চীনের চিপ শিল্প পঙ্গু করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
<![CDATA[
চীনের কম্পিউটার চিপ শিল্প পঙ্গু করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। সেই লক্ষ্যে আরেক দফা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকার। নতুন এই বিধিনিষেধকে ১৯৯০ দশকের পর চীনে প্রযুক্তি রফতানির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় নীতিগত পরিবর্তন বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে চীনের চিপ নির্মাতা কোম্পানিগুলো কয়েক বছর পিছিয়ে যেতে পারে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদন মতে, গত শুক্রবার (৭ অক্টোবর) ওই রফতানি নিয়ন্ত্রণমূলক বিধিনিষেধ প্রকাশ করে বাইডেন প্রশাসন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি তাদের প্রযুক্তিতে চিপ উৎপাদন করছে এমন নির্দিষ্ট দেশ থেকে চীন যাতে চিপ আমদানি করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও থাকছে। লক্ষ্য, বেইজিংয়ের প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও সামরিক অগ্রগতি মন্থর করে দেয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে চীন। এটিকে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য নিয়মের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে বেইজিং। শনিবার (৮ অক্টোবর) দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি আধিপত্য ধরে রাখতে এবং চীনের কোম্পানিগুলোকে পেছনে ফেলতে রপ্তানি নীতির অপব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, এটি শুধু চীনা কোম্পানিগুলোর বৈধ অধিকার ও স্বার্থই ক্ষতি করবে না, মার্কিন কোম্পানিগুলোকেও প্রভাবিত করবে। এর মাধ্যমে চীনের অগ্রগতি দমানো যাবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) প্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জিম লুইস বলেছেন, মার্কিন এসব পদক্ষেপ চীনের চিপ শিল্পকে কয়েক বছর পিছিয়ে দেবে। তা ছাড়া এটি শীতল যুদ্ধ আরও প্রকট করবে। বেইজিং সার্কিট তৈরি বন্ধ করবে না। তবে মার্কিন এই নীতি সত্যিই তাদের অগ্রগতি ধীর করে দেবে।
আরও পড়ুন: নিয়োগ স্থগিত, ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাই করবে ফেসবুক
এর আগে চলতি বছরের আগস্টে চীনে চিপ নির্মাণের যান্ত্রিক সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি আলোচনায় আসে। স্মার্টফোন ও কম্পিউটারের তথ্য সংরক্ষণের জন্য ন্যান্ড চিপ ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়।
মুঠোফোন থেকে শুরু করে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, বৈদ্যুতিক গাড়িসহ সব ধরনের ইলেকট্রনিক্স পণ্য তৈরিতে প্রয়োজন হয় এই চিপ। একে সেমিকন্ডাক্টরও বলা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান– এই চারটি দেশ বিশ্বের বেশিরভাগ সেমিকন্ডাক্টর চিপ তৈরি করে।
করোনার সময় বৈশ্বিকভাবে চিপের উৎপাদন কমে যায়। ঘাটতি তৈরি হলে চাপে পরে যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ আমদানিনির্ভর বৃহৎ দেশগুলো। অন্যদিকে চিপ সংকটের কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ভুক্তভোগী হয় পৃথিবীর প্রায় সব দেশ।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনের পক্ষ নেয়ায় চাকরি খোয়ালেন ইহুদি সাংবাদিক
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন মিত্র দেশগুলোকে নিয়ে একটি জোট গড়তে উদ্যোগী হন, যার উদ্দেশ্য আমদানিনির্ভরতা কমানো ও চীনের প্রভাব খর্ব করা। এ সংক্রান্ত নতুন একটি আইনে স্বাক্ষর করে কয়েকশ কোটি ডলার প্রণোদনার ঘোষণা দেন বাইডেন।
পাশাপাশি চিপ উৎপাদক বৃহৎ অপর তিন দেশ– তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানকে নিয়ে চিপ–৪ গ্রুপ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। যদিও এই উদ্যোগ এখনো আলোচনার পর্যায়েই আছে।তবে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত চিপ-৪ গ্রুপে সক্রিয় হতে রাজি হয়েছে তাইওয়ান। নিজ দেশের কোম্পানির স্বার্থ রক্ষা ও চিপের সরবরাহ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একত্রে কাজ করবে চীনের ঘরের পেছনের দেশটি।
]]>