পাকিস্তানে বিদ্যুৎ বিপর্যয়, নেপথ্যে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট
<![CDATA[
পাকিস্তানে দীর্ঘদিন অর্থনৈতিক ও বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের লক্ষণ হিসেবেই সাম্প্রতিক দেশব্যাপী বিদ্যুৎ বিপর্যয় হয়েছে। জ্বালানি খাতের জন্য তেল কেনার পর্যাপ্ত অর্থও যে দেশটির কাছে নেই তার উদারহণ হলো এই বিদ্যুৎ বিপর্যয়। খবর নিক্কেই এশিয়া।
নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানে ডলারের দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি অর্থনীতি জুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে এবং চলতি সপ্তাহে দেশব্যাপী বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দেয়। এর মাধ্যমে দেশটির জ্বালানিখাতে করা ভুলের সামান্যই সামনে এসেছে।
দেশটির সরকার বলেছে, ১৬ ঘণ্টা স্থায়ী হওয়া এই বিপর্যয় সরবরাহ ব্যবস্থার প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে হয়েছিল। তবে দেশটির এক ফেডারেল কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, জ্বালানি সরবরাহ হ্রাসের সঙ্গে পরোক্ষভাবে এই বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের সম্পর্ক রয়েছে।
ওই কর্মকর্তার সংবাদমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি নেই। তাই নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেছেন, তেল সাশ্রয়ের জন্য সরকার রাতে বিদ্যুকেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেয়। পরদিন যখন তারা বিদ্যুকেন্দ্র চালু করার চেষ্টা করে তখন বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বিভ্রাট দেখা দেয় এবং ওই সংকটজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়।
বিদ্যুৎ সরবরাহকারীরা এবং কিছু কর্মকর্তা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট পাকিস্তানকে তেল সংকটের দিকে নিয়ে গেছে।
দেশটির তেল শোধনাগার, বিপণন ও পাইপলাইন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিত্ব করা সংস্থা দ্য ওয়েল কোম্পানিজ অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল গত ১৩ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি দিয়েছে।
চিঠিতে সংস্থাটি পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানিতে শিল্প মালিকদের ঋণপত্র খোলার সমস্যাগুলো তুলে ধরেছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, যদি সময় মতো এলসি খোলা না যায় তাহলে পেট্রোলিয়াম পণ্যের আমদানিতে ব্যাপক প্রভাব পড়বে, যার ফলে দেশে জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এতে আরও বলা হয়, একবার সরবরাহ লাইনে বিঘ্ন হলে এটি স্বাভাবিক করতে ছয় থেকে আট সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
চিঠিতে আরও জানানো হয়, পাকিস্তানকে প্রতি মাসে প্রায় চার লাখ ৩০ হাজার মেট্রিক টন পেট্রোল, দুই লাখ টন হাই-স্পিড ডিজেল এবং ছয় লাখ ৫০ হাজার টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে হয়। যার মোট খরচ প্রায় ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এদিকে দেশটির তেল ও গ্যাস নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ (ওজিআরএ) জ্বালানি নিয়ে এ উদ্বেগ তেমন একটা পাত্তা দিচ্ছে না। সংস্থাটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, ১৮ দিন চাহিদা মেটানোর মতো গ্যাসোলিন এবং ৩৭ দিন চাহিদা মেটানোর মতো ডিজেল দেশে মজুত রয়েছে।
তবে ওই ফেডারেল কর্মকর্তার মতে, তেলের মজুত খুবই বিপজ্জনকভাবে নিচে নেমে গেছে।
চলমান পরিস্থিতি এই আশঙ্কা তৈরি করেছে যে, দক্ষিণ এশিয়ার ছোট প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিতে পড়তে পারে পাকিস্তান।
]]>