বাংলাদেশ
Trending

চা-শ্রমিকদের আন্দোলন: অর্থের ক্ষুধার জয়, পেটের ক্ষুধার পরাজয়

বৈষম্যের শুরুটা জন্মলগ্ন থেকেই। শতবছর আগে ১৯২১ সালেও ‘মুল্লুকে চলো’ স্লোগানে মজুরি বাড়ানোর দাবি তুলেছিলেন চা-শ্রমিকরা। তখন ব্রিটিশ সেনাদের বন্দুকে রক্তাক্ত হয় চা-বাগান। কিন্তু ১০০ বছর পরও একটুও বদলায়নি চা-শ্রমিকদের ভাগ্য। সম্প্রতি মজুরি বাড়াতে চা-শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। এতে তাদের আয়, জীবনমান ও বৈষম্যের চিত্র আবারও সামনে এসেছে।

চা-বাগানের জমির মালিকানা সরকারের। এসব জমি কিছু শর্তসাপেক্ষে চা চাষের জন্য ১০, ২০, ৩০ বা ৪০ বছর মেয়াদে ইজারা দেয়া হয়।

চা বোর্ডের ভূমি নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. দিদারুল মওলা জানান, ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘চা-বাগান ভূমি ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা’ খাসজমি-১ সম্পর্কিত জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী, একজন ইজারাগ্রহীতা ইজারাপ্রাপ্ত জমির মোট বাজারমূল্যের ১০ শতাংশ সরকারি কোষাগারে জমা দিয়ে ইজারা গ্রহণ করবেন। পরে প্রতিবছর একরপ্রতি ৩০০ টাকা হারে ভূমিকর প্রদান করবেন।

এর বাইরে কেবল চা-বাগান মালিকদের বাগানে চাষাবাদ, শ্রমিকদের বেতন, অবকাঠামোসহ অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্টের খরচ যুক্ত হয়।

চা-বাগান ইজারা বা চা বিক্রির টাকার কোনো অংশ সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয় কি না, সেটি জানতে চা বোর্ডের উপপরিচালক (বাণিজ্য) মুহাম্মদ মদহুল কবীর চৌধুরীসহ একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে কেউ কথা বলতে রাজি হননি।

শ্রমিকরা যা পান

দেশে চা-শিল্পের ইতিহাস ১৬৮ বছর। কিন্তু একজন চা-শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ১৬৮ টাকাও নয়; মাত্র ১২০ টাকা! তবে বাগান কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা হলেও চা-বাগানের শ্রমিকরা অন্যান্য সুবিধা পান।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা সংসদের সিলেট শাখার চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ শিবলী বলেন, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, রেশন ইত্যাদি সবকিছুই আমরা দিচ্ছি। এই হিসাব করলে একজন চা-শ্রমিকের দৈনিক মজুরি দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে ৩০০ টাকা।

তিনি আরও বলেন, ১০ বছর ধরে চা পাতার মূল্য বাড়েনি। কিন্তু ১০ বছরে চা-শ্রমিকদের বেতন কয়েক দফা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের দাবি অনুযায়ী বাড়াতে গেলে চা-শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।

তবে বাগান মালিকদের দাবি অনুযায়ী, একজন চা-শ্রমিকের মজুরি ৩৫০ টাকা হলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটিও অপর্যাপ্ত মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।


বাগানে তিন শ্রেণির শ্রমিক কাজ করেন। ‘এ’ ক্যাটাগরির শ্রমিকরা ১২০ টাকা দৈনিক বেতন পান। ‘বি’ ও ‘সি’ ক্যাটাগরির শ্রমিকদের বেতন আরও কম। এ ছাড়া প্রতিটি বাগানে স্থায়ী শ্রমিকের অর্ধেক অস্থায়ী শ্রমিক থাকেন। তাদের বেতন আরও অনেক কম। তাদের জন্য নেই উৎসব ভাতা ও রেশন।
হিসাবটা একটু ভিন্নভাবে করা যাক

