নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট প্রত্যাহার
<![CDATA[
মালবাহী ও যাত্রীবাহী – সব ধরনের নৌযান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণসহ ১০ দফা দাবিতে দেশব্যাপী ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। সোমবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল ৫টা থেকেই যাত্রী ও পণ্যবাহী সব নৌযান চলাচল শুরু হবে।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে শ্রম ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
প্রতিমন্ত্রী এসময় বলেন, তৃতীয় একটি মহল শ্রমিকদের ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা করিয়েছে।
দ্বিতীয় দিনের মতো সোমবারও (২৮ নভেম্বর) ভোর থেকে দেশের সবকটি নৌবন্দরে বন্ধ ছিলো পণ্য খালাস ও উঠা-নামা। নৌযান শ্রমিকদের আরও ১২টি সংগঠন তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ কর্মবিরতিতে অংশ নেয়।
এর আগে রোববার (২৭ নভেম্বর) ভোর থেকে দেশের সবকটি নৌবন্দরে নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে এ কর্মসূচি শুরু হয়।
সাধারণ শ্রমিক ও নেতাদের অভিযোগ, শ্রমিকদের বর্তমান সর্বনিম্ন মজুরি ৭ হাজার ৭০০ টাকা ও মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ দুই লাখ টাকা নির্ধারণ রয়েছে। তবে তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মালিকপক্ষ বিভিন্ন সময়ে মজুরি ও মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধি করবে বলে বারবার আশ্বাস দিয়েও তা মেনে নিচ্ছেন না। বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কাছে দবি করা হলেও শ্রমিকদের ভারতের ল্যান্ডিং পাসও প্রদান করা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: চলছে নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘট, ক্ষতির মুখে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য
এ ছাড়া নৌপথে ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি বন্ধ, চট্টগ্রামের চরপাড়া ঘাটের ইজারা বাতিল, সারা দেশে সব নদীবন্দরের আশপাশে জাহাজ নোঙর করার নির্দিষ্ট স্থান পোতাশ্রয় নির্মাণ ও বালুবাহী নৌযান ইজারাদারদের হয়রানি বন্ধসহ সাত দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান শ্রমিকরা। অন্যথায় কর্মবিরতিসহ অনির্দিষ্টকালের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন নৌযান শ্রমিক সংগঠনের নেতারা।
বাংলাদেশ জাহাজি শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. সবুজ সিকদার সময় সংবাদকে বলেন, ২০১৫ সালে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির কথা ছিল। পাঁচ বছর মেয়াদ শেষে আরও ১৭ মাস পার হলেও মালিকপক্ষ ও সরকার এ ব্যাপারে আর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যার কারণে শ্রমিকরা কর্মবিরতি দিয়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছে। ১০ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি কর্মসূচি অনির্দিষ্টকালের জন্য চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
শ্রমিকদের ১০ দফা দাবি হলো: নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগপত্র দান, পরিচয়পত্র ও সার্ভিস বুক প্রদানসহ শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ, খাদ্য ভাতা ও সমুদ্র ভাতার সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ও নাবিক কল্যাণ তহবিল গঠন করা, দুর্ঘটনা ও কর্মস্থলে মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ ১০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা, চট্টগ্রাম থেকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল সরবরাহে দেশের স্বার্থবিরোধী অপরিণামদর্শী প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রম বন্ধ করা, বালুবাহী বাল্কহেড ও ড্রেজারের রাত্রিকালীন চলাচলের ওপর ঢালাও নিষেধাজ্ঞা শিথিলকরণ, নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতি বন্ধ, ভারতগামী শ্রমিকদের ল্যান্ডিং পাস দেয়াসহ ভারতীয় সীমানায় সব ধরনের হয়রানি বন্ধ করা, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন নীতিমালা শতভাগ কার্যকর করে সকল লাইটার জাহাজকে সিরিয়াল মোতাবেক চলাচলে বাধ্য করা, চরপাড়া ঘাটে ইজারা বাতিল ও নৌ-পরিবহন অধিদফতরের সব ধরনের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা বন্ধ করা।
]]>