খেলা

তৃণমূলে থাকা তারুণ্যের শক্তি দেখাল জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড

<![CDATA[

দেশ গঠনে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে থাকা তৃণমূলের তরুণদের শক্তিকে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড দেয়ার মাধ্যমে সবাইকে সামনে এনে দিয়েছে ইয়াং বাংলা। ষষ্ঠবারের মতো হওয়া এ আয়োজনে শনিবার (১২ নভেম্বর) তারুণ্যের শক্তিতে উদ্ভাসিত হয়ে দেশ গঠনে এগিয়ে যাওয়া বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) চেয়ারপার্সন সজীব ওয়াজেদ জয়।

সিআরআই’র অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলা’র নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিগত ৮ বছরে ৬ বার দেশ গঠনে এগিয়ে আসা তরুণদের হাতে তুলে দেয়া হয় জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। দেশ গঠনে সবাইকে সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিজয়ী তরুণ-তরুণীরা।

ইয়াং বাংলা জানায়, সারা দেশ থেকে আবেদন করা দেশ গঠনে এগিয়ে আসা তরুণদের ৬০০টিরও বেশি সংগঠন থেকে যাচাই-বাছাই শেষে শীর্ষ ১০ তরুণ সংগঠনের হাতে ওঠে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড। এ বছর ৫টি ক্যাটাগরির প্রতিটিতে দুটি করে ১০টি সংগঠনকে এ পুরস্কার দেয়া হয়। এছাড়া দেশের জন্য বিশেষ অবদান রাখায় দুই জন পেয়েছেন আজীবন সম্মাননা অ্যাওয়ার্ড। এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিআরআই ট্রাস্টি নসরুল হামিদ বিপু।

কৃত্রিম হাত তৈরি ও প্রতিস্থাপনের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন রোবোলাইফ টেকনোলজিস। ২০১৮ সালে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের সহযোগিতায় এ সংগঠন যাত্রা শুরু করে। শুরুতেই তারা দুর্ঘটনা বা যেকোনও কারণে হাত হারানো ব্যক্তিদের কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপন করা শুরু করে। এভাবে অন্তত ২০ জনকে সহযোগিতা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে তারা ৩০ হাজার টাকায় কৃত্রিম হাত প্রতিস্থাপন করছে ও এর খরচ কমিয়ে আনতে চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে সৌদি আরব ও তুরস্কে বেশ কিছু কৃত্রিম হাত রফতানিও করেছে এই প্রতিষ্ঠান।

আরও পড়ুন: তরুণদের মেধা-পরিশ্রমে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ: জয়

রোবোলাইফ টেকনোলজিসের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জয় বড়ুয়া লাবলু বলেন, এ পুরস্কার আমাদের আরও সামনে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা জোগাবে। বাংলাদেশে যে হাত-পা বিহীন মানুষ আছে, তাদের জন্য এই রোবোটিক অঙ্গ দৈনন্দিন কাজ সম্পন্ন করতে সহায়তা করে। ভবিষ্যতে আরও কাজ করতে এই পুরস্কার আমাদের উৎসাহ দেবে।

পুরস্কারপ্রাপ্ত আরেক সংগঠন বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠন। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি জলবায়ু ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করে। তারা উপকূলীয় অঞ্চলের প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ বিশেষ করে নারীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে আসছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে ১৮ নারী নেত্রী তৈরি করেছে। ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের কারণে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি ৩০০ মিটার বাঁধ মেরামত করার জন্য তারা সফলভাবে স্থানীয় সরকারকে রাজি করেছিল। তারা নারীদের প্রতি সহিংসতা, যৌতুক, যৌন হয়রানি প্রতিরোধ এবং শিশু অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছে।

বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক জান্নাতুল মাওয়া বলেন, আমরা এক ঝাক তরুণ নারী বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে কাজ করি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সারা বিশ্বের কাছে এক গৌরব, যিনি দুর্যোগ হ্রাস ও ঝুঁকি কমাতে সারা বিশ্বের মডেল। তৃণমূল থেকে নারীরা যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছি, সেই জায়গা থেকে এবারের কপ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা যেন সুবিচার পাই। আজকের এই পুরস্কার আমি উৎসর্গ করছি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সব নারী এবং আমার সব সহযোদ্ধার প্রতি।

আরিয়ান আরিফ মজার ইশকুলের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক। ২০১৩ সালে পথশিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা দিতে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু। প্রাক-প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত ১ হাজার সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুকে বিনামূল্যে শিক্ষা দিচ্ছে এই প্রতিষ্ঠান। প্রায় ১০ বছর ধরে ১ হাজার সুবিধাবঞ্চিত পথশিশুদের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদান ও ঢাকায় ১০টি স্কুল পরিচালনা করছে তারা। বর্তমানে কারিগরি শিক্ষার জন্য একটি নতুন বিভাগ খোলার পরিকল্পনা করছে সংগঠনটি।

মজার ইশকুলের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আরিয়ান আরিফ বলেন, মজার স্কুলে মজাও হয় লেখাপড়াও হয়। কয়েকবছর আগে আমাদের স্কুলের ৪ জন সদস্য জেলে যাই এবং ৩ দিন রিমান্ডে ছিলাম। এছাড়া ৩৪ দিন জেলে ছিলাম। এই পুরস্কার সেসব তরুণদের জন্য, যারা অল্প বাধায় হাল ছেড়ে দেয়। কোনও বাধাই তরুণদের আটকে রাখতে পারে না, আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার জন্য। আমি এই পুরস্কার বাংলাদেশের পথশিশুদের উৎসর্গ করতে চাই।

আরও পড়ুন: ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার করেছিল বিএনপি-জামায়াত: জয়

অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের উদ্দেশে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমার বিশ্বাস আছে যে, আপনারাই বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করবেন। আর এটা আমাদের জীবদ্দশাতেই হবে। আমরা নিজেদের পরিশ্রম, মেধা দিয়ে আমাদের নিজেদের সমস্যা আমরা নিজেরাই সমাধান করবো। নিজের মধ্যে যদি আত্মবিশ্বাস ও দেশপ্রেম থাকে, তাহলে নিজের দেশের মানুষের জন্য সবকিছু করা সম্ভব। নিজের মধ্যে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনা যদি না থাকে, তাহলে দেশের ভালো কীভাবে চাইতে পারি।

এর আগে ইয়াং বাংলার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়- এই অ্যাওয়ার্ডের জন্য শীর্ষ ২৮ মনোনীত সংগঠনের নাম। এ তালিকায় প্রকাশিত সব সংগঠনকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সিআরআই ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

ইয়াং বাংলা জানায়, সজীব ওয়াজেদ জয় দেশ গঠনে এগিয়ে আসা তরুণদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন তারুণ্যের সর্ববৃহৎ প্লাটফর্ম ইয়াং বাংলা। তরুণদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে এবং দেশ গঠনে এগিয়ে আসতে জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড, জয় বাংলা কনসার্ট, পলিসি ক্যাফে সহ তরুণদের কাছে জনপ্রিয় নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে ইয়াং বাংলা। এক লাখের বেশি তরুণ নিয়ে তৈরি ইয়াং বাংলার নেটওয়ার্ক। ‘কানেক্টিং দ্য ডটস’ স্লোগান নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইয়াং বাংলা বর্তমানে তারুণ্যের সবচাইতে বড় প্ল্যাটফর্ম। ১৫ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবী এবং ৫০০টির বেশি সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে ইয়াং বাংলার পথচলা।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!