হিসাবটা আরও একটু ভিন্নভাবে করা যেতে পারে, ২০১৭-১৮ সালে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৭৫১ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা (প্রতি ডলার ৯৫ টাকা হিসাবে) ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩৪৫ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে সেই আয় দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৫৫৪ ডলার বা ২ লাখ ৪২ হাজার ৬৩০ টাকা। অর্থাৎ পাঁচ বছরের ব্যবধানে মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৭৬ হাজার ২৮৫ টাকা।

কিন্তু ১২০ টাকা মজুরি হিসাবে একজন চা-শ্রমিকের বার্ষিক আয় মাত্র ৪৩ হাজার ৮০০ টাকা। বিষয়টি আরও স্পষ্ট করে বলা যায়; দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির যে ধারা, তার কোনো ছাপ পড়েনি চা-শ্রমিকদের জীবনে। গত পাঁচ বছরে চা-শ্রমিকদের বেতন বেড়েছে মাত্র ১৮ টাকা।

চা-বাগানের আয়-ব্যয়ের আনুমানিক চিত্র

চা বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, দেশের চা-বাগানগুলোয় ২০২১ সালে ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। বিক্রি হয়েছে প্রায় ৩ হাজার ২৫ কোটি টাকা টাকার চা-পাতা।

অন্যদিকে দেশের ১৬৭টি চা-বাগানে ১ লাখ ৩ হাজার ৭৪৭ জন নিবন্ধিত ও ৩৬ হাজার ৪৩৭ জন অনিবন্ধিত শ্রমিক আছেন। সব মিলিয়ে এ খাতে কর্মসংস্থান হয়েছে ৪ লাখ ৭২ হাজার ১২৫ জনের। এদের প্রত্যেকেও যদি ১২০ টাকা করে মজুরি পান, তবে বছরে শ্রমিকদের মজুরির পেছনে খরচ করতে হয় ২ হাজার ৬৭ কোটি ৯০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। চা বিক্রির টাকা থেকে শ্রমিকদের বেতন বাদ দিলে ৯৫৭ কোটি ৯২ লাখ ৫ হাজার টাকা উদ্বৃত্ত থাকে। সে হিসাবে প্রতিটি বাগান গড়ে ৫ কোটি ৭৩ লাখ টাকা মুনাফা অর্জন করে।

কী বলছে আইন

শ্রম আইন-২০০৬-এর দশম অধ্যায়ের ‘মজুরি ও উহার পরিশোধ’ সংক্রান্ত ধারায় বলা হয়েছে, ‘প্রচলিত মুদ্রা অথবা কারেন্সি নোট ইত্যাদি দ্বারা মজুরি পরিশোধ: সকল মজুরি প্রচলিত মুদ্রা, কারেন্সি নোট অথবা ব্যাংকের চেকের মাধ্যমে পরিশোধ করিতে হইবে।’

‘প্রবর্তিত পদ্ধতি ছাড়াও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শ্রমিকের চাহিদা মোতাবেক শ্রমিকের ব্যবহৃত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ইলেকট্রনিক ট্রান্সফারের মাধ্যমে কিংবা অন্য কোনো ডিজিটাল পদ্ধতিতে সরাসরি পরিশোধ করা যাইবে।’

এ ক্ষেত্রে মজুরি পরিশোধের ক্ষেত্রে চা-শ্রমিকের বাসস্থান, চিকিৎসা, রেশন কোনো কিছুই শ্রমিকদের মজুরির বিকল্প নয়। তাই আইনগতভাবে এসব সুযোগ দিয়ে মজুরি কম দেয়ার আইনগত সুযোগ নেই।

নেই অতিরিক্ত কাজের মজুরি

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ২০২১ সালে জারি করা ‘টি গার্ডেন’ গেজেটে চা-শ্রমিকদের আবাসন, চিকিৎসা সুবিধা ফ্রি দেয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি রেশন, মাতৃত্বকালীন ভাতা, গ্রুপ বিমা নিশ্চিতের উল্লেখ করা হয়েছে।

