ফেনীতে অবৈধ সিএনজি-অটোরিকশা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত
<![CDATA[
ফেনীতে সরকার দল ও পুলিশের নাম ভাঙিয়ে কতিপয় দুষ্কৃতকারীর টোকেন বাণিজ্যের আওতায় সব রেজিস্ট্রেশনবিহীন, মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি জব্দ ও ড্যাম্পিংয়ে ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে ফেনীর পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজীর উদ্যোগে ফেনীর সড়ক-মহাসড়কে পরিবহন চাঁদাবাজি ও যানজট নিরসনে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
এতে ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন, সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের পরিদর্শক মোহাম্মদ আনোয়ারুল আজিম, মহাসড়ক পুলিশ কর্মকর্তা, পরিবহন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মহাসড়কে শতাধিক অবৈধ ক্রসিং, ৪ মাসে নিহত ২০
ফেনী জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আলোচনায় উঠে আসে ফেনীতে রেজিস্ট্রেশন করা সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা ৯ হাজার ২০০। রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি অটোরিকশার সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। এসব রেজিস্ট্রেশনবিহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি-অটোরিকশাচালক কতিপয় দুষ্কৃতকারী, চাঁদাবাজ ও অসাধু পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে মাসিক ৫০০ টাকা হারে বিভিন্ন স্টিকার ও কার্ড নিয়ে শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ব্যবসায়ী সমিতির নামে চাঁদা নিয়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি শহরে রাস্তায় যত্রতত্র হকার, রিকশা ও ভ্যানে ক্ষুদ্র ব্যবসা বসিয়েছে। পৌরসভার ইজারাদারের রিসিট দিয়ে অলিগলি লাঠি বাহিনী চাঁদা তুলছে। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় উড়ালসেতুর নিচে বিশৃঙ্খলভাবে বাস দাঁড় করে যাত্রী ওঠানামা ও প্রকাশ্যে চাঁদা তোলা হচ্ছে। বিআরটিসির বাস তার নির্দিষ্ট স্থানে না দাঁড়িয়ে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি করছে।
এমন সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে দীর্ঘ আলোচনা শেষে সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়- সড়ক মহাসড়কে চাঁদাবাজি, টোকেন বাণিজ্য বন্ধে ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে রোববার (২৩ অক্টোবর) পর্যন্ত সময়সীমা দিয়ে মাইকিং করা, পরদিন সোমবার থেকে সাঁড়াশি অভিযান চালানো, ফেনী পৌরসভার ইজারাকৃত বাস ও সিএনজি স্ট্যান্ড দাউদপুর, হাসপাতাল মোড়, মদিনা বাসস্ট্যান্ড সংশ্লিষ্ট এলাকা ছাড়া সড়কে পরিবহন চাঁদাবাজ পেলে গ্রেফতার করা, মহাসড়কের মহিপাল এলাকায় রাস্তার ওপর বিআরটিসিসহ যেসব বাস যাত্রী ওঠানামা করবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া ও মহিপালে টিকিটের টংঘর উচ্ছেদ করা হবে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন কোনো সিএনজি অটোরিকশা শহরে চলাচল করতে দেয়া হবে না।
আরও পড়ুন: সিএনজি স্টেশন বন্ধ নিয়ে আসতে পারে নতুন সিদ্ধান্ত
পৌরসভা মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী বলেন, পরিবহন চাঁদাবাজি ও টোকেন বাণিজ্যের সঙ্গে পৌরসভা বা তার দলের কেউ জড়িত নয়। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেয়ার দাবি তারও। মহিপাল বাস টার্মিনাল সংস্কার ও অস্থায়ীভাবে বাস কাউন্টার করে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
ফেনীর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, পরিবহন চাঁদাবাজি ও টোকেন বাণিজ্যের সঙ্গে পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সভায় উপস্থিত সবাই শেষ পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ থাকলে ফেনীকে কেবল পরিবহন চাঁদাবাজি ও যানজট নিয়ন্ত্রণ নয়, বন্ধ করাও সম্ভব। পুলিশ আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করবে।
সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে চাহিদা অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি অটোরিকশা রেজিস্ট্রেশনের আওতায় নেয়ার উদ্যোগ নেবেন বলে জানান ফেনীর জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান।
]]>