বরাদ্দ সংকট: ৩ বছর ধরে বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনালের কাজ বন্ধ
<![CDATA[
অর্থের অভাবে গত সাড়ে চার বছরেও নির্মাণকাজ শেষ হয়নি বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনালের। ৭০ শতাংশ কাজ শেষে ভবনটি অবহেলায় পড়ে আছে। তিন বছর ধরে টার্মিনালের কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে ভবনটি অপরদিকে সেবাবঞ্চিত হচ্ছে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীরা। টার্মিনালের অভাবে সড়কে পরিবহন পার্কিংয়ে যানজটে পথচারীদের ভোগান্তি ও বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, নির্মাণকাজ শেষ করতে অর্থ বরাদ্দের আবেদন জানানো হয়েছে।
জানা যায়, বেনাপোল পৌরসভা অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পৌর বাস-ট্রাক টার্মিনাল, পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা ও দুই কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণের জন্য সরকারের কাছ থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রথমে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পায় পৌরসভা। পরে জমির দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে আরও ১০ কোটি টাকা চায় পৌরসভা।
ট্রাক টার্মিনাল, রাস্তা ও ড্রেনের কাজ শেষ হলেও বাস টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি পৌরসভা। পাঁচ একর জায়গায় বাস টার্মিনাল নির্মাণ করতে গিয়ে টাকা ফুরিয়ে যায়। তিন বছর ধরে কাজ বন্ধ। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, এখন আরও ১০ কোটি টাকা দরকার নির্মাণকাজ শেষ করতে।
দুই বছর আগে অর্থের জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। তবে এখনো পাওয়া যায়নি। এ পর্যন্ত বাস টার্মিনালে খরচ হয়েছে ৯ কোটি ৭৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।
বেনাপোল পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালের মে মাসে। এক বছরের মাথায় অর্থের অভাবে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এখন ভবনটি অবহেলায় পড়ে থাকায় ক্ষতি হতে থাকে ভাবনের নানান অংশ। গ্লাসগুলো ভেঙে ভেঙে পড়েছে। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বাস টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ করতে নানাভাবে অর্থ বরাদ্দের চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত হয়নি। এদিকে বাস টার্মিনালের অভাবে মহাসড়কের ওপর পার্কিং করা হচ্ছে বাস। এতে যানজট ও দুর্ঘটনা ঘটছে। সেবাবঞ্চিত হচ্ছেন আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটের দেশ-বিদেশের যাত্রীরা। দ্রুত বাস টার্মিনালটির নির্মাণকাজ শেষ করে যাত্রীসেবা নিশ্চিত করতে আহ্বান ভুক্তভোগীদের।
পাসপোর্টধারী যাত্রী রমেশ জানান, পৌর বাস টার্মিনাল ব্যবহার না হওয়ায় সেবাবঞ্চিত হচ্ছি। ভোর ৪টায় ঢাকা থেকে বাস পৌঁছায় বেনাপোল বন্দরে। কিন্তু বিশ্রামের কোনো জায়গা নেই। নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কায় থাকতে হয়।
আরও পড়ুন: সড়ক সংস্কারে দেয়া হলো এক-চতুর্থাংশেরও কম বরাদ্দ | বাংলাদেশ
বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট মালিক সমিতির সেক্রেটারি আজিম উদ্দীন গাজি জানান, ভারতগামী যাত্রীদের কাছ থেকে বছরে সরকারের প্রায় ১০০ কোটি টাকা ভ্রমণ খাতে আয় হয়। আমদানি বাণিজ্য থেকে আসে ৬ হাজার কোটি টাকা। বাস টার্মিনাল ব্যবহার না হওয়ায় যাত্রী ভোগান্তিও হচ্ছেই, বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও পণ্যপরিবহন ব্যাহত হয়।
সাবেক বেনাপোল পৌর প্যানেল মেয়র শাহাবুদ্দিন মন্টু বলেন, ‘ভারতগামী যাত্রীদের নিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন শতাধিক দূরপাল্লার বাস আসে বেনাপোলে। পৌর বাস টার্মিনালটি চালু হওয়া খুব জরুরি।
যশোর মিনিবাস মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুসলিম উদ্দীন পাপ্পু বলেন, ‘বাস টার্মিনাল চালু হলে সেখানে বাস রাখবে চালকরা। টার্মিনালটির নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে বাস সড়কে রাখতে হয়।’
বেনাপোল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোশারফ হোসেন জানান, পৌর বাস টার্মিনালটি নির্মাণকাজ শেষ করতে আরও ১০ কোটি টাকার প্রয়োজন রয়েছে। টাকা বরাদ্দ পেলে নির্মাণকাজ শেষ করা যাবে। অর্থের জন্য আবেদন পাঠানো হয়েছে।
]]>