দেশের সবচেয়ে বড় বুদ্ধমূর্তি রাঙামাটিতে
<![CDATA[
রাঙামাটির দুর্গম উপজেলা জুরাছড়ি। সেখানে আড়াইশ ফুট পাহাড়ের ওপর সুবলং শাখা বনবিহার। চার পাশে সবুজে ঘেরা এই বিহারে দেশের সর্ববৃহৎ সিংহশর্য্যা বুদ্ধমূর্তির উদ্বোধন করা হয়।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকালে বুদ্ধগুরু প্রজ্ঞালংকার মহাথের এক মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই বুদ্ধমূর্তি উদ্বোধন করেন। এই পূর্ণানুষ্ঠানে যোগ দেন হাজারো পুণ্যার্থী। পরে দেশের জাতির কল্যাণে কামনা করে হয় বিশেষ প্রার্থনা।
দেশের বৃহৎ বুদ্ধ মূর্তি উদ্বোধন, তাই ভোর হতে পুণ্যার্থীরা সমাবেত হয় সুবলং বনবিহারে। ভান্তেদের পরেই সাদা পোশাকে ফুল হাতে ধীর পায়ে এগিয়ে চলে জুরাছড়িবাসী। পেছনেই বাহারি রঙের পিনন হাদি পড়ে সাধু ধ্বনি তুলে এগিয়ে চলে বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সাধারণ মানুষ। ১২৬ ফুট দৈর্ঘ্যের এই মূর্তির উচ্চতা ৬০ ফুট আর প্রস্থে ৪০ ফুট। এটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৪ কোটি টাকা। যা সম্পূর্ণ দানের টাকা তৈরি করা হয়েছে।
দীর্ঘ ৭ বছরব্যাপী চলে এই নির্মাণ কাজ। শত সাধনার পর এটি নির্মাণ করতে পরে খুশি বিহার কর্তৃপক্ষ ও পুণ্যার্থীরা। পুণ্যার্থীরা বলেন, এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে নিজেকে পূর্ণের ভাগীদার মনে করছি। সকলে সহায়তা করলে বিশাল কাজও শেষ করা যায় এই বুদ্ধমূর্তি তার বড় উদাহরণ।
সুবলং বিহার প্রধান পৃষ্ঠপোষক প্রবর্তক চাকমা বলেন, আজ আমাদের অত্যন্ত আনন্দের দিন। শত প্রতিকূলতা সত্যেও দীর্ঘ ৭ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমের বিনিময়ে আমরা এই বুদ্ধমূর্তিটি নির্মাণ কাজ শেষ করতে পেরেছি। পুণ্যার্থীদের স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এই কাজ শেষ হয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনা বিনিয়োগ পেতে বুদ্ধমূর্তি সংরক্ষণে নজর তালেবানের
তিনি আরও বলেন, এই শুধু পার্বত্য চট্টগ্রাম নয় সারা দেশের জন্য গর্বের। এই বিহারটি এখন বুদ্ধ ধর্মের তীর্থ ভূমি হিসাবে পরিচিত লাভ করবে। দেশ বিদেশ থেকে প্রচুর দর্শনার্থী এটি একনজর দেখতে আসবে। ফলে আমি বিশ্বাস করি জুরাছড়ির চেহারাই বদলে যাবে। গতি পাবে স্থানীয় অর্থনীতি।
সুবলং বিহার অধ্যক্ষ বুদ্ধশ্রী মহাথের বলেন, এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ ছিল। আমরা বনভান্তের স্মৃতিকে স্মরণ রাখতেই এটি নির্মাণ করেছি। সৎ কাজে সকলে পাশে থাকে। এটি বাংলাদেশর বৃহৎ বুদ্ধমূর্তি। এটির ফলে সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে।
রাঙামাটি বনবিহারে অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালংকার মহাথের বলেন, এই পূর্ণময় দিনে দেশ জাতি ও সারা বিশ্বের প্রাণীকূলের মঙ্গলার্থে প্রার্থনা করেছি। মানুষে মানুষে হিংসা বিভেদ ভুলে মৈত্রীময় বন্ধনে আবদ্ধ হোক। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক। সর্বপরি জগতের সকল প্রাণী সুখি হোক এই পূর্ণময় দিনে এটাই প্রত্যাশা করছি।
১২৬ ফুটের সিংহশর্য্যা বুদ্ধমূর্তি উদ্বোধন উপলক্ষে ৩ দিনব্যাপী চলবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানিকতা।
]]>