শ্রম আইন-২০০৬-এর ১০৮ ধারা অনুযায়ী, আট ঘণ্টার বেশি কাজের জন্য শ্রমিককে অতিরিক্ত কাজের মজুরি দিতে হবে; যা চা-শ্রমিকদের জন্যও প্রযোজ্য। কিন্তু এ ক্ষেত্রে চা-শ্রমিকরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বঞ্চিত হয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে গবেষক আশ্রাফুল বলেন, একজন কৃষিশ্রমিক সকালবেলা কাজ শুরু করলে দুপুর পর্যন্ত এক রোজ শেষ। আবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত আরেকটি পর্ব থাকে। সাধারণ শ্রমিকরা যেখানে আট ঘণ্টা কাজ করে সেখানে একজন চা-শ্রমিকের কর্মঘণ্টা ১২ ঘণ্টা (ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত)। কিন্তু এই শ্রমের বিনিময়ে সঠিক প্রাপ্তিটা নিশ্চিত হচ্ছে না।

এ ছাড়া গেজেট অনুযায়ী, চা-বাগানের বিক্রয়লব্ধ মোট অর্থের ০.০৩ শতাংশ শ্রমিকদের অংশগ্রহণভিত্তিক মুনাফার অংশ হিসেবে প্রতিবছর একবার প্রদেয় হবে। সে হিসাবে ২০২১ সালের চা বিক্রির অর্থের ০.০৩ শতাংশ দাঁড়ায় ৯০ লাখ টাকারও বেশি। কিন্তু শ্রমিকদের পর্যন্ত সেটি পৌঁছায় কি না, তা জানা সম্ভব হয়নি।

আইএলওর মজুরিবিষয়ক প্রতিবেদন

ভারত, শ্রীলঙ্কা ও নেপালসহ শীর্ষ চা উৎপাদনকারী দেশ চীন ও কেনিয়ার চেয়ে বাংলাদেশের চা-শ্রমিকদের মজুরি অনেক কম। এ তো শুধু মজুরির কথা। চা-শ্রমিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৈষম্যহীনভাবে দেয়ার ক্ষেত্রেও এগিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলো।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের (সিলেট ভ্যালি শাখা) সভাপতি রাজু গোয়ালা বলেন, ‘আমাদের পাশের দেশ ভারতে মজুরি কোনো জায়গায় ২৪০ রুপি আবার কোথাও ২০৩ রুপি। শ্রীলঙ্কায় ৩৫০ রুপির মতো দেয়া হয়। আমাদের দেশে এই বৈষম্য কেন?’

এক চা-শ্রমিক বলেন, ‘মাসে বেতন পাই ৩৬০০ টাকা। দিনে এক বেলা আটার রুটি খেলেও অপর বেলা ভাত খাই। চালের দাম ৫০ টাকা কেজি হলেও একটি পরিবারে দৈনিক দেড় কেজি চাল কিনলে এতেই চলে যায় মাসে ২২০০ টাকার ওপরে। বাকি থাকে ১৪০০ টাকা, যা  দৈনিক ৫০ টাকারও কম। এবার এই টাকা দিয়ে শাক-সবজি, মাছ, তেল, লবণ, ডাল, সাবান, চিকিৎসা ব্যয়, পোশাক ইত্যাদি কীভাবে সম্ভব হবে?’

বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রকাশিত ‘গ্লোবাল ওয়েজ রিপোর্ট ২০২০-২১’-এর প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ন্যূনতম মজুরি দেয়ার বেলায় বাংলাদেশ সবার পেছনে। ক্রয়ক্ষমতার বিবেচনায় ২০১৯ সালে বাংলাদেশে মাসিক ন্যূনতম মজুরি ছিল ৪৮ ডলার। অপরদিকে, ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশ পাকিস্তানে মাসিক ন্যূনতম মজুরি ৪৯১ ডলার—দক্ষিণ এশিয়ায় যা সর্বোচ্চ।

চা-শ্রমিকরা বৈষম্যের শিকার, স্বীকার করে সমাজসেবা অধিদফতর

চা-শ্রমিকরা যে বৈষম্যের শিকার, সেটি স্বীকার করে সমাজসেবা অধিদফতর। এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের ‘চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’বিষয়ক প্রারম্ভিকায় বলা হয়েছে, চা-শ্রমিকরা জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তারা সব নাগরিক সুবিধা ভোগের অধিকার সমভাবে প্রাপ্য হলেও তারা পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্যের শিকার বলে প্রতীয়মান। তাদের প্রতি সদয় আচরণ ও তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হওয়া পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সকলের দায়িত্ব।

