বিনোদন

ট্রলার মালিকের নাম না থাকায় ‘বিস্মিত’ আদালত

<![CDATA[

মিয়ানমার থেকে নৌপথে আনার সময় পাঁচ বছর আগে গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলারে অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ ইয়াবার একটি চালান আটক করেছিল র‍্যাব। দেশে আটক হওয়া সর্ববৃহৎ ইয়াবার চালান এখন পর্যন্ত এটিই। আটক হওয়া ইয়াবা চালানের খবর পেয়ে সে সময় চট্টগ্রামে ছুটে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী এই ইয়াবার চালানের মামলার তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আদালত।

বিস্ময় প্রকাশ করে আদালত বলেছেন, যে ট্রলারটি থেকে ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে সেই ট্রলারের মালিককেই অভিযোগপত্রে আসামি করা হয়নি। যারা তদন্তে দায়িত্ব পালন করেছে সেই তদন্তকারী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইজিপির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন আদালত।

রোববার ( ১৩ নভেম্বর) চট্টগ্রামে চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরিফুল আলম ভূঁইয়া এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিস্ময় প্রকাশ করে তদন্তে গাফিলতির বিষয়টি তুলে ধরেন।

মামলার রায়ে আট আসামিকে ১৫ বছর করে কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া তিন আসামিকে পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে তাদের আরও ছয় মাস করে কারাবন্দী থাকতে হবে।

আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় ট্রলারের মালিক কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না। কিন্তু তদন্তকারী কর্মকর্তারা প্রকৃত মালিককে শনাক্তে কোনো ভূমিকাই রাখেননি।

ওই সময় যে তিন পুলিশ কর্মকর্তা এ তদন্তের দায়িত্ব পালন করেছিলেন তারা হলেন- নগরীর পতেঙ্গা থানার তৎকালীন পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ফৌজুল আজিম, র‌্যাব-৭ এর তৎকালীন সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জালাল উদ্দীন আহম্মদ এবং পিবিআইয়ের চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দীন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ১৬ এপ্রিল ভোরে গভীর সাগরে এফভি মোহছেন আউলিয়া নামে একটি মাছ ধরার ট্রলারে অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ ইয়াবাসহ আটজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। তারা হলেন— মকতুল হোসেন, আব্দুর নূর, হেলাল, আব্দুল খালেদ, জানে আলম, লোকমান, এনায়েত উল্লাহ ও নুরুল মোস্তফা। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই দিনই নগরীর পাঁচলাইশ থানার সুগন্ধা আবাসিক এলাকার বাড়ি থেকে র‌্যাব গ্রেফতার করে মোজাহার মিয়া নামে আরেকজনকে।

আরও পড়ুন: রংপুরে নকল ব্যান্ডরোল-বিড়িসহ গ্রেফতার ১

মামলার এজাহার ও অভিযোগপত্রে ট্রলারের মালিক হিসেবে আব্দুল জলিলের নাম উল্লেখ আছে। কিন্তু আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেছেন, সামুদ্রিক মৎস্য অধিদফতর থেকে ইস্যু করা লাইসেন্সে ট্রলারটির মালিকের নাম নেজাম উদ্দিন।

২০ লাখ ইয়াবার চালান যে ট্রলার থেকে জব্দ করা হয়েছে, সেই ট্রলারের মালিক এই ঘৃণ্য অপরাধের দায় এড়াতে পারেন না। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে তিনজন তদন্তকারী কর্মকর্তার কেউই এই বিপুল পরিমাণ মাদক সরবরাহকারী ফিশিং বোটটির মালিক নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নেননি অথবা অভিযোগপত্রে নীরব থেকেছেন। এই চালান ফিশিং ট্রলারের মালিকের জ্ঞানের বাইরে হওয়ার সুযোগ নেই বলে মনে করেন আদালত।

সেই সঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।

বিচারক বলেন, মাদক, খুন, ডাকাতিসহ গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য মামলার সুষ্ঠুভাবে তদন্তের জন্য পুলিশ বিভাগে কর্মরত উপপরিদর্শক পদমর্যাদার সবার প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!