প্রথমবার হাকালুকি হাওড়ে সরিষার বাম্পার ফলন
<![CDATA[
দেশের বৃহত্তম হাকালুকি হাওড় পাড়ের (বড়লেখা, জুড়ি ও কুলাউড়া) তিন উপজেলায় বছরের পর বছর পড়ে থাকা প্রায় সাড়ে সাতশো হেক্টর অনাবাদী জমিতে এবারেই প্রথম সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। চাষের শুরুতে অনুকূল পরিবেশ থাকায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে।
সবুজের বুকে হলুদের মাখামাখি। এ যেন হলুদ গালিচায় মোড়ানো বিস্তৃত প্রান্তর। যে দিকে চোখ যাবে, শুধুই হলুদ রাঙ্গানো পথ। হাওড় হাকালুকির বুক জুড়ে এখন এমনই দৃশ্যে যে কারো মন কেড়ে নেবে।
শুষ্ক মৌসুমে দেশের বৃহত্তম হাকালুকি হাওড়ের পানি নেমে গেলে হাওড় পাড়ে মাঠের পর মাঠ জমি এমনিতেই অনাবাদী ফাঁকা পড়ে থাকে। বছরের পর বছর এসব জমিতে কোনো ফসল চাষাবাদ হয় না।
কৃষি বিভাগের একক প্রচেষ্টায় হাওড় পাড়ের চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হয় চাষাবাদের জন্য। আর তাই এ বছর চাষিরা হাকালুকির পরিত্যক্ত সাড়ে সাতশো হেক্টর জমিতে চাষাবাদ করেন। বিনামূল্যে সার ও বীজ পেয়ে বড়লেখা, কুলাউড়া ও জুড়ি এ তিন উপজেলার প্রায় এক হাজার পাঁচশো চাষি এবারই প্রথম সরিষা চাষাবাদে এগিয়ে আসেন।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় ধানের সরবরাহ বাড়লেও মিলছে না কাঙ্ক্ষিত দাম
চাষিরা উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি সরিষা-১৪, ১৭ ও ১৮ এবং বীনা-৪ ও ৯ জাতের সরিষা চাষ করেন। এতে সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছর প্রতি হেক্টরে এক দশমিক দুই মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি উৎপাদন এলাকা বড়লেখার হাওড় পাড়। এ উপজেলার সোজানগর, তালিমপুর ও বর্ণি ইউনিয়নের পাঁচশো হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ করা হয়।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, সারা জেলার অনাবাদী দুই হাজার হেক্টর জমি এই প্রথম বারের মতো সরিষা চাষের আওতায় নিয়ে আসা হয়। আর এ বছর জেলায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত দুই হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। এবারে সরিষার ভালো ফলনে খুশি চাষিরাও।
বড়লেখা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবল সরকার জানান, বিনামূল্যে বীজ সার ও কৃষকদের মধ্যে একাধিক উঠান বৈঠক করে সরিষা চাষে তাদের উদ্বুদ্ধ করা করা হয়। এতে হাওড় পাড়ের কৃষকরা সরিষা চাষে এগিয়ে আসে। ফলে তারা কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে হাওড়ের পতিত জমিতে সরিষা চাষ করে।
আরও পড়ুন: বুড়িমারী বন্দরে কমেছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য
এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের কথা জানিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, আগামী বছরেও কৃষক অধিক আগ্রহ নিয়ে সরিষা চাষে এগিয়ে আসবে। এতে জেলায় ক্রমান্বয়ে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে এ জেলার ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে।
কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, এ বছর মৌলভীবাজার জেলায় ২ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও অর্জিত হয়েছে ৪ হাজার ৭৫০ হেক্টর। আর উৎপাদন হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন।
]]>