প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি থাকা উচিত নয়: দীপংকর তালুকদার
<![CDATA[
রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার বলেন, ‘আমি যেহেতু আওয়ামী লীগ করি, তাই আমি চাইতে পারি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ করুক। কিন্তু আমি মনে করি, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি থাকা উচিত নয়। আর আপনারাও কোনো রাজনৈতিক কর্মী তৈরি করার জন্য শিক্ষকতা করবেন না। শিক্ষকতা করবেন ভালো ও সৎ মানুষ গড়ে তোলার জন্য।’
শনিবার (২৬ নভেম্বর) রাঙামাটিতে ৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শিক্ষকদের জাতীয়করণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দীপংকর তালুকদার আরও বলেন, পূজনীয় বনভান্তে বলেছিলেন, রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ হবে। এটা বলার অনেক বছর পর প্রধানমন্ত্রী রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন। কিন্তু একটি গোষ্ঠী এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো উদ্বোধন হওয়ার সময় বাধা দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ইচ্ছার
ফলে রাঙামাটিবাসী এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পেয়েছে।
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহ জাতীয়করণ করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে শনিবার সকালে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নাছরিন
সুলতানা, জেলা পরিষদের সদস্য অংসুছাইন চৌধুরী, প্রিয়নন্দন চাকমা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ।
আরও পড়ুন: রাঙামাটির পর্যটনশিল্পে নতুন বাঁক
এ সময় বক্তারা বলেন, পাহাড়ের প্রতিটি বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী চিন্তা করেন। পাহাড়ে চিকিৎসাসেবা উন্নত করতে মেডিকেল কলেজ এবং উচ্চশিক্ষার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে পাহাড়ের দুর্গম এলাকায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখার সুযোগ পাবে। আপনাদের (শিক্ষক) হাত ধরে জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো এক একটি মডেল বিদ্যালয় হয়ে উঠবে এমনটি প্রত্যাশা করি। আপনারা শিশুদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখবেন।
জেলা পরিষদের সদস্য অংসুছাইন চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আপনাদের স্কুল সরকারি হয়েছে বলে মাঠেঘাটে মিছিল করতে হবে না। কিন্তু জননেত্রী দেশকে যেভাবে এগিয়ে নিতে চান তার সব কাজে সহযোগিতা করতে হবে। একই সঙ্গে পাহাড়ে নির্বাচন আসলে অবৈধ অস্ত্রধারীরা ভোট ডাকাতি করে। সে ভোট ডাকাতি আপনাদের প্রতিহত করতে হবে।
রাঙামাটি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরীর বলেন, ‘পাহাড়ে শান্তির জন্য শান্তিচুক্তি করা হয়েছে। ফলে জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদের সৃষ্টি হয়েছে। পাহাড়ের ছেলে-মেয়েদের চাকরির জন্য জেলার বাহিরে কম যেতে হয়। এ ছাড়াও নানা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে পাহাড়ের স্থানীয় নাগরিকরা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প নেই। তা ছাড়া রাঙামাটিতে যেভাবে উন্নয়ন হচ্ছে, তা আওয়ামী লীগ সরকার ছাড়া সম্ভব নয়। আগামী নির্বাচনে পোলিং অফিসার হিসেবে আপনাদেরও দায়িত্ব পালন করতে হবে। তখন নিরপেক্ষভাবে ভোট প্রদানে জনগণকে সহায়তা করবেন। আপনারা জানেন দুর্গম এলাকায় অবৈধ অস্ত্রধারীরা ব্যালট ছিনিয়ে নিয়ে ভোট বাক্সে ভরে দেয়। এমন অপকর্ম যাতে করতে না পারে, সে ব্যবস্থা নেবেন।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর জন্য ৭টি জাতিগোষ্ঠীর পরিচয় বহনকারী সাত সেট বস্ত্র উপহার হিসেবে দেয়া হয়।
]]>