খেলা

নিষেধাজ্ঞা শেষে রাতেই সাগরে ছুটেছেন জেলেরা

<![CDATA[

ইলিশ শিকারে ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে সমুদ্রে ছুটছেন বাগেরহাটের জেলেরা। মাছ ধরার জাল, বরফ, খাদ্যসামগ্রীসহ ট্রলারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুক্রবার দিবাগত রাতেই বঙ্গোপসাগরে রওনা দেন জেলার ১২ হাজার জেলে।

বাগেরহাট কেবি বাজার, কচুয়ার বগী, মোংলার জয়মনির ঘোল, মামার ঘাট, রামপালের শিকিরডাঙ্গা, শ্রীফলতলা, খেয়াঘাট, শরণখোলা রায়েন্দা, সাউথখালীসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় ১২ হাজার জেলে বঙ্গোপসাগরের মাছ আহরণে নিয়োজিত। ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে তাদের মাঝে।

এদিকে শুধু ইলিশ শিকারি জেলে নন, শনিবার (৩০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে বাগেরহাট থেকে বিভিন্ন এলাকার ৫ হাজারের বেশি জেলে শুঁটকি আহরণে রওনা দেবেন। সুন্দরবনের দুবলার চর, মাঝের কিল্লা, মেহের আলীর চর, নারকেল বাড়িয়া ও শেলার চরে প্রায় ছয় মাস অবস্থান করে শুঁটকি আহরণ করবেন এসব জেলে। নিষেধাজ্ঞার ফলে ইলিশের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য মাছও বেশি করে পাওয়া যাবে বলে আশা সমুদ্রগামী জেলেদের।

কেবি বাজারে ট্রলারে অপেক্ষারত বগা গ্রামের গাউস শেখ বলেন, ‘অবরোধ শুরুর পর থেকে এই দিনের অপেক্ষায় ছিলাম। স্ত্রী-সন্তান, পরিবার-পরিজনের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আসছি। রাতেই রওনা হব সমুদ্রে। আশা করি, এবার মাছ ভালো পাওয়া যাবে।’

আরও পড়ুন: ‘চোখে-মুখে উচ্ছ্বাস’ সাগরে যেতে মুখিয়ে সোনাগাজীর জেলেরা

একই গ্রামের তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে সাগরে মাছ ধরি। আগে তেমন নিষেধাজ্ঞা ছিল না। কয়েক বছর ধরে মাঝেমধ্যেই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে হয় আমাদের। এই সময়ে আমাদের সরকার সামান্য চাল দেয়, তাতে সংসার চলে না। সাগরে মাছ ধরার কারণে নিষেধাজ্ঞার সময়ে স্থানীয় কেউ কাজেও নেয় না। এই সময়ে চালের সঙ্গে সরকার যদি আমাদের কোনো কাজের ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে আমাদের মতো জেলেদের সংসার ভালোভাবে চলত।’

মা ইলিশের নিরাপদ প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৬ থেকে ২৮ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর বড়শিতে ধরা পড়ল মস্ত বড় চিতল

সমুদ্রগামী জেলেপল্লির সভাপতি শহিদ মল্লিক বলেন, ‘জীবনের ঝুঁকি, ঋণের বোঝাসহ নানান শঙ্কার মধ্য দিয়ে সাগরে মাছ আহরণ করি আমরা। অবরোধ চলাকালীন ধারদেনা করে জীবিকা নির্বাহ করতে হয়েছে। পাশাপাশি জাল-দড়িসহ অন্যান্য সরঞ্জাম প্রস্তুত করতে বেশ খরচ হয় আমাদের।’ এসবের জন্য সরকারি সহায়তা এবং সুদমুক্ত ঋণের দাবি করেন সমুদ্রগামী জেলেদের এই নেতা।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, নিষেধাজ্ঞার সময় জেলায় ইলিশ শিকারে জড়িত ১২ হাজার জেলেকে খাদ্যসহায়তা হিসেবে ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হয়েছে। ১২ হাজার ইলিশ জেলেসহ জেলায় মোট ৩২ হাজার ৬৯৪ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। নিবন্ধিত মাছ ধরার ট্রলার রয়েছে প্রায় ৫০০।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এএসএম রাসেল বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় এই ২২ দিন মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। এই সময়ে জেলেদের খাদ্যসহায়তা দেয়া হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ইলিশের আকার যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি পরিমাণও বেড়েছে। এতে রাষ্ট্রের যেমন লাভ হবে, তেমনি জেলেরাও লাভবান হবেন।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!