ব্রিটিশ দূতাবাস না সরানোর আহ্বান আরব দেশগুলোর
<![CDATA[
ইসরাইলের তেল আবিবে অবস্থিত ব্রিটিশ দূতাবাস অধিকৃত জেরুজালেম শহরে না সরানোর আহ্বান জানিয়েছে আরব দেশগুলো। চলতি সপ্তাহে চিঠির মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের এ আহ্বান জানিয়েছেন লন্ডনে নিযুক্ত আরব কূটনীতিকরা।
গত মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন উপলক্ষে নিউিইয়র্ক সফরকালে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এক বৈঠকে তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কথা হয়।
এ খবর প্রকাশের পর লন্ডনে নিযুক্ত আরব দেশগুলোর কূটনীতিকরা একজোট হয়ে লিজ ট্রাসকে একটি চিঠি পাঠান। তাতে দূতাবাস সরানোর পরিকল্পনাকে ‘অবৈধ ও অবিবেচনাপ্রসূত’ অভিহিত করে এ পরিকল্পনা থেকে সরে আসার আহ্বান জানান তারা।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে গত ২১ সেপ্টেম্বর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী লাপিদের সঙ্গে বৈঠক করেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। বৈঠকে লাপিদকে তিনি ব্রিটিশ দূতাবাস তেল আবিব থেকে সরিয়ে জেরুজালেমে নেয়ার প্রস্তাব দেন।
আরও পড়ুন: ইসরাইলে যুক্তরাষ্ট্রের পথেই হাঁটছে যুক্তরাজ্য
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাবের জন্য তাকে ধন্যবাদ জানান লাপিদ। এরপর এক টুইটার বার্তায় লিজ ট্রাসকে ‘একজন ভালো বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর অফিস ডাউনিং স্ট্রিট থেকে যদিও দূতাবাস সরানোর সময়সীমা এখনও জানানো হয়নি।
তবে যুক্তরাজ্যের এমন পদক্ষেপ কঠোর সমালোচনার মুখে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর আগে ২০১৮ সালে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে সরিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ আরব বিশ্বের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার মুখে পড়ে। এ সম্পর্কিত খবর প্রকাশ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই কঠোর প্রতিক্রিয়া জানান ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা।
দূতাবাস সরানোর প্রস্তাবকে ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক’ অভিহিত করে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত হুসাম জমলত এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথমবারের মতো জাতিসংঘে উপস্থিত হয়েই আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করলেন লিজ ট্রাস।’
এই প্রস্তাবকে ‘অনৈতিক, অবৈধ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন’ আখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের মাধ্যমে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান হুমকির মুখে পড়বে।
আরও পড়ুন: জেরুজালেমে ব্রিটিশ দূতাবাস সরানোর প্রস্তাবে ফিলিস্তিনের ক্ষোভ
১৯৬৭ সালে আরবদের সঙ্গে যুদ্ধে জিতে ইসরাইল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে নেয় এবং পুরো জেরুজালেম শহর ইসরাইলি রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে। ২০১৭ সালে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের ব্যাপক বিতর্কিত ঘোষণাটি দেন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
এর এক বছর পর তা বাস্তবায়ন হয়। এ নিয়ে ফিলিস্তিনের পাশাপাশি পুরো মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে টানা কয়েক দিন বিক্ষোভ করেন ফিলিস্তিনিরা। বিক্ষোভ দমনে ব্যাপক হামলা চালায় ইসরাইলি বাহিনী। এতে নিহত হন অর্ধশত ফিলিস্তিনি।
]]>