বাংলাদেশ

ভারত-রাশিয়া শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছে না

<![CDATA[

ইউক্রেন সংঘাত ও সময়সূচি সংক্রান্ত সমস্যার কারণে ভারত ও রাশিয়ার চলতি বছরের বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) দ্য ইকোনোমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে মতে, চলতি ডