বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় সিপাকে হত্যা করেন প্রেমিক
<![CDATA[
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসএসসি পরিক্ষার্থী আশিকা জাহান সিপা হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় ওই ছাত্রীকে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেন প্রেমিক (গৃহশিক্ষক) বাইজিদ সরকার।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক স্বাগত সৌম্যের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন আসামি বাইজিদ সরকার। তিনি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
গৃহশিক্ষক বাইজিদ সরকার জেলার কসবা উপজেলার বিনাউটি ইউনিয়নের খিদিরপুরের মুখলেছুর রহমানের ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে মাস্টার্স শেষবর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন।
নিহত স্কুলছাত্রী সিপা সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামের শাহিনুর ইসলামের মেয়ে। সে পরিবারসহ জেলা শহরের মুন্সেফপাড়ার ভাড়া বাসায় থাকত।
এদিকে নিহত শিক্ষার্থীর সিপার বাবা শাহিনুর ইসলাম বলেন, প্রথমদিন থেকে সবাই বাইজিদকে সন্দেহ করেছিলাম। সেজন্য সাধারণ মানুষ তাকে সেদিন পুলিশের কাছে তুলে দেয়। এখন সে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। বাইজিদ আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি এখন আদালতের কাছে দাবি জানাই তার যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।
আরও পড়ুন: প্রেমিকা হত্যা: ২০ বছর পর কারামুক্ত আদনান সৈয়দ
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম জানান, গৃহশিক্ষক বাইজিদ সরকার মুন্সেফপাড়ায় বিভিন্ন বাসাবাড়িতে টিউশনি করতেন। সিপাকেও তার বাসায় গিয়ে গত তিন বছর ধরে পড়াতেন। এরই মধ্যে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন আগে বাইজিদ পাশের একটি বাড়িতে এক শিক্ষার্থীকে পড়াচ্ছিলেন। এসময় সেই বাড়ি খালি থাকায় সে সিপাকে সেখানে আসতে বলেন। সিপা সেখানে যাওয়ার পর প্রতিবেশী একজন দেখে ফেলেন।
ওসি আরও বলেন, এনিয়ে আশপাশের বাড়িতে কানাঘুষা চলে। তাই সিপার আত্মসম্মানে লাগায় বিয়ের জন্যে বাইজিদকে চাপ দেয়। এ নিয়ে ঘটনার আগের দিন (২৭ আগস্ট) উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মধ্যরাতে সিপা কাউকে কিছু না বলে লুকিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। বের হওয়ার পর শহরের বোডিং মাঠ পুকুরপাড়ে বাইজিদ ও সিপা মিলিত হয়। সেখানে তাদের মধ্যে বিয়ের বিষয় নিয়ে বাগ্বিতণ্ডা হয়।
একপর্যায়ে বাইজিদ জানায়, সে সিপাকে বিয়ে করবে না। এই কথা শুনে সিপা ক্ষুব্ধ হলে বাইজিদ তার চুলের মুঠি ধরে পাশের গাছে মাথা আঘাত করেন। এতে সিপা অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায় বাইজিদ।
পরদিন ২৮ আগস্ট (রোববার) দুপুরে বোডিং মাঠ পুকুর থেকে সিপার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের পর বাইজিদকে সেখানে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে স্থানীয়রা উত্তম মাধ্যম দিয়ে পুলিশে সোর্পদ করে। ঘটনার পর সিপার বাবা বাইজিদকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে গত শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় শিকার করে জবানবন্দি দেন গৃহশিক্ষক বাইজিদ সরকার।
ওসি এমরানুল ইসলাম বলেন, আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দেব।
]]>