চীনকে হটিয়ে ভারতের সারের বাজারে রাশিয়ার আধিপত্য
<![CDATA[
রাশিয়া থেকে রেকর্ড পরিমাণ সার আমদানি করছে ভারত। এতে চীনকে হটিয়ে ভারতের শীর্ষ সার সরবরাহকারী দেশে হয়ে উঠেছে রাশিয়া। বড় আকারের ছাড়ে সার বিক্রি করে রাশিয়া ভারতের সারের এক-পঞ্চমাংশ বাজার দখল করে বসে আছে।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রকাশিত প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে রাশিয়া প্রথমবারের মতো ভারতের সবচেয়ে বড় সার সরবরাহকারী হয়ে উঠেছে। কারণ, বিরাজমান বৈশ্বিক মূল্যের ওপর ছাড় দিচ্ছেন রাশিয়ার রফতানিকারকরা। আর এ সুযোগ লুফে নিয়েই দেশটি থেকে ব্যাপক পরিমাণ সার আমদানি করছে ভারত।
রাশিয়ার সার রফতানিকারকরা ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ভারতীয় সারের বাজারের ২১ শতাংশ দখল করেছে, যা ভারতের আগের বৃহত্তম সার সরবরাহকারী দেশ চীনকেও ছাড়িয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় এক সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে রাশিয়া থেকে ভারতের সার আমদানি ৩৭১ শতাংশ বেড়েছে, যা রেকর্ড ২ দশমিক ১৫ মিলিয়ন টন। যেখানে গত পুরো অর্থবছরে রাশিয়া থেকে মাত্র ১ দশমিক ২৬ মিলিয়ন টন সার আমদানি করেছিল ভারত।
আর্থিক হিসাবে, এ সময়ে রাশিয়া থেকে ভারতের সার আমদানি ৭৬৫ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে উঠে গেছে।
আরও পড়ুন: চীনে রাশিয়ার জ্বালানি রফতানি বাড়ছে
ওই সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘রাশিয়া-ইউক্রেন দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকলে সারের দামও লাফিয়ে বাড়তে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে একটি যুক্তিসংগত দামে সার কেনা ভারতের জন্য কঠিন হয়ে উঠেছিল। এতে আমাদের দেশে সার ঘাটতি হওয়ার একটি আশঙ্কা দেখা দেয়। রাশিয়া থেকে সার কেনার মাধ্যমে আমরা সেটি এড়িয়ে যেতে পেরেছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ভারত প্রতি টনে ৭০ ডলারের বেশি ছাড় পেয়েছে। এর বিপরীতে ইউরোপের বিকল্প হিসেবে রাশিয়া একটি বড় ক্রেতা খুঁজে পেয়েছে। কারণ, ইউক্রেন সংঘাতের জেরে ইউরোপীয় দেশগুলো রাশিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।’
গত অর্থবছরে ভারতের সারের বাজারের প্রায় ৬ শতাংশ রাশিয়ার দখলে ছিল। যেখানে চীনের আধিপত্য ছিল ২৪ শতাংশ। কিন্তু চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে রাশিয়ার কারণে চীনের হাত থেকে ভারতের বাজার ধীরে ধীরে ছুটে যাচ্ছে। ছয় মাসে দেশটিতে চীনের সার রফতানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথমার্থে চীন ভারতে ১ দশমিক ৭৮ মিলিয়ন টন সার রফতানি করেছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর পশ্চিমা দেশগুলো বিশ্বের প্রধান সার রফতানিকারক দেশ রাশিয়া ও বেলারুশের সারের চালানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এতে মার্চ থেকে বিশ্ববাজারে সারের দাম বাড়তে থাকে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তার মিত্রদের নিষেধাজ্ঞার জেরে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার বাজার থেকে সরে যাচ্ছে, এর বিকল্প হিসেবে মস্কো নতুন বাজার খুঁজে পেয়েছে। যেটি হচ্ছে এশিয়া। দেশটি ইউরোপ থেকে সরে এসে এশিয়ার দেশগুলোয় নিজের পণ্য রফতানি করছে।
]]>




