নেত্রকোনায় ওএমএসের চাল ফেরতের ঘটনায় তদন্ত কমিটি
<![CDATA[
নেত্রকোনার মদনে ওএমএসের চালের ট্রাক ফেরত দেয়ার ঘটনা মিল মালিক অস্বীকার করলেও মদন গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দাবি–মিলেই ফেরত দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) ওই ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানজিনা শাহরীন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত কমিটিকে আগামী দুই কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় সুবিধাভোগী, উপজেলা পরিষদ ও ডিলার সূত্রে জানা গেছে, ২৯ নভেম্বর বিকেলে উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের বারড়ী গ্রামের ডিলার বীর মুক্তিযোদ্ধা ছদ্দু মিয়ার গোডাউনে ৩৫৭ জন সুবিধাভোগীর চাল পাঠানো হয়েছে। পুষ্টি মিশ্রণ ছাড়াই পোকাযুক্ত চাল সরবরাহ করে ‘এ আর খান পাঠান অটো রাইস মিল’ নামের নেত্রকোনার একটি প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ইউএনওকে জানালে দ্রুত ট্রাক ভর্তি করে চাল নিয়ে চলে যান মদন গুদামের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা আবু সালেক। পরে চালের ট্রাক কোথায় ছিল সে বিষয়ে সঠিক তথ্য কেউ দিতে পারেনি। তবে পরদিন পুনরায় ডিলারের কাছ থেকে ফেরত নেয়া চাল আবারও পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ওই তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় ওএমএস-এর ৪৯০ বস্তা চাল উদ্ধার, আটক ২
এ ব্যাপারে মদন গুদামের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা আবু সালেক বলেন, ‘উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৮ জন ডিলার রয়েছেন। এ বছরের শেষ সময়ের চালের মধ্যে ডিলার ছদ্দু মিয়ার ৩৫৬ বস্তা চাল আমরা মিলারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। মিলাররাই চালে পুষ্টি মেশাবে এবং ডিলারের কাছেও পাঠাবে। সরকার এ জন্য বাড়তি খরচও দেবে। আমার বা আমাদের কাছে আর কোনো দায়িত্ব নেই। এটি সম্পূর্ণ মিলারের দায়িত্ব। মিলার গাড়ি ভাড়া করবে, বিলও উত্তোলন করবে। ডিও গেছে এভাবেই। কিন্তু ২৯ তারিখ ডিলারের এখান থেকে ফোন যায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে। তখন আমাকে পাঠানো হলে আমি গিয়ে দেখি কিছুটা অর্থাৎ সব কটি বস্তা দেখা সম্ভব নয়, তাই কয়েকটা দেখা হয়। বস্তায় খারাপ চাল পেয়েছি। আমি সঙ্গে সঙ্গে ট্রাকে তুলে পাঠিয়ে দিয়েছি। এটি মিলার বুঝবে। কিন্তু ডিলার আমাকে ফাঁসাতে চাইছে কেন বুঝতে পারছি না।’
আরও পড়ুন: ওএমএস কর্মসূচিতে আটা সংকট
এদিকে মিল মালিক এইচ আর খান পাঠান সাকী জানান, গোডাউনের চাল এগুলো। তার মিলের নয়। তারা এগুলোতে ৩ কেজি করে পুষ্টি মেশান। তিনি পাঠিয়ে দিয়েছেন লরিতে করে। পরে সেগুলো রাতে ট্রাক থেকে ডিলার না নামানোর কারণে সড়কে ট্রাকে চাল ভর্তি অবস্থায় রাখা সম্ভব নয়। তাই লরির চালগুলো আবার মদন উপজেলায় নিয়ে রাখে, নামানো হয়নি। পরদিন ওগুলোই নিয়ে গেছে। চালে কোনো সমস্যা নেই। পুষ্টি মেশালে কিছুটা বিবর্ণ দেখা যায়। আমি পুষ্টি ছাড়া কেন চাল দেব। ওই ডিলারকে আমি অতটা চিনিও না। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ওই ডিলার এই তথ্যটা দিয়েছে।’ এ সময় তিনি সাংবাদিককে লাঞ্চের অথবা চায়ের দাওয়াত দিয়েছেন বিষয়টি পরিষ্কার করার জন্য।
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির প্রধান কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘খাদ্যবান্ধন কর্মসূচির নিম্ন মানের চাল ফেরত নেয়ার ঘটনায় আমাকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমি যথাসময়ে প্রতিবেদন দাখিল করব।’
অন্যদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানজিনা শাহরীন বলেন, নিম্ন মানের চাল ফেরত নেয়ার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
]]>




