বিনোদন

বিবিসির এ কেমন সাংবাদিকতা!

<![CDATA[

বিবিসি বাংলার কিছু পুরোনো নিউজ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২৬ আগস্ট বিবিসি বাংলার ওয়েবসাইটে দেখা গেছে, তাদের সর্বাধিক পঠিত প্রথম পাঁচটি নিউজের তিনটিই পুরোনো এবং সেগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকটনির্ভর।

শুধু ২৬ আগস্টই নয়, গত কয়েকদিন ধরে বিবিসি বাংলার সর্বাধিক পঠিত অংশে পুরোনো নিউজ জায়গা পাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ পাঠকের সামনে যখন কোনো নিউজ আসে, তারা ধরে নেন নিউজটি এখনকার। সেজন্য নিউজটি তারা পড়েন। নিউজ প্রকাশের তারিখ ও সময়ের দিকে লক্ষ্য করেন না। ফলে রি-শেয়ার নিউজের শিরোনাম, বিষয়বস্তু তাদের মনে ভিন্ন বার্তা দেয়।

বুস্টিংয়ের কারণে বিবিসি বাংলার পুরোনো অনেক নিউজ ফেসবুকে ঘুরপাক খাচ্ছে এবং সর্বাধিক পঠিত সংবাদে স্থান পাচ্ছে। সাইটটির পেজ ট্রান্সপারেন্সিতে ঢুকলে দেখা যাবে, শুধু ২১ সেপ্টেম্বর বিবিসি বাংলার ফেসবুক পেজে ১২টি নিউজ বুস্ট করা হয়েছে এবং সব পুরোনো। বুস্ট করা নিউজগুলোর মূল বিষয়বস্তু হলো, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংকট ও সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ নিয়ে।

গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো নিউজের প্রাসঙ্গিকতা দুই-তিন মাস পরে থাকার কথা নয়। কারণ সংবাদকে পচনশীল দ্রব্য হিসেবে বিবেচনা করা হয় (‘News a perishable commodity’)। যদি কোনো গণমাধ্যম পুরোনো নিউজ সামনে নিয়ে আসে, তাহলে তার আঁচ জনসাধারণের ওপর পড়বে এবং এ ধরনের প্রচারণা চালানো অবশ্যই উদ্দেশ্যমূলক।

২১ সেপ্টেম্বর বিবিসি বাংলার বুস্ট করা নিউজের শিরোনাম ও প্রকাশকাল-

‘চাইলেও বাচ্চাকে একটা ডিম খাওয়াতে পারছি না’ (০৩ আগস্ট, ২০২২)

রাত আটটায় দোকান বন্ধ করলে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে? (২০ জুন, ২০২২)

দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে আমিষ খাবারে কাটছাঁট নিম্ন আয়ের মানুষের (১৬ আগস্ট, ২০২২)

গ্যাস সংকট সম্পর্কে কী বলছে পেট্রোবাংলা, কতদিন চলবে (২১ জুলাই, ২০২২)

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট লাঘব হতে এ বছর পেরিয়ে যেতে পারে (২৪ জুলাই, ২০২২)

জীবনযাত্রার ব্যয়: সংকট থেকে উত্তরণের উপায় আছে কি? (২২ আগস্ট, ২০২২)

বেড়েই চলেছে ওষুধের দাম, বাড়তি চাপে সাধারণ মানুষ (১৮ আগস্ট, ২০২২)

রিজার্ভ নিয়ে কতটা সংকটে বাংলাদেশ, পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে? (২৩ জুলাই, ২০২২)

যে ৭ কৌশলে মূল্যবৃদ্ধির সাথে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে পারেন (১১ আগস্ট, ২০২২)

চাকরিজীবীরা চলছেন হিসেব কষে, কমাচ্ছেন জীবনযাত্রার মান (১৭ আগস্ট, ২০২২)

বাংলাদেশে কোন খাতের শ্রমিকের মজুরি সবচেয়ে বেশি (১ সেপ্টেম্বর, ২০২২)

বাংলাদেশে সার কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কৃষিতে কী প্রভাব পড়বে (২৪ জুলাই, ২০২২)

সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে এসেছে নতুন নিয়ম, লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা (৩০ জুলাই, ২০২২)

এ ছাড়াও সংবাদমাধ্যমটি গত ২২ আগস্ট তিনটি নিউজ বুস্ট করেছে। সেগুলোও ছিল দুই-তিন মাস আগের। এরমধ্যে বাংলাদেশের দুটি নিউজের শিরোনাম ও প্রকাশকাল-

রাত ৮টায় দোকানপাট বন্ধ করে দিলে কতটা বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে? (২০ জুন, ২০২২)

বাংলাদেশে জ্বালানি সংকট চলতে পারে শীত না আসা পর্যন্ত (১৯ জুলাই, ২০২২)

ফেসবুক বুস্ট বা স্পন্সর কী?

সাধারণভাবে কোনো নিউজ যত মানুষের কাছে পৌঁছাবে, তার থেকে বেশি কিংবা নির্দিষ্ট (টার্গেটেড) মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য ফেসবুক বুস্ট করা হয়।

এ বিষয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট নয়ন কুমার রুদ্র বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষের কাছে কন্টেন্ট বা নিউজ দুটি উপায়ে পৌঁছানো যায়। একটি হলো অর্গানিক রিচ, আরেকটি পেইড প্রমোশন। এই পেইড প্রমোশনকে বুস্ট বা স্পন্সর বলে। ফেসবুকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে একটি কন্টেন্টকে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছানোই হলো বুস্ট। সেক্ষেত্রে যত টাকা দিয়ে বুস্ট করা হবে, তত বেশি মানুষের কাছে কন্টেন্ট পৌঁছানো যাবে।

গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের সাংবাদিকতা বিভাগের প্রধান ও অধ্যাপক শেখ শফিউল ইসলাম বলেন, নিউ মিডিয়ার প্রতিযোগিতায় পড়েছে আমাদের মূলধারার মিডিয়া। প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য তারা নানা ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে। সেই কৌশলের একটি হলো নিউজ বুস্ট বা রিশেয়ার করা। এতে তাদের রাজস্ব আসে। কিন্তু এটি মনে রাখতে হবে, জনস্বার্থের বিরুদ্ধে কিংবা মানুষের মনে বিভ্রান্তি ছড়ায় কিংবা একপেশে সংবাদ অর্থাৎ উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ কখনও কোনোভাবে কাভার করা উচিত হবে না এবং সেগুলো পোস্টিং, রিপোস্টিং ও হোস্টিং করা উচিত নয়।

বুস্টের পেছনে বিবিসির উদ্দেশ্য কী?

জানতে চাইলে সিনিয়র সাংবাদিক কুদ্দুস আফ্রাদ বিবিসি বাংলার বুস্ট করাকে সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতার বিরোধী হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, বিবিসি বাংলা বুস্ট করতেই পারে, কিন্তু কখন, কোন নিউজ বুস্ট করা হচ্ছে, সেটির একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। বিবিসি যেসব নিউজ বুস্ট করেছে সেগুলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং তাদের লক্ষ্য স্পষ্ট।

কুদ্দুস আফ্রাদ মনে করেন, এমনো হতে পারে বিবিসির কাছে এই নিউজগুলো কেউ কিনে নিয়ে এগুলো বুস্ট করাচ্ছে। যদি এমন হয় এটিও গণমাধ্যমের যে চিরাচরিত নীতিমালা বা প্রথা সেটিও লঙ্ঘন হবে। এতে বিবিসির যে বাংলা ভাষাভাষী পাঠক, তাদের বিশ্বাসের জায়গা বা আস্থা নষ্ট হবে। যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীবিশেষ বিবিসির সঙ্গে এ ধরনের বুস্টিংয়ের চুক্তি করে থাকে, তাহলে হয়তো বিবিসির রাজস্ব আসবে। কিন্তু তাতে বিবিসি তথা গণমাধ্যম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

তিনি বলেন, গণমাধ্যম তো প্রাসঙ্গিক নিউজই করে থাকে। গণমাধ্যমে বহু পুরোনো নিউজ রয়েছে, যেগুলো ব্যক্তিগতভাবে যে কেউ শেয়ার করতে পারেন। কিন্তু গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষ যখন নিজেই এ কাজ করে, তার পেছনে অবশ্যই উদ্দেশ্য থাকে। বিবিসি তাদের বিশেষায়িত নিউজ ছড়িয়ে দিতেই পারে, সেক্ষেত্রে শুধু কিছু নিউজ বিশেষ সময়ে দেবে কেন? এর পেছনে তাদের অবশ্যই ইনটেনশন রয়েছে।

এ বিষয়ে সফটওয়্যার ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড সলিউশন এডটেক স্পেশালিস্ট ফারজানা কনা বলেন, অনেক সময় কোনো পেজ বা ব্র্যান্ডের কোনো হিট কন্টেন্ট আরও মানুষের কাছে পৌঁছাতে হলে আমরা ফেসবুক মার্কেটিংয়ের সাহায্যে পেইড প্রমোশন বা বুস্ট করে থাকি। ফলে কন্টেন্ট বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায় এবং রাজস্ব আসে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক শেখ শফিউল ইসলাম বলেন, বিবিসি যদি রাজস্ব আয় বাড়ানোর জন্য এটা করে থাকে, তাহলে তাদের একইসঙ্গে মনে রাখতে হবে, জনমনে যেন নেতিবাচক প্রভাব বা ভ্রান্ত ধারণা জন্ম না হয়। কারণ দেশে নির্বাচনের বাতাস বইছে। কাজেই এতে যেন কোনোভাবে জনমত ভিন্নভাবে প্রভাবিত না হয়, সে বিষয়গুলো আমাদের চিন্তায় রাখতে হবে। শুধু জনপ্রিয়তা বা রেভিনিউয়ের জন্য পুরোনো নেতিবাচক ও দুর্ভোগসংক্রান্ত সংবাদ সামনে নিয়ে আসা কাম্য নয়।

তার মতে, যদি রিপোস্ট কিংবা বুস্ট করা হয়, তাহলে সবধরনের নিউজই করা উচিত। কারণ একটি সরকারের ইতিবাচক-নেতিবাচক দুধরনের কর্মকাণ্ড থাকে। সরকার বা জনগণের সব চেষ্টা সব সময় সফল নাও হতে পারে। সফলতা-ব্যর্থতা সব ধরনের সংবাদই আসা উচিত। আমরা দেখি, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের নানা ধরনের উদ্দেশ্য থাকে, সেই উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।

এ ব্যাপারে বিবিসি বাংলার ঢাকার ব্যুরো এডিটর ওয়ালিউর রহমান মিরাজের সঙ্গে কথা হয় সময় সংবাদের। কিন্তু তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তার পরামর্শমতো বিবিসির সিনিয়র কমিউনিকেশন স্পেশালিস্ট লালা নাজাভোভার সঙ্গে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় ই-মেইলে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু রাত ১১টা পর্যন্ত তিনি কোনো সাড়া দেননি।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা

বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে সুরক্ষিত রয়েছে। বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভের বড় কোনো সংকট নেই। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ প্রতিদিন ওঠানামা করে। বৈশ্বিক কারণে দুই মাস আগে বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের যে আশঙ্কা করা হয়েছিল, সেটি এখন নেই।

সম্প্রতি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নীতির ব্যাপারে ইতিবাচক পূর্বাভাস দিয়েছে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা। মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বৈশ্বিক যুদ্ধাবস্থার মধ্যেও দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বার্তা সংস্থা এএনআইর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন পরিপক্ব। দেশটির উৎপাদন খাতের বিস্তৃত ভিত্তি এবং অবকাঠামো প্রকল্পে উদ্বুদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি এশিয়ায় ‘লক্ষ করার’ মতো একটি অর্থনীতি হতে পারে। অর্থাৎ এশিয়ায় দৃষ্টান্ত হতে পারে বাংলাদেশের অর্থনীতি।

এদিকে করোনা মহামারিতে আর্থিক চ্যালেঞ্জের মধ্যেও জোরালো প্রবৃদ্ধি ও বিপুল উন্নয়ন চাহিদার কারণে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের মতোই ‘স্থিতিশীল’ থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আন্তর্জাতিক ঋণমান সংস্থা ‘স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড পুওরস’ (এসঅ্যান্ডপি)। এসঅ্যান্ডপি আশা করছে, বাংলাদেশ আগামী ১২ মাসের মধ্যে অর্থনীতির বহিঃস্থ খাতে চাপ ও চ্যালেঞ্জ সামলে নিতে পারবে। তবে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ও আর্থিক খাতের পরিস্থিতির অবনতি হলে এসঅ্যান্ডপি ঋণমান হ্রাস করতে পারে।

লন্ডনভিত্তিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকার ভাষ্যমতে, বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য ছোট দেশের তুলনায় অনেক ভালো। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপির অনুপাত সবচেয়ে কম (৩৯ শতাংশ)। যদিও সরকারের হিসাবে তা এর চেয়েও কম। এ ছাড়া সম্প্রতি আইএমএফও বলেছে, বাংলাদেশ সংকটজনক পরিস্থিতিতে নেই। তবে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে বড় ধরনের অনিশ্চয়তা আছে।

দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ

বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল পাঁচটি অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম রয়েছে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান ৪১তম। গত এক দশকে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার ৪১ শতাংশ থেকে ২০ দশমিক ৫ শতাংশে নেমেছে।

মার্কিন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক হলিস বি. শেনারি ১৯৭৩ সালে অবজ্ঞার সুরে বলেছিলেন, বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৯০০ ডলারে পৌঁছাতেও সময় লাগবে অন্তত ১২৫ বছর। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।

করোনা মহামারির আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। এর আগে বাংলাদেশ টানা তিন বছর ৭ শতাংশের বেশি জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। মহামারি চলাকালেও ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি ৬ দশমিক ৯৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

চলতি বছর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বাংলাদেশে জ্বালানি, খাদ্যসহ নানা ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। এ পরিস্থিতি শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বের সব দেশেই এর প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ ও নেপালের অবস্থাও বেশ নাজুক।

বাংলাদেশের ইতিবাচক সংবাদ

গত ২৫ জুন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করে ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে নির্মিত দ্বিতল পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছিল।

এ ছাড়াও মেট্রোরেল, এক্সপ্রেস হাইওয়ে, কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। এ ছাড়া রেল সেক্টরের আমূল সংস্কার, রেল নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ, ঢাকা ও কক্সবাজারের মধ্যে সরাসরি রেল নেটওয়ার্ক স্থাপন, পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল নেটওয়ার্ক স্থাপনের মতো উদ্যোগে প্রশংসা কুড়াচ্ছে বাংলাদেশ।

এএনআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ, কক্সবাজার বিমানবন্দরের আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণ এবং মোংলা সমুদ্রবন্দর, পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের সংস্কার বাংলাদেশের যোগাযোগ ও অবকাঠামো খাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। যা বাংলাদেশ সরকারের একটি সাফল্য।

বিদ্যুৎ উৎপাদনে রেকর্ড উন্নতি করেছে বর্তমান সরকার। ২০০৬ সালে দেশে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ছিল ৩ হাজার ৩৭৮ মেগাওয়াট। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৬ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট এবং একদিনে সর্বোচ্চ উৎপাদন ১৪ হাজার ৭৮২ মেগাওয়াট। এ ছাড়া বাংলাদেশে এখন নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করবে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

চীনের পর তৈরি পোশাক শিল্পে বাংলাদেশের অবস্থান খুবই শক্তিশালী। তাছাড়া বর্তমান সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও সহজ ব্যবসাবান্ধব নীতিমালা তৈরি করেছে।

আমদানি ব্যয় বাড়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। করোনা মহামারির আগেও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার পাকিস্তানের চেয়ে অনেক ওপরে ছিল। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধির হার যখন ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, তখন বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!