বাণিজ্য

বাজার মূলধনে যোগ হলো ১১৪১ কোটি টাকা

ফ্লোর প্রাইস (সর্বনিম্ন সীমা) বাতিলের পর চলতি সপ্তাহজুড়ে পুঁজিবাজারে সূচকের উত্থানে লেনদেন হয়েছে। এতে সপ্তাহ ব্যবধানে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ১ হাজার ১৪১ কোটি টাকা।

পুঁজিবাজারের সাপ্তাহিক হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

 ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)
সপ্তাহ ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ০.১৫ শতাংশ বা ১ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। চলতি সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৫৬ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। আর গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এ মূলধন ছিল ৭ লাখ ৫৪ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা।
 
গত সপ্তাহের চেয়ে বেড়েছে ডিএসইর সব কটি সূচকও। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৭.৫৮ পয়েন্ট বা ০.৯৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ১৮০.৩৫ পয়েন্ট বা ২.৮৫ শতাংশ।
 
এদিকে ডিএসইএস সূচক বেড়েছে ১০.৬৪ পয়েন্ট বা ০.৭৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ৩৬.০১ পয়েন্ট বা ২.৫৯ শতাংশ। আর ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ২.১৭ পয়েন্ট বা ০.১০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমেছিল ১৫.১০ পয়েন্ট বা ০.৭১ শতাংশ।
 
তবে সূচকের এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার পরও ডিএসইতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৪ হাজার ৫৮৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয়েছিল ৪ হাজার ৮৫২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। লেনদেন কমেছে ২৬৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা বা ৫.৫১ শতাংশ।
 
এ ছাড়া প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৫.৫১ শতাংশ বা ৫৩ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। চলতি সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৯১৬ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছিল ৯৭০ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
 
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে ৪০৭টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৮২টি কোম্পানির, কমেছে ১৭৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪০টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
 
লেনদেনের শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ থাই অ্যালুমিনিয়াম। এ ছাড়া ওরিয়ন ইনফিউশন, ফু-ওয়াং ফুডস, খুলনা প্রিন্টিং এন্ড প্যাকেজিং, ইভিন্স টেক্সটাইল, কর্নফুলি ইন্সুরেন্স, আফতাব অটোমোবাইলস, মালেক স্পিনিং মিলস, খান ব্রাদার্স ও অলিম্পিক এক্সেসরিস ছিল শীর্ষ ১০টি প্রতিষ্ঠানের তালিকায়।
  

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)

 

অন্যদিকে সপ্তাহ ব্যবধানে দেশের অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই ও সিএসসিএক্স সূচক সমান ০.৪২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৭ হাজার ৬২৬.১২ পয়েন্টে ও ১০ হাজার ৫৫৫.২৩ পয়েন্টে। এ ছাড়া সিএসআই সূচক ১.০৭ শতাংশ, সিএসই-৩০ সূচক ০.৬৪ শতাংশ ও সিএসই-৫০ সূচক ০.৭৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ১৪২.৬৪ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ২৭৭.৪৭ পয়েন্টে ও ১ হাজার ২৫৯.৬৮ পয়েন্টে।
  
তবে সপ্তাহ ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। সপ্তাহজুড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা, আর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৯২ কোটি ৯৯ লাখ।
 
সপ্তাহজুড়ে সিএসইতে ৩৩৩টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫২টির, কমেছে ১৬২টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টি কোম্পানির শেয়ার দর।
 
এর আগে পুঁজিবাজারে কর্মচঞ্চলতা ফেরাতে গত ১৮ জানুয়ারি বেশিরভাগ শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস তুলে নিয়েছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। তবে ৩৫ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখা হয়েছিল। ২২ জানুয়ারি সেখান থেকে ২৩ টি প্রতিষ্ঠানের ফ্লোর প্রাইস বাতিল করেছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
 
বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সময় সংবাদকে জানান, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন ১২ প্রতিষ্ঠান বাদে বাকিগুলোর ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয়েছে। ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বাভাবিক সার্কিট ব্রেকার কার্যকর হবে। আর ফ্লোর প্রাইসের আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
 
ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার কারণে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং বাজারে গতি ফিরে আসবে বলেও আশা রেজাউল করিমের।
 
এর আগে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে শেয়াববাজারে সূচকের পতন ঠেকাতে ২০২১ সালের জুলাই শেষে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস ছিল বছরের ২৮ জুলাই ও তার আগের চার দিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড়।
 
তবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে ১৬৯টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হয়েছিল। পরে ২০২৩ সালের মার্চে আবার ১৬৯টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এরপর থেকে সব শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস ছিল। 

Show More

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!