সমাজসেবা অধিদফতর স্বীকৃত এ বৈষম্য বিলোপে ‘চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’ শুরু হয় ২০১৩-১৪ অর্থবছরে। ওই বছর শ্রমিকদের জন্য মাত্র ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়, যার উপকারভোগী মাত্র ২ হাজার জন। সবশেষ ২০২২-২৩ অর্থবছরে এ কর্মসূচিতে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে, যার উপকারভোগী হবেন ৬০ হাজার জন। সে হিসাবে একজন চা-শ্রমিকের প্রতিবছর বরাদ্দ মাত্র পাঁচ হাজার টাকা!

এ বিষয়ে সমাজসেবা অধিদফতরের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক মো. শাহ জাহান সময় সংবাদকে বলেন, ‘সমাজের অন্যান্য মানুষের তুলনায় চা-শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান সত্যিই খুব নিম্নমানের। তারা আসলেই সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর অংশ।’

কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা

চা-শ্রমিকদের প্রতি যে অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্য করা হচ্ছে, সেই বিষয়ের সঙ্গে একমত অর্থনীতিবিদ-গবেষকরা। এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, ‘বৈষম্যেরও একটা সীমা থাকে। কিন্তু চা-শ্রমিকের মজুরি নিয়ে যা হচ্ছে, সেটি আসলে সব সীমা ছাড়িয়ে গেছে। যে পরিমাণে মজুরি বাড়ানো হয়েছে, ১২০ টাকা থেকে ১৪৫ টাকা করা হয়েছে, সেটি অনেকটাই উপহাস। গ্রামের সাধারণ একজন মজুর যে কৃষিকাজ করে, তারাও কিন্তু ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা মজুরি পাচ্ছে।’

অন্যদিকে চা-শ্রমিকদের আর্থসামাজিক বিষয়াবলি গবেষক এবং সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আশ্রাফুল করিম বলেন, ‘২০১৯ সালে ৭ কোটি ৭০ লাখ কেজি টার্গেট ধরা হলেও চায়ের উৎপাদন হয়েছিল ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি। ওইসময় থেকেই মালিক পক্ষের উচিত ছিল মজুরি বৃদ্ধি করা। আর্থাৎ, চা-শ্রমিকদের মজুরি তখন থেকেই ৩০০ টাকা হওয়া উচিত ছিল।’

তিনি বলেন, ‘২০০০ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত চা-শ্রমিকদের ভাষা, সংস্কৃতি, আর্থসামাজিক অবস্থা এসব নিয়ে গবেষণা ও গবেষণা রিলেটেড কাজ করছি। চা-শ্রমিকদের দাবি আমার কাছে যৌক্তিক মনে হয়। এর বড় কারণ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে ১২০ টাকা মজুরিতে এক বেলা আহারও জোটার কথা নয়।’

প্রতি দুই বছর পরপর ‘চা সংসদ’ ও ‘বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন’-এর দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় চুক্তির মাধ্যমে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করা হয়। সবশেষ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের ডিসেম্বর। তখন থেকেই শ্রমিকরা তাদের মজুরি বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু মালিকপক্ষ ১৩৪ টাকার প্রস্তাব দেয়। এ বিষয়ে মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় গত ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন শ্রমিকরা। এতে কার্যত চা-শিল্প স্থবির হয়ে পড়ে। সবশেষ গত শনিবার (২০ আগস্ট) দুপুরে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের বিভাগীয় শ্রম দফতরের কার্যালয়ে শ্রম অধিফতর ও সরকারের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে বসেন চা-শ্রমিক নেতারা। বৈঠকে শ্রমিকদের মজুরি ২৫ টাকা বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়। তবে তাতে শ্রমিকরা সন্তুষ্ট হননি এবং আন্দোলন  চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় চা-শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মোট চা-শ্রমিক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা সাড়ে ৭ লাখ।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!