নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে এক মাসে ৫২ শিশুর মৃত্যু
<![CDATA[
শীতের তীব্রতার সঙ্গে নোয়াখালীতে বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগ। এতে বয়স্কদের তুলনায় শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে গত এক মাসে ৫২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে, যার অধিকাংশই ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছিল।
শনিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে সরেজমিন বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, ডায়রিয়া ও শিশু ওয়ার্ড রোগীতে পূর্ণ। তৃতীয় তলার শিশু ওয়ার্ডে ঠান্ডাজনিত অসুস্থতার কারণে ভর্তি করা হয়েছে চার মাস বয়সী শিশু ফাহিমকে। পার্শ্ববর্তী জেলা লক্ষ্মীপুরের মৌলভীরহাট থেকে আসা ফুটফুটে শিশু ফাহিমের নিউমোনিয়া হয়েছে বলে হাসপাতালের রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা যায়। রক্তে অক্সিজেনের লেভেল কম থাকায় নেবুলাইজেশন করে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
একই ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা আড়াই বছর বয়সী শিশু মাহবুবুর রহমানের মা খালেদা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলের জন্মগতভাবে ঠান্ডাজনিত রোগের সমস্যা। গত মাসে তার জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে এখানে ১৬ দিন ভর্তি ছিলাম। তারপর অনেকটা সুস্থ হলে আমরা বাড়ি নিয়ে যাই। বাড়িতে গিয়ে ৭ দিনের মাথায় আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে এখানে ভর্তি করাই।’
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তি ৫০০, শিশু ৪০০
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, গত মাসে হাসপাতালে বিভিন্ন রোগে শিশু-বৃদ্ধসহ মোট ১৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে ০ থেকে ৪ বছর বয়সী ৫১ জন এবং ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী ১ শিশু রয়েছে। এ ছাড়া ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে ৪৬ জন রয়েছে। এদের অধিকাংশই ঠান্ডাজনিতসহ বিভিন্ন রোগে মৃত্যু হয়েছে।
শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স আকলিমা আক্তার বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি সব রোগীকে সমান সেবা দিতে। শিশুদের সেবা দিতে আরও বেশি সময় প্রয়োজন হয়। তবে আমাদের নার্স সংকটের কারণে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়।’
আরও পড়ুন: হাসপাতালে রোগীর ভিড়, চিকিৎসাসেবা ব্যাহত
হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালট্যান্ট ডা. ইয়াকুব আলী মুন্সি বলেন, শীতের শুরু থেকে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। শিশুদের ভর্তি করানোর পরপরই আমরা তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে থাকি। অধিকাংশ শিশুই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যায়। তবে শীতকালে শিশুদের অভিভাবকদের অবশ্যই সচেতন হতে হবে, যাতে তাদের গায়ে ঠান্ডা না লাগে।’
শিশু ওয়ার্ডে জনবল সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘এ হাসপাতালে অনেক রোগীর সেবা দিতে হয়। এত রোগী সামাল দিতে স্বাভাবিকভাবেই আমাদের ডাক্তার, নার্স ও প্রয়োজনীয় জনবল আরও প্রয়োজন।’
]]>