সোনাগাজী

ঠান্ডাজনিত রোগে একে একে মারা গেলো খামারির ১০৫ ছাগল

ফেনীর সোনাগাজীতে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে শহীদুল ইসলাম নামে এক খামারির ১০৫টি ছাগল মারা গেছে। চলতি মাসে উপজেলার সদর ইউনিয়নের চর খোয়াজ এলাকায় হঠাৎ করে এসব ছাগলের মৃত্যু হয়। এতে পুঁজি হারিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওই খামারি।

শীতকালে অপরিচ্ছন্ন ও খোলা স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে ছাগলগুলোকে রাখায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সেগুলোর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের কর্মকর্তা নেবু লাল দত্ত।

খামারি শহীদুল ইসলাম বলেন, তার প্রধান পেশা গরু-ছাগল পালন। আগে ছয়-সাতটি গরুর খামার থাকলেও ২০১৮ সালে সাড়ে আট লাখ টাকা খরচ করে ৩০টি ছাগল দিয়ে ছাগলের খামার শুরু করেন। ধীরে ধীরে ছাগলগুলো বাচ্চা দিয়ে খামার ভরপুর হয়ে ওঠে। ৩০টি ছাগল থেকে তার খামারে প্রায় দেড়শো ছাগলের খামার হয়। পরে গত কোরবানির ঈদে ৪০টি ছাগল বিক্রি করে দেন। এরপর খামারে থাকা ১১০টি ছাগলকে লালন-পালন করেন। চলতি মাসের শুরুতে হঠাৎ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে ছাগলগুলো। কোনোটা দাঁড়াতে পারছিল না ও খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেয়। কিছু ছাগলের মুখ দিয়ে লালা ঝরতেও দেখা যায়।

তিনি বলেন, সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে ছাগলগুলোকে চিকিৎসা করান। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। পরে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা খামার পরিদর্শন করে পিপিআর টিকাসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধ দেন। কিন্তু একে একে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে তার খামারের ১০৫টি ছাগল মারা যায়। তিনটি ছাগল জবাই করেন। এতে করে তার খামার শূন্য হয়ে এখন মাত্র তিনটি ছাগল রয়েছে। এর মধ্যে দুটি ছাগল গর্ভবতী। ছাগলগুলোকে হারিয়ে এখন তিনি নিঃস্ব হয়ে গেছেন।

খামারি শহীদুল ইসলাম বলেন, মৃত ছাগলগুলোর মধ্যে দুটিকে ফেনীর আঞ্চলিক পশু হাসপাতালে নিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তে ছাগলের মধ্যে কোনো রোগের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। মারা যাওয়া ছাগলগুলোকে গর্ত করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
সোনাগাজী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নেবু লাল দত্ত বলেন, শীতকালে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে খামারি শহীদুল ইসলামের অনেক ছাগল মারা গেছে। তিনি সরেজমিনে গিয়ে খামারির সঙ্গে কথা বলে ওষুধ ও টিকা দিয়ে ছাগলগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু ছাগলের খামারটি খোলা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকায় ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ছাগলগুলো দ্রুত মারা গেছে। এ অবস্থায় বেঁচে থাকা অসুস্থ ছাগলগুলোকে খামারের ভেতরে রেখে ওষুধ ও খাবার খাওয়ানোসহ নিয়মিত পরিচর্যার জন্য খামারিকে পরামর্শ দিয়েছেন।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!