে রোগীর খিচুনি শুরু হলে কর্তব্যরত নার্সরা বিষয়টি ডা. আয়েশাকে জানালে তিনি রোগীকে মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় তার প্রাইভেট চেম্বার আল হেরা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর রোগীর অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক পারভীনকে মৃত ঘোষণা করেন।
রোগীর স্বজনরা বলছেন, চিকিৎসকের অবহেলায় রক্ত শূন্যতায় মারা গেছেন পারভীন।
এরপর মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) দিনভর দেনদরবার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালায়। যদিও ডা. আয়েশা মুঠোফোন বন্ধ রেখেছেন। তার কাছ থেকে বিস্তারিত কোন কিছু জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: পুলিশের ধাওয়া খেয়ে পাঁচতলা থেকে পড়ে আসামির মৃত্যু
পারভীন আক্তারের ননদ রাহিমা আক্তার জানান, শনিবার সিজারের পর থেকেই পারভীনের অবস্থার অবনতি হয়। অনেক অনুনয় করেও চিকিৎসকদের দেখা মেলেনি। পরে রোববার অস্ত্রোপাচারকারী চিকিৎসক হাসপাতালের আউটডোরে রোগী দেখার সময় তাকে অনেক অনুনয় করলেও তিনি পারভীনকে দেখতে আসেনি। দুপুরের পর থেকেই পারভীন তীব্র ব্যথায় চিৎকার করতে থাকেন। সহ্য করতে না পেরে পারভীন নিজেই চিকিৎসকের ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন দিয়ে তাকে দেখে যেতে কান্নকাটি করতে থাকেন। এ সমসয় চিকিৎসক রোগীকে কটু কথা বলে ফোন কেটে দেন।
পারভীন আক্তারের স্বামীর দাবি এটা সুস্পষ্ট চিকিৎসকদের অবহেলা। তবে মারা যাওয়ার পর জানাজার নামাজে হাসপাতাল থেকে কয়েকজন অংশ নিয়ে পরিবারকে সান্তনা দেন। পরে মঙ্গলবার দুপুরে তাদের (শিশু সহ) হাসপাতালে ডেকে নেন উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা। তবে, সেখানে কি আলোচনা হয়েছে সে বিষয়ে তিনি কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পরিবারের এক সদস্য জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ আপাতত তাদের কোন অভিযোগ করতে নিষেধ করেছেন।
রোগী মারা যাওয়ার বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রনয় ভূষন দাস বলেন, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন, এছাড়া কেউ অভিযোগও দেয়নি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি তিনি দেখেছেন। তবে কেউ যদি অভিযোগ করে, অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
]]>




