Feni (ফেনী)ফুলগাজী

ফুলগাজীতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাস্তা পাকাকরণে অনিয়মের অভিযোগ: বালুর বদলে মাটি, কাজ বন্ধের নির্দেশ

ফুলগাজী | তারিখঃ November 17th, 2022 | নিউজ টি পড়া হয়েছেঃ 401 বার

ফুলগাজী প্রতিনিধি->>

ফুলগাজীর আমজাদহাট ইউনিয়নের উত্তর তারাকুছায় হাজী আব্দুল মান্নান সড়ক। প্রায় ৭০০ মিটার এ রাস্তা পাকাকরণে অনিয়মের অভিযোগে ইতোমধ্যে দুই দফা কাজ বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

দপ্তরের তথ্যমতে, গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৫০ লাখ ২৭ হাজার টাকা রাস্তাটির পাকাকরণে বরাদ্দ দিয়ে কার্যাদেশ দেয় এলজিইডি। কাজটি করছেন ফুলগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম।

স্থানীয় বাসিন্দা আলী নেওয়াজ বলেন, নিজের প্রভাব খাটিয়ে এ সড়কের রাস্তা পাকাকরণের দায়িত্ব নেন ফুলগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম। কাজ পেয়ে নানা অনিয়ম, গাফেলতি, নি¤œমানের ইট ও নির্মাণ কাজে বালির পরিবর্তে ফসলী জমির মাটি ব্যবহার করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমজাদহাট বাজারের পাশে একটি ইটভাটার সামনে ফসলী জমি থেকে এসব মাটি কেটে রাস্তার নির্মাণ কাজের স্থানে নিয়ে আসা হয়েছে।

শরীফ নামে স্থানীয় এক যুবক বলেন, রাস্তার পাকাকরণের কাজ শুরু করে হঠাৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে মানুষের যোগাযোগে সমস্যার সৃষ্টি হয়। পরে এলাকার কয়েকজন যুবক মিলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল আলিম মজুমদারের কাছে গেলে তিনি দ্রæত কাজ শুরু হবে বলে আশ্বাস দেন। কিছুদিন পর এক সকালে কাজ শুরু করা হলেও দুপুরে অজানা কারণে আবার বন্ধ হয়ে যায়। এসব অনিয়ম স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা দেখেও না দেখার ভান করে চলছে।

কাজ বন্ধের নির্দেশনার কথা স্বীকার করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্মাণ কাজে নিয়োজিত দুই নারী শ্রমিক বলেন, প্রকৌশলী কাজ বন্ধ করে দেওয়ার একদিন পর সেলিম চেয়ারম্যান আমাদের আবার কাজে ফিরতে বলেছেন। এখন মাটি থেকে বালু আলাদা করার কাজ করছি।

স্থানীয় ব্যবসায়ী নূর নবী বলেন, বালি ও মাটি সেলিম চেয়ারম্যানের কাছে বিক্রি করেছি। তবে আমি বিক্রেতা, বিক্রি করেছি। তিনি কোথায় ব্যবহার করবেন তা আমার জানার বিষয় না।

সাবেক ইউপি সদস্য হাফেজ মেম্বার বলেন, এলাকায় একজন প্যারালাইজড রোগীর এ রাস্তা দিয়ে বাড়ি পৌঁছাতে সীমাহীন কষ্ট হয়। সেলিম চেয়ারম্যানকে ব্যক্তিগতভাবে অনুরোধ করেছিলাম রাস্তা সমান করে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কোন সহযোগিতা পাইনি।

আমজাদহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মীর হোসেন মীরু বলেন, রাস্তাটি আমার বাবার নামে করা হচ্ছে। বালির পরিবর্তে মাটি ব্যবহার এবং অন্যান্য অনিয়মের বিষয়ে কিছু জানা নেই। কাজ করছেন ঠিকাদার সেলিম। বিষয়টি তিনি ভালো বলতে পারবেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ফুলগাজী সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম বলেন, অনেক সময় কাজের সুবাদে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মালিক বাবুলের সাথে থাকি। এলাহী এন্টারপ্রাইজকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এলজিইডি সরাসরি আমার নাম বলতে পারবে না। এমন কিছু হলে তারা কাগজপত্রের মাধ্যমে প্রমাণ করুক।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সৈয়দ আসিফ মুহাম্মদ বলেন, নির্মাণ কাজে মাটি মিশ্রিত বালু ব্যবহার, নিয়মমাফিক দপ্তরকে অবগত না করা, নির্দেশনা থাকলেও কোনোধরনের পরীক্ষা প্রতিবেদন ছাড়া রাস্তাপাকাকরণ কাজ চালিয়ে নেওয়ায় সেলিম চেয়ারম্যানকে কাজ বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। আদেশ অমান্য করে তিনি আবার কাজ শুরু করলে উপ-সহকারি প্রকৌশলীকে পাঠিয়ে পুনরায় কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। জেলা কার্যালয়ও তাকে ত্রæটি সংশোধনপূর্বক লিখিত জবাব দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ফেনী’র নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আলী বলেন, উন্নয়ন কাজে অনিয়ম বা দুর্নীতির সুযোগ নেই। যেকোন অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!