বিশ্বকাপে বাড়তি উন্মাদনা এনেছে যে গানগুলো
<![CDATA[
মাস খানেক পরেই কাতারে বসছে রোমাঞ্চকর বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর। আর এই খেলা চলাকালীন পুরো সময় জুড়েই ফুটবলপ্রেমীরা মেতে উঠবে অন্যরকম এক উন্মাদনায়। ৯০ মিনিটের উত্তেজনা, নির্ঘুম চোখ নিয়ে রাতভর অপেক্ষা আর প্রিয় দলের জয়ে গগণবিদারী উল্লাসে মেতে উঠবে গোটা বিশ্ব। এরমধ্যেই ভক্তরা ছুটছেন প্রিয় দলের জার্সি আর পতাকার সন্ধানে। বিশ্বকাপ নিয়ে আগ্রহ ছেলে, বুড়ো, নারী, পুরুষ কারোরই যেন কম নয়।
ফুটবল প্রেমীদের উন্মাদনায় বাড়তি রোশনায় যোগ করে বিশ্বকাপের জন্য প্রকাশিত গানগুলো। ১৯৩০ সালে উরগুয়ে বিশ্বকাপের মাধ্যমে ফুটবল বিশ্বকাপের যাত্রা শুরু হলেও ১৯৬২ সাল থেকে ফিফা বিশ্বকাপ থিম সং প্রকাশ শুরু হয়। এরপর থেকে থিম সং ছাড়া আর বিশ্বকাপ ভাবাই যায় না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে থিম সং যেন হয়ে উঠেছে মাঠে লড়াই করার প্রেরণা। সাধারণত থিম গান নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয়া হয় ইংরেজি, বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশের ভাষা এবং স্প্যানিশ ভাষাকে। এরই মধ্যেই প্রকাশ পেয়েছে কাতার ২০২২ ফিফা বিশ্বকাপের থিম সং। ‘হায়া হায়া’ নামে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন কাতারের গায়িকা আয়েশা, আফ্রিকার ডাভিডো ও আমেরিকান সংগীতশিল্পী ত্রিনিদাদ কার্ডোনা।
ফিফা বিশ্বকাপের ৭ম আসরে প্রকাশ হয় প্রথম থিম সং। স্প্যানিশ ভাষায় রচিত “এল রক দেল মুন্ডিয়াল” গানটি গেয়েছিল বিখ্যাত ব্যান্ড দল ‘লস র্যাম্বলার্স’। গানটির অডিও প্রকাশ করা হয়েছিল সে সময়। জনপ্রিয়তার দিক থেকে গানটি এগিয়ে না থাকলেও বিশ্বকাপের প্রথম থিম গান হওয়াতে গানটি বিশ্বকাপ ফুটবল ইতিহাসের এক অংশ হয়ে আছে।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন বিটিএস সদস্যরা?
বিশ্বকাপের জন্য নির্মিত থিম সংয়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা বা নেট মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি শোনা গানের তালিকায় রয়েছে সাউথ আফ্রিকা আসরের জন্য কলম্বিয়ান শিল্পী শাকিরার গাওয়া ‘ওয়াকা ওয়াকা’ গানটি। সারা বিশ্বে এই গানের জনপ্রিয়তা রয়েছে। ইউটিউবে গানটির বর্তমান ভিউ ৩.২ বিলিয়ন। ফিফার সময় প্রকাশ পাওয়া জনপ্রিয় গানের তালিকায় রয়েছে শাকিরার গাওয়া আরও এক গান। লা লা লা শিরোনামের গানটি এখনো লোকমুখে শোনা যায়। ইউটিউবে গানটির ভিউ ১.২ বিলিয়নেরও বেশি। মূলত ব্রাজিল বিশ্বকাপে অফিশিয়ালি থিম সংয়ের সুযোগ না পেয়ে শাকিরা ‘লা লা লা’ নামে গানটি প্রকাশ করেন। অফিশিয়াল থিম সংয়ের চেয়েও গানটি বেশি সমাদৃত হয়।
২০১৪ সালের বিশ্বকাপের জন্য ব্রাজিলে আসর বসেছিল ফিফা বিশ্বকাপের। ‘উই আর ওয়ান’ গানের মধ্য দিয়ে ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল স্বাগতম জানায় বিশ্বকাপের ২০তম আসরকে। স্প্যানিশ, পর্তুগিজ এবং ইংরেজি ভাষায় রচিত গানটি গেয়েছেন জনপ্রিয় মার্কিন গায়ক পিটবুল, জেনিফার লোপেজ এবং ক্লদিয়া নিরেট। এ গানের মাধ্যমে ব্রাজিলের ফুটবল প্যাশন তুলে ধরা হয়েছিল। গানটির নেটমাধ্যমে ভিউ ৮৫০ মিলিয়ন।
আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপ
বিশ্বকাপের থিম সং গুলো নিয়ে ভাবলে শুরুতেই নিশ্চিত যে নামটি সবার আগে আসবে তা হলো সোমালিয়ান শিল্পী কে নানের ‘দ্য ওয়েভিং ফ্ল্যাগ’। এটি কোনো অফিশিয়াল থিম সং না; শুধুই কোকাকোলার এন্থেম ছিল। অথচ এটাই হয়ে যায় বিশ্বকাপ এন্থেমের প্রতিশব্দ। কে নান এর গাওয়া এই গানটি এখনো দারুণ সমাদৃত দর্শকমহলে। গানটির মোট ভিউ ৩৯৭ মিলিয়ন। ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের থিম সং ‘লাইফ ইট আপ’। এই গানের মোট ভিউ ৩৯ মিলিয়ন। ইংরেজি, রুশ ও স্প্যানিশ মিশ্রিত ভাষায় কণ্ঠ দিয়েছেন মার্কিন গায়ক নিকি জ্যাম, অভিনেতা উইল স্মিথ এবং কসোভোর নাগরিক ইরা ইজত্রেফাই।
২০২২ সালের ২০ নভেম্বর কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনীতে গান গাইবেন শাকিরা, দুয়া লিপা এবং এই সময়ের অন্যতম আলোচিত কোরীয় ব্র্যান্ড বিটিএস। যদিও ফিফা অথবা শিল্পীদের পক্ষ থেকে এ খবর আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ফিরছেন টেইলর সুইফট
প্রতি চার বছর পরপর স্বপ্নের ফুটবল বিশ্বকাপ আসে এবং চলেও যায়। প্রতিটি বিশ্বকাপেই কিছু গান তৈরি হয়; যা বিশ্বকাপের রোমন্থন স্মৃতি আপনাকে বারবার মনে করিয়ে দেয়। ফুটবলের উন্মাদনা আর উত্তেজনার মাঝেই এই গানগুলো আপনাকে আলাদাভাবে ফুটবলকে অনুভব করাবে; আপনার রক্তে যেন এই ফুটবলের পুরো নেশা ঢুকিয়ে দেবে!
]]>