বিনোদন

গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যু, ভারতীয় ওষুধ কোম্পানির উৎপাদন স্থগিত

<![CDATA[

ভারতীয় ওষুধ কোম্পানির কাশির সিরাপ পানে ৬৬ শিশু মৃত্যুর ঘটনায় উৎপাদনকারী মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালের ওষুধ উৎপাদন সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে ভারত। দেশটির হরিয়ানা রাজ্যসরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

রয়টার্সকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দিল্লির কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে নির্দেশনা আসার পর মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের বিষয়ে তদন্তে নেমেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অরগানাইজেশনের (সিডিএসসিও) হরিয়ানা রাজ্যশাখা এবং রাজ্যসরকারের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। তদন্তে মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের ওষুধ উৎপাদন সংক্রান্ত ১২টি অনিয়ম দেখতে পায় সংস্থা দুটি।

চলতি মাসে চারবার হরিয়ানায় মেইডেনের প্রধান কারখানা পরিদর্শন করেছে সিডিএসসিও এবং রাজ্যসরকারের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, প্রতিষ্ঠানটি নিয়ম লঙ্ঘন করে ওষুধ তৈরি ও পরীক্ষা করছে, এমন সত্যতা খুঁজে পাওয়া গেছে।

অনিল ভিজ বলেন, সংস্থা দুটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের উৎপাদন সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং কোম্পানি কর্তৃপক্ষকেও নোটিশ দিয়ে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে মেইডেনের নির্বাহী নরেশ কুমার গয়াল কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে গত সপ্তাহে নরেশ বলেছিলেন গাম্বিয়ার এই ঘটনায় কোম্পানির দায় কতখানি, তা খতিয়ে দেখছেন তারা।

কাশির সিরাপগুলো গত বছরের ডিসেম্বরে গাম্বিয়ায় রফতানি করা হয়। হরিয়ানায় মেইডেনের কারখানায় এ ওষুধ উৎপাদন করা হয়েছিল। ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ছিল ওষুধের মেয়াদ।

আরও পড়ুন: ভারতীয় কাশির সিরাপ পানে গাম্বিয়ায় শিশু মৃত্যু, হু-র সতর্কতা জারি

রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ভারত বিশ্বের ফার্মেসি হিসেবে পরিচিত। আফ্রিকার মোট চাহিদার ৪৫ শতাংশ ওষুধই সরবরাহ করে ভারত। কিন্তু সম্প্রতি কাশির সিরাপ খাওয়ার পর গাম্বিয়ার ৬৯ শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ভারতীয় ওষুধ কোম্পানিগুলোর জন্য খারাপ উদাহরণ। এটি ভারতীয় ওষুধশিল্পের ক্ষেত্রে বড় একটি ধাক্কাও।

এদিকে ভারতের তৈরি কাশির সিরাপ পানে গাম্বিয়ার ৬৬ শিশুর মৃত্যুর পর বিশ্বজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। ভারতের সেন্ট্রাল ড্রাফ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অরগানাইজেশন হু-কে নিশ্চিত করেছে গাম্বিয়াতেই এই সিরাপ রফতানি করা হয়েছে। তবে হু-র আশঙ্কা, বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই সিরাপের উপাদানগুলো।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুরোধের পর গত সপ্তাহে ভারতের বাজার থেকে মেইডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের যাবতীয় ওষুধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, যে চারটি সিরাপের কারণে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো হচ্ছে : প্রমাথাইজিন ওরাল সলুশন, কফিক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, ম্যাকফ বেবি কফ সিরাপ ও ম্যাগরিপ এন কোল্ড সিরাপ। সতর্কতা জারি করে হু জানিয়েছে, এই চারটি কাশির সিরাপ শুধু গাম্বিয়ায় নয়, চোরাই মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এতে যে কোনো সময় মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা।

আরও পড়ুন: গাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যু, নেপথ্যে ভারতীয় ফার্মাসিউটিক্যালস!

গাম্বিয়ায় জুলাইয়ের শেষের দিকে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে তীব্র কিডনি জটিলতা সংক্রান্ত মৃত্যুর রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এর পরেই গাম্বিয়ার সরকার সব প্যারাসিটামল সিরাপ ব্যবহার স্থগিত করে এবং এর পরিবর্তে ট্যাবলেট ব্যবহার করার জন্য জনগণকে অনুরোধ করে।

গাম্বিয়ার স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিচালক মুস্তাফা বিট্টে বলেন, এই সিরাপ গ্রহণের ফলে পেটে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া এবং কিডনি জটিলতায় মৃত্যুর উদাহরণ তারা পেয়েছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই সিরাপে শিশুদেহের জন্য ক্ষতিকারক মারাত্মক ব্যাকটেরিয়া ই.কোলির উপস্থিতির প্রমাণও তারা পেয়েছেন।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!