নারীদের উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধের প্রতিবাদে আফগান ছাত্রদের পরীক্ষা বর্জন
<![CDATA[
আফগানিস্তানে নারীদের উচ্চশিক্ষা নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করেছেন দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। ছাত্রীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে নানগারহার বিশ্ববিদ্যালয় ও কান্দাহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পরীক্ষায় বসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তালেবান সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন নানগারহার ও কান্দাহারের ছাত্ররাও।
মেট্রোর এক প্রতিবেদনমতে, বুধবার (২১ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিছু ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যাচ্ছে, নানগারহার বিশ্ববিদ্যালয় ও কান্দাহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে আসছেন। এ সময় ছাত্রদের অভিনন্দন জানিয়ে স্লোগান ও হাততালি দিতে দেখা যায় ছাত্রীদের।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের নিষিদ্ধ করে তালেবান সরকার। সরকারের উচ্চশিক্ষা বিষয়ক মন্ত্রীর পক্ষ থেকে জারি করা এক চিঠিতে এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আফগানিস্তানে নারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।
তালেবান সরকারের এ সিদ্ধান্তে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিস্মিত করেছে মুসলিম দেশগুলোকেও। তালেবানের এ সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। ঘোষণার এক দিন পর এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানায় মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম প্রধান রাজতান্ত্রিক দেশটি।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে নারীদের প্রতিবাদ, উদ্বেগ
এ সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্র। নারীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে পাকিস্তান, তুরস্ক ও কাতার। এএফপি জানায়, বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসগলু।
এক সংবাদ সম্মেলনে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নারী শিক্ষা নিষিদ্ধ করা ইসলামসম্মত কিংবা মানবিক কোনোটিই নয়। আমরা এ সিদ্ধান্ত সঠিক বলে মনে করি না। ইনশাআল্লাহ, তালেবান এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেবে।’
এখন থেকে এক বছরের কিছু বেশি আগে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ক্ষমতা দখলের পর আফগান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নারীদের জন্য আলাদা শ্রেণিকক্ষ ও প্রবেশপথ চালু করে তারা। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের শুধু নারী শিক্ষক বা বয়স্ক পুরুষ শিক্ষক পড়াতে পারতেন।
আরও পড়ুন: আশির দশকের আলোচিত ‘সিরিয়াল কিলার’ শোভরাজের মুক্তি
অবশেষে সেই সুযোগও বন্ধ করে দিল তালেবান সরকার। তালেবানের এ নিষেধাজ্ঞা শোনার পরই হতাশায় ভেঙে পড়েন আফগান নারীরা। বিবিসি জানায়, মঙ্গলবার ওই নিষেধাজ্ঞার পর রাজধানী কাবুলে এক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনেক ছাত্রীকে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে দেখা গেছে।
বিবিসি আরও জানায়, সাক্ষাৎকারে এক ছাত্রী বলেছেন, তিনি মনে করেন, তালেবান নারী ও নারীর শক্তিকে ভয় পায়। ওই ছাত্রী আরও বলেন, ‘আমাকে আমার ভবিষ্যতের সঙ্গে যুক্ত করতে পারত যে সেতুটি (শিক্ষা), সেটিই তারা (তালেবান) ধ্বংস করে দিয়েছে।’
]]>