ফের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করলেন মাহফুজ আনাম
<![CDATA[
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার সফলতার সঙ্গে ভারতের বিষয়ে নিজেদের দায়িত্ববোধ প্রমাণ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ।
বাংলাদেশের নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতকে দেয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা এবং ভারতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক ও গণমাধ্যমের ভূমিকা: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহফুজ আনাম বলেন, ‘আমি মনে করি এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং বাংলাদেশ তার প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছে। সমস্যা যতই গভীর হোক, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে বন্ধুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ জরুরি।’
তিনি বলেন, প্রায় ৫০টির বেশি নদী আমাদের দুই দেশের মাঝে রয়েছে। আমাদের সে নদী নিয়ে দুই দেশের মাঝে আলোচনায় আসা উচিত। যাতে করে দুই দেশের যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তা বজায় থাকে।
ভারত যে আমাদের বন্ধুপ্রিয় দেশ সে বিষয়েও মাহফুজ আনাম মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, ইন্দিরা গান্ধী যে বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন তা অতুলনীয়। আমরা সাংবাদিকরা অনেক সময় অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত হই। সেসব নিয়ে আলোচনা হতে পারে তবে এটাও ঠিক যে ভারতের জনগণ কীভাবে আমাদের শরণার্থীদের সাহায্য করেছেন তা আমি দেখেছি। আমাদের ব্যাপকতা কতটা গভীর তা আমি উপলব্ধি করেছি। এটাকে অস্বীকার করার উপায় নেই।
আরও পড়ুন: আবারও প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় মাহফুজ আনাম
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিষয়ে তিনি বলেন, আমি অনেকগুলো সমস্যা দেখি। এর মধ্যে তিনটি সমস্যাকে আমি তুলে ধরতে চাই। সিকিউরিটি, পানি বন্টন ও অর্থনৈতিক তারতম্য। এই তিনটি সমস্যার সমাধানে সরকারের পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদের এগিয়ে আসতে হবে। তিস্তার পানি বন্টন আমাদের জন্য একটি গভীর হতাশা। কুশিয়ারা নদী নিয়ে কাজ চললেও দীর্ঘ ১১ বছর ধরে তিস্তা নিয়ে কোনো সুরাহা এখনো হয়নি।
অর্থনৈতিক গ্রোথ নিয়ে মাহফুজ আনাম বলেন, ভারত বাংলাদেশে ৯ বিলিয়ন ডলার আমদানি করে। অপরদিকে বাংলাদেশ মাত্র ২ বিলিয়ন ডলার আমদানি করার সুযোগ পায়। এটা অনেক বড় পার্থক্য। এমনকি বাংলাদেশে এতো বিপুল পরিমাণ ডলার আমদানি করার পরও আমরা কতটুকু গুরুত্ব পাচ্ছি ভারতের কাছে সেটাও প্রশ্ন।
ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশের গুরুত্ব বিষয়ে মাহফুজ আনাম বলেন, ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেশি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের যে গুরুত্ব তা একদমই টের পাওয়া যায় না। ইকোনমিক গ্রোথ হিসেবে আমাদের যে অবস্থান তা ভারতের মিডিয়ায় খুব একটা আসে না। এতো এতো বছর পরও ভারত বাংলাদেশের যে গভীর সম্পর্ক আমি তা অনুধাবন করতে পারিনি এবং সন্তোষজনক পরিবর্তন হয়েছে বলেও মনে করি না। তাই আমার মনে হয়, দুই দেশের সাংবাদিকদের মধ্যে আরো বেশি সুসম্পর্ক তৈরি করা প্রয়োজন। সরকার হয়তো এক দৃষ্টিতে দেখবে কিন্তু সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ করবো যাতে তারা এক দৃষ্টিতে না দেখে সামগ্রিক বিষয়ে লক্ষ্য রাখেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মাহফুজ আনাম বলেন, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে আমাদের আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে হবে। আলোচনা করতে হবে।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমই পারে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সুসংহত করতে: স্পিকার
সাংবাদিকদের একাত্মতা করার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই দেশ সম্পর্কে জানতে সমন্বিতভাবে ইনিস্টিটিউট করতে হবে। যাতে স্বাধীন স্কলাররা দুই দেশ সম্পর্কে সকল বিষয়ে সঠিক ধারণা পায়।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে সেমিনারে ভিডিও বার্তায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পীকার শিরিন শারমিন চৌধুরী ও ভারতীয় সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি গীতার্থ পাঠক।
আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরীসহ প্রমুখ।
]]>




