বিনোদন

নেপালে যেভাবে ঘটল মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা

<![CDATA[

নেপালের পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৭২ আরোহী নিয়ে ইয়েতি এয়ারলাইনসের একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে, রোববার (১৫ জানুয়ারি) সকালে ঘটা এ দুর্ঘটনায় বিমানটিতে থাকা সব আরোহী নিহত হয়েছেন। কিন্তু কীভাবে ঘটে গেল মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা?

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ইয়েতি এয়ারলাইনসের বিমানটি নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখারা বিমানবন্দরে যাচ্ছিল। কিন্তু অবতরণের সময় পোখারার পুরোনো বিমানবন্দর ও নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মধ্যবর্তী সেতি গন্দকি নদীতীরের বনভূমিতে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।  

বিমানবন্দরের পাশের একটি ভবন থেকে করা ভিডিওচিত্রে দেখা গেছে, ইয়েতি এয়ারলাইনসের বিমানটি মাঝ-আকাশেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিল এবং এর পরপরই বিধ্বস্ত হয়।

দেশটির সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের তথ্যানুসারে, কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় বিমানে যেতে সময় লাগে ২৫ মিনিটের মতো। কিন্তু উড্ডয়নের প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যে বিধ্বস্ত হয় যাত্রীবাহী ওই বিমান। এর পরপরই সেটিতে আগুন ধরে যায়।

আরও পড়ুন: নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ৬৮

তবে পোখারা বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের এক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, বিমানটি পোখারা বিমানবন্দরের রানওয়েতে ল্যান্ড করার মাত্র ১০ সেকেন্ড আগে বিধ্বস্ত হয়।

এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের ওই কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিকভাবে বিমানটির পাইলট বিমানবন্দরের পূর্ব প্রান্ত দিয়ে ল্যান্ড করার অনুমতি চান। তাকে অনুমতি দেয়াও হয়। কিন্তু একটু পরই পাইলট বিমানবন্দরের পশ্চিম প্রান্ত দিয়ে ল্যান্ড করার অনুমতি চান। এবারও তাকে অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু এবার ল্যান্ড করার মাত্র ১০ সেকেন্ড আগে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, দুর্ঘটনার সময় পোখারা ভ্যালির আবহাওয়া বিমান ল্যান্ডিংয়ের প্রতিকূল ছিল না। তারপরও কেন দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা। 

এ ঘটনায় নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দহল জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকেছেন। তিনি রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোকে উদ্ধারকাজে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন। 

এদিকে সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ৬৮ জন যাত্রী ও ৪ জন ক্রু নিয়ে ইয়েতি এয়ারলাইনসের বিমানটি কাঠমান্ডু থেকে পর্যটন অঞ্চল পোখারায় যাচ্ছিল। মোট ৭২ আরোহীর মধ্যে ১৫ জন ছিলেন বিদেশি। তবে তাদের মধ্যে কোনো বাংলাদেশি নেই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রধান বিক্রম গৌতম জানিয়েছেন, ৬৮ যাত্রীর মধ্যে ৫৩ জন নেপালি, পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রুশ, কোরীয় নাগরিক দুজন এবং অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, আর্জেন্টিনা ও ফরাসি নাগরিক ছিলেন একজন করে। কোনো বাংলাদেশি ওই বিমানে ছিলেন না।

আরও পড়ুন: ল্যান্ড করার ১০ সেকেন্ড আগে বিধ্বস্ত হয় নেপালের বিমানটি

পোখারার এ দুর্ঘটনা ভয়াবহতার বিচারে নেপালের ইতিহাসে গত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা।

এর আগে ২০১৮ সালের মার্চে বাংলাদেশের বেসরকারি বিমান পরিচালনাকারী সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের একটি বিমান কাঠমান্ডুতে বিধ্বস্ত হয়। ঢাকা থেকে কাঠমান্ডু যাওয়া ড্যাশ-৮ টার্বোপ্রপ বিমানটিতে মোট ৭১ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৫১ জনই ওই দুর্ঘটনায় নিহত হন। সেই ঘটনার প্রায় পাঁচ বছর পর পোখারায় আবারও ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা ঘটল।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!