নাছির ইউ মাহমুদ ও অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ।
ঢালিউডের আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলার প্রধান আসামি নাছির ইউ মাহমুদ ও অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে নাছির উদ্দিন নামে এই ব্যবসায়ী কে তার উত্তরার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদেরও একই স্থান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সময় নিউজকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ।
এসময় নাছির উদ্দিনের বাসা থেকে মাদক উদ্ধারও করা হয় বলে জানায় পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতদের সবাইকে ঢাকার মিন্টোরোডে গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে সকালে ব্যবসায়ী নাছির মাহমুদসহ ছয়জনকে আসামি করে সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন পরীমনি।
রোববার (১৩ জুন) রাত পৌনে ১১টার দিকে বনানীর নিজ বাসায় ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন পরীমনি। তার আগে পরীমনির একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস ঘিরে মুহূর্তেই তোলপাড় হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে পরীমনি অভিযোগ করেন, বুধবার রাতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। ঘটনার বিচার চেয়ে থানায় গেলেও সহযোগিতা না করে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনায় চার দিন ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে সহযোগিতা চেয়ে না পেয়ে ফেসবুকের শরণাপন্ন হন পরীমনি। যদিও তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না বলে তার অভিযোগ গ্রহণ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরে আহম মিয়া।
সময় নিউজকে তিনি বলেন, ডিউটি অফিসারের কাছে পরীমনি যখন আসেন তখন তিনি স্বাভাবিক অবস্থায় ছিলেন না। এ অবস্থায় কারো অভিযোগ নেওয়া সম্ভব নয়। তখন আমাদের টিম তাকে হাসপাতাল পর্যন্ত দিয়ে আসে। তিনি সুস্থ হয়ে আমাদের সঙ্গে আর যোগাযোগ করেননি। কোনো অভিযোগ দিতেও আসেননি।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে পরীমনি বলেন, তিনি যদি মারা যান তবে দায়ী থাকবেন অভিযুক্ত ব্যক্তি।
পরীমনি বলেন, আমাকে জোর করে ওয়াশরুমে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। সে নাকি বেনজীর আহমেদের বন্ধু। কাছের মানুষ। আমাকে সে বলে- ‘বেনজীর কি তোর বাপ লাগে? পারলে তোর বাপকে ডাক। তোকে তিন টুকরা করে নদীতে ভাসায় দেব’।
পরীমনি আরও বলেন, উনার নাম নাছির ইউ মাহমুদ, বোট ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট। আমি তাকে চিনিই না। ওই দিনই আমার সঙ্গে প্রথম দেখা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে পুরো সময় পাশে ছিলেন নাট্য নির্মাতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী। দুঃসহ স্মৃতি কাটিয়ে যেন পরীমনি ঘুরে দাঁড়াতে পারে সেজন্য সবার সহযোগিতা চান তিনি।
তিনি বলেন, পরীর মুখে আপনারা যা শুনেছেন। আমিও আজ তাই শুনেছি। সে যেহেতু বিচার চেয়েছে, অবশ্যই এর বিচার হওয়া উচিত। পরীমনি আমাদের দেশের সম্পদ। ওর পাশে থাকা উচিত আমাদের সবার।
এদিকে সোমবার সকালে পরীমনির অভিযোগ লিখিত আকারে গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মিরপুর জোনের উপকমিশনার আ স ম মাহতাবদ্দিন।