ভারত থেকে সহজ ও সাশ্রয়ী হয়েছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য
<![CDATA[
পদ্মা সেতু ব্যবহারে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে সহজ ও সাশ্রয়ী হয়েছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। খরচ কমায় অনেক ভারতীয় রফতানিকারকের এখন বাংলাদেশ থেকে পণ্য আমদানিতেও আগ্রহ বেড়েছে। এতে চলতি অর্থবছর বিপুল পরিমাণ আমদানি-রফতানির পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে বলে মনে করছেন বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টরা।
বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টরা জানান, বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে ভারতে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক শহর হিসেবে পরিচিত কলকাতার দূরত্ব ৮৫ কিলোমিটার। দূরত্ব কম হওয়ায় দেশের অধিকাংশ ব্যবসায়ীর আগ্রহ বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে। দেশের শিল্প-কলকারখানায় ব্যবহৃত কাঁচামালের ৭০ ভাগ আমদানি হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। তবে বৈরী আবহাওয়ায় ঘন কুয়াশা আবার কখনো যানজটে ট্রাকে বেনাপোল থেকে ঢাকায় পণ্য নিতে ৩ থেকে ৪ দিন লেগে যেত। এতে অতিরিক্ত সময় যেমন ব্যয় হতো, তেমনি দ্রুত পণ্য না পৌঁছানোয় ব্যাহত হতো শিল্প-কলকারখানার উৎপাদন প্রক্রিয়া।
এ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে বহুদিন ধরে মানুষের দাবি ছিল পদ্মা সেতু তৈরির। তবে সেতু তৈরির এ সাহস দেখাতে পারেনি বিএনপি বা অন্য রাজনৈতিক দলগুলো। অবশেষে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে দিনবদলের স্লোগান নিয়ে পদ্মার বুকে সেতু তৈরির সাহস দেখায়। আর ২০২২ সালের ২৫ জুন বাংলার ১৬ কোটি মানুষের সে স্বপ্ন পূরণ করে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করে শেখ হাসিনার সরকার। এতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের যশোরসহ ২১ জেলা যুক্ত হয়। ফেরির যন্ত্রণা এড়িয়ে বেনাপোল বন্দর থেকে মাত্র ৫ ঘণ্টায় পণ্যবাহী ট্রাক এখন চলে যাচ্ছে ঢাকায়। ফলে বাণিজ্য সহজ হওয়ায় অন্য বন্দর ব্যবহারকারীরা বেনাপোল বন্দর ব্যবহার শুরু করেছেন। এদিকে পদ্মা সেতুতে রেলপথের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। সড়কপথের পাশাপাশি রেলপথ ব্যবহার শুরু হলে বেনাপোল বন্দর দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশি ভূমিকা রাখবে মনে করছেন বাণিজ্য সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে আমদানি বাড়লেও পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী
পণ্য পরিবহনকারী ট্রাকচালক রহমত জানান, পদ্মা সেতুর কারণে আমদানি পণ্য নিয়ে হাসতে হাসতে যেতে পারছি ঢাকায়। কাঁচামাল নিয়ে এখন আর চিন্তায় পড়তে হয় না।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সাহসিকতায় পদ্মা সেতুর কারণেই আজ আমাদের বাণিজ্য সহজ হয়েছে। আগামী দিনে আমদানি-রফতানি দুই-ই বেড়েছে।’
বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ জানান, পদ্মা সেতুতে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় ভারতীয়রা এখন এ দেশ থেকে পণ্য আমদানিতে ঝুঁকছে। এতে দেশে কর্মসংস্থান বেড়ে অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল জানান, পদ্মা সেতুর কল্যাণে বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যে আরও উৎসাহিত হচ্ছেন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। বেনাপোল বন্দর দিয়ে বর্তমানে প্রতিদিন ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে প্রায় ৪০০ ট্রাক পণ্য। আর বাংলাদেশি পণ্য ভারতে রফতানি হচ্ছে ৩০০ ট্রাকের উপরে। দ্রুত পণ্য খালাসে সহযোগিতা করা হচ্ছে। গত তিন মাসে ২৫ হাজার ৮৪৬টি ভারতীয় ট্রাকে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি ও বন্দর থেকে ৩৯ হাজার ৭১৭টি বাংলাদেশি ট্রাকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন পণ্য খালাস হয়েছে।
]]>