বিনোদন

বিমানবন্দরের ৩য় টার্মিনালের কাজের অগ্রগতি ৪৪ শতাংশ

<![CDATA[

এই মুহূর্তে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম ঢাকার হজরত শাহজালাল (রাহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের কাজ। ইতোমধ্যে নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৪৪ দশমিক ১৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। আগামী বছরের মধ্যে ৯১ শতাংশ কাজ শেষ হবে। ২০২৩ সালের অক্টোবরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টার্মিনাল উদ্বোধন করবেন বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।

সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হজরত শাহজালাল (রাহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ পরিদর্শন শেষে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

এদিকে প্রকল্পটি নিয়ে বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে সমালোচনা চলছে। যার মধ্যে রয়েছে চুক্তি বহির্ভূত ঠিকাদারকে কাজ দেয়া এবং নিম্নমানের সরঞ্জাম ব্যবহার। এসব অভিযোগ স্বীকার করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হতে পারেনি। আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছি, যাতে কোনো প্রকার অনিয়ম এ প্রকল্পে না হয়। তবে করোনা মহামারি ও নানা সমস্যার ফলে প্রকল্পের ব্যয় বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
 

20220912-145856

বিমান প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে চলমান বড় প্রকল্পের মধ্যে তৃতীয় টার্মিনাল একটি। এখন পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৪৪ দশমিক ১৫ শতাংশ। যা কিনা আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে ২ শতাংশ বেশি। দ্রুত কাজটা শেষ হবে। এতে যাত্রীদের সুবিধা অনেক বাড়বে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় টার্মিনাল উদ্বোধন করতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান, আকাশ পরিবহনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যাতে উন্নত হয়। কারণ বিমানবন্দর হচ্ছে একটা দেশের প্রধান গেটওয়ে বা ড্রয়িং রুম।

আরও পড়ুন: ‘শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণে দুর্নীতি অনিয়মের অপচেষ্টা হয়েছিল’

দেশের অ্যাভিয়েশন খাতে বড় ধরনের বিপ্লব হচ্ছে জানিয়ে বিমান প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, আমাদের যশোর ও সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন। বরিশাল ও রাজশাহীসহ দেশের অন্য বিমানবন্দরগুলোরও কাজ চলছে। শুধু অবকাঠামোগত উন্নয়নই নয়, যাত্রীসেবাসহ অন্য বিষয়েও আন্তর্জাতিক মানের যে কোনো বিমানবন্দর থেকে আমাদের বিমানবন্দর কোনো অংশে কম হবে না। 

তিনি বলেন, বিমানবন্দরের লাগেজ ডেলিভারিতেও সময় অনেক কমে আসছে। আমাদের পেশাগত দিক থেকে কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা সেক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। প্রতিটি পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগিয়ে পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা রেখেছি। যাতে লাগেজ নিয়ে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়। তবে আশার কথা লাগেজ নিয়ে এমন কোনো অভিযোগও আমরা এখনও পাইনি। যাত্রীরা যাতে কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সেটা আমরা খেয়াল রাখছি। অতিরিক্ত জনবল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এতে যাত্রীরা সুন্দর ব্যবহার পাবেন। যখন দেখব সব ঠিকঠাক হচ্ছে, তখন বুঝব আমাদের কর্মকাণ্ড সার্থক হচ্ছে। পৃথিবীর বিভিন্ন এয়ারপোর্টে যে সেবা দেয়া হয়, সেই ধরনের আন্তর্জাতিক সেবা যাতে দেশের বিমানবন্দর গুলোতে থাকে, সেটা আমরা নিশ্চিত করব।

 

20220912-145020

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের কাজের মান নিয়ে কোনো ধরনের আপস করা হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না। দরপত্রে উল্লেখিত মানের পণ্যই এ প্রকল্পের কাজে সরবরাহ হবে, অন্য কোনোকিছু গ্রহণ করা হবে না। রাষ্ট্রের বা জনগণের এক পয়সা ক্ষতি হয় এ রকম কোনো কিছু এখানে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। এবং যাত্রীরাও নতুন এ টার্মিনালে ভোগান্তিতে পড়বেন না বলে তারা আশ্বাস দেন।

এ সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন বলেন, আমাদের অনেক সমস্যা রয়েছে, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সে জন্য আমরা চাইলেও অনেক কিছু করতে পারছি না। সেসব সমস্যা ও সীমাবদ্ধতার সমাধান করতেই নতুন এ টার্মিনালে যেন তা না থাকে, সেভাবেই আমরা কাজ করছি। দেশ যত উন্নত হবে, ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। সেই সঙ্গে বাড়বে যাত্রী সংখ্যা। তাই একটি আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর করতে যা যা করা দরকার আমরা তাই করছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য সর্বোচ্চ মানের যাত্রীসেবা নিশ্চিত করা। সেই সঙ্গে দেশের উন্নয়নে যাতে এই এয়ারপোর্ট ভূমিকা রাখতে পারে সে লক্ষ্য পূরণে আমরা চেষ্টা করছি।
 

20220912-125454

বিমানবন্দরে প্রবাসীদের অবমূল্যায়ন করার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে সচিব বলেন, প্রবাসী ভাইয়েরা দেশের বাহিরে গিয়ে কাজ করে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখছে, তাদের বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। কেননা প্রবাসী কর্মী ভাইয়েরা হলেন আমাদের দেশের সম্পদ। তারা আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপকভাবে সহায়তা করছেন। আমরা সম্মানের সঙ্গে প্রবাসী ভাই-বোনদের সেবা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। তারপরও তাদের যে অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে তা নিয়ে আমরা কাজ করছি। যাতে তারা সম্মানের সঙ্গে সর্বোচ্চ সেবাটা পান। তাদের জন্য টার্মিনালের বাইরে ছাত্রী ছাউনির ব্যবস্থাও আমরা রাখছি। সর্বোপরি যতভাবে তাদের সহায়তা করা যায় আমরা তা করার চেষ্টা করছি।

আরও পড়ুন: তৃতীয় টার্মিনালের কাজের গতি বাড়াতে বললেন প্রধানমন্ত্রী

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, মধ্যপ্রাচ্য হোক আর ইউরোপ হোক, যে দেশ থেকেই যাত্রীরা আসুক না কেন; তাদের ক্ষেত্রে আমাদের ব্যবহারটা হতে হবে আন্তর্জাতিক মানের। এমনকি আমাদের প্রধানমন্ত্রীও চাচ্ছেন সেবার মানটা যেন আন্তর্জাতিক মানের হয়। আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি। যাত্রীদের ক্ষেত্রে সেবার মানটা কী হবে? এবং যারা সেবা প্রদান করবেন তাদের দক্ষতা কী হবে? এসব নিয়েও আমরা কাজ করছি। বিমানবন্দরে যাতে যাত্রীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা হয়, তার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিয়েছি। আশা করি, আগামী দিনে এটা সমাধান হয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের টার্মিনালে ভেতরের কাজ হয়ে যাবে। মার্চের মধ্যেই বাইরের কন্সট্রাকশন দেখতে পাবেন। অতি দ্রুততার সঙ্গে আমাদের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। সামনের মাস থেকেই গুরুত্বপূর্ণ ইকুয়েপমেন্ট বসতে থাকবে। আশা করি, ২০২৩ সালের অক্টোবরেই প্রধানমন্ত্রী ৩য় টার্মিনালের উদ্বোধন করবেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম, তৃতীয় টার্মিনালের প্রকল্প পরিচালক মাকসুদুল ইসলাম প্রমুখ।

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Check Also
Close
Back to top button
error: Content is protected !!