চলছে মঞ্চ প্রস্তুতির কাজ, দুদিন আগেই সমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের অবস্থান
<![CDATA[
আগামী ৫ নভেম্বর বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের জন্য নির্ধারণ হওয়া বঙ্গবন্ধু উদ্যানের একাংশে চলছে মঞ্চ নির্মাণের কাজ। আর সমাবেশকে কেন্দ্র করে এরইমধ্যে সমাবেশের দুদিন আগেই সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের দাবি পরিবহন বন্ধ করে দিয়ে কোনো লাভ হবে না। তারা জানান, এরই মধ্যে নেতাকর্মীরা নগরীতে অবস্থান নিয়েছে। আর বুধবার সকাল থেকে বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগের শো ডাউনের কারণে উত্তপ্ত হয়ে পড়েছে বরিশাল নগরী।
বুধবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকেই সমাবেশস্থলে বিএনপির সভা মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়। বিভিন্ন স্তরের নেতারা উপস্থিত থেকে এসব কাজ দেখভাল করছেন। পাশাপাশি দফায় দফায় করা হচ্ছে প্রস্তুতি সভা।
কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী সোহেল সময় সংবাদকে বলেন, ৫ নভেম্বর বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশ কেউ কোনো ভাবেই আটকে রাখতে পারবে না। এরই মধ্যে নগরীর বিভিন্ন হোটেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করে নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতে চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, ৪ তারিখ থেকে আঞ্চলিক ও দূরপাল্লার বাস বন্ধ করার ঘোষণা হয়েছে, থ্রি হুইলার বন্ধ করারও ঘোষণা হয়েছে, সমাবেশের আগের দিন থেকে হয়তো লঞ্চও বন্ধ থাকবে। সমাবেশ সফল করতে বিএনপির নেতাকর্মীরা দরকার হলে কলা গাছের ভেলায় ভেসে আসবে। সমাবেশস্থলে যে করেই হোক তারা আসবে, সমাবেশ সফল হবে।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিণ বলেন, পরিবহন সেক্টরগুলোর নেতৃত্বস্থানীয়রা সবাই সরকারী দলের পদধারী নেতা। তাদের উদ্দেশ্যে তো বিএনপিকে দমন করাই। প্রশাসনকে সাথে নিয়ে আমাদের পথরুদ্ধ করতে নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করা হচ্ছে সমাবেশ বানচাল করতে। তবে কোনো কিছু করেই লাভ হবে না। বর্তমানে সমাবেশস্থলে প্রস্তুতির কাজ চলছে। মঞ্চ তৈরি থেকে শুরু করে অন্যান্য যে কাজগুলো রয়েছে সেই সমস্ত স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা তদারকি করছেন।
আরও পড়ুন: শেষ মুহূর্তে বরিশালে সমাবেশের অনুমতি পেল বিএনপি
যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বলেন, বরিশাল নগরী জুড়ে শো ডাউন করে আতংকের সৃষ্টি করছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। তারা বেপরোয়া হয়ে গেছে বিএনপির জনসমর্থন দেখে। যদি হোটেলে থাকতে দেওয়া না হয় আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে থাকবে। অনেকেই এরমধ্যে অবস্থান নিয়েছে সমাবেশস্থলে।
বরিশালে বিএনপির সমাবেশস্থলে অবস্থান নেওয়া যুবদল কর্মী ওয়াসিম মৃধা বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে কোনো আপোষ করবো না। সব কিছু বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, তাই আগে থেকেই নগরীতে এসে সমাবেশস্থলে অবস্থান নিয়েছি। এখানেই থাকবো।
মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি বলেন, সমাবেশস্থলে আসার জন্য পথে পথে বাধা সৃষ্টির প্রস্তুতি নিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল। কোনো বাধা আমাদের নেতাকর্মীরা মানবে না। লক্ষ লক্ষ মানুষ সমাবেশস্থলে জমায়েত হবে এই স্বৈরাচারী সরকারের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে।
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, গণসমাবেশের দিন যত ঘনিয়ে আসছে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন বাড়ছে। এবার বুকে গুলি করলেও নেতাকর্মীরা দাবি আদায় না করে আন্দোলন থেকে সরে আসবে না। তাই যতই পুলিশী অভিযানের নামে বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি করা হোক না কেন কেউ পিছু হটবে না।
এদিকে বরিশাল নগরীতে হঠাৎ মোটরসাইকেল শো ডাউনের বিষয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহবায়ক রইজ আহম্মেদ মান্না বলেন, আমাদের নগরী শান্তির নগরী। এই নগরীতে কেউ বিশৃঙ্খলা করলে আমরা সহ্য করবো না। ৫ নভেম্বর খালেদা জিয়ার সরকার সন্ত্রাসী বাহিনী সমাবেশ করবে। তারা বিভিন্ন জায়গায় মানুষ ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করছে। এতে যেন কোনো ধরণের সমস্যা না হয়, সেই জন্যই আমরা নগরীতে তদারকি করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার ফজলুল করিম বলেন, আবাসিক হোটেলে অভিযান পরিচালনা করা নিয়মিত বিষয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা থাকবে হোটেলে, সেটা কোনো সমস্যা নয়। পুলিশ অভিযান চালিয়েছে কোনো চোর, বাটপার বা ছিনতাইকারী হোটেলে আছে কিনা সেই খোঁজ নিতে।
]]>