বিনোদন

দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে ঢাকা

<![CDATA[

জনবহুল শহর ঢাকা বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে। রোববার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর রেকর্ড করা হয়েছে ২৭৮, যা বাতাসের মান ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বলে নির্দেশ করছে।

এ তালিকায় ২৭৪ একিউআই স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে পাকিস্তানের লাহোর এবং ২৫৬ স্কোর নিয়ে ভারতের দিল্লি তৃতীয় স্থানে রয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ার এ তালিকা প্রকাশ করেছে।

একিউআই স্কোর ১০০ থেকে ২০০ পর্যন্ত ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয় বিশেষ করে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য। 

একইভাবে একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচিত হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।

প্রতিদিনের বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটুকু নির্মল বা দূষিত সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং তাদের জন্য কোন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে তা জানায়।

আরও পড়ুন: বায়ুদূষণে প্রতি বছর ৬৭ লাখ মানুষের মৃত্যু

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে – বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২ দশমিক ৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

মেগাসিটি ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে ভুগছে বায়ু দূষণে। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

২০১৯ সালের মার্চ মাসে পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ঢাকার বায়ু দূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো: ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।

বর্তমানে শীত আসার সঙ্গে সঙ্গে, নির্মাণ কাজ, রাস্তার ধুলা ও অন্যান্য উৎস থেকে দূষিত কণার ব্যাপক নিঃসরণের কারণে ঢাকা শহরের বাতাসের গুণমান দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে।

বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার সম্প্রতি সময় সংবাদকে জানান, শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় বাতাসে ধুলোর পরিমাণ বাড়ে। সেক্ষেত্রে নির্মাণ প্রকল্প আর যানবাহনের ধোয়াই এটি বাড়ার প্রধান কারণ।

আরও পড়ুন: চলতি মাসে রাজধানীতে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে দ্বিগুণ

তিনি আরও বলেন, যে মানমাত্রা রয়েছে পরিবেশ অধিদফতর থেকে সেটি হলো ৬৫ মাইক্রোগ্রাম; তার প্রায় তিনগুণের বেশি রয়েছে ঢাকা শহরের বায়ুমানে ধুলো। ঢাকা শহরের এরকম একটি কেন্দ্রে (বেইলি রোড) আমরা এ পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি। মূলত যেখানে নির্মাণকাজ এবং ইটের ভাটা রয়েছে সেখানে দুষণের মাত্রা দ্বিগুণ। মূলত চলতি মাসেই রাজধানীতে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়েছে দ্বিগুণ।

এ মৌসুমে বৃষ্টি না থাকায় পুরো সময়টাতেই থাকতে হয় কুয়াশা আর ধুলোর মিশেল ধোঁয়াশায় বলেও জানান তিনি।

নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, বড় বড় মেগাপ্রজেক্ট থেকে শুরু করে আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে যে ভবনগুলো তৈরি হচ্ছে বা রাস্তায় যে খোঁড়াখুঁড়ি হচ্ছে; সব জায়গাতে দেখা যাবে, কোথাও কোনো আচ্ছাদন নেই, পুরো কাজ হচ্ছে উন্মুক্তভাবে। সরকারকে অবশ্যই এটা স্বাস্থ্যঝুঁকি মনে করে ধুলো দূষণটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আর যারা মনিটরিংয়ে দায়িত্বে আছেন তাদেরও জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে হবে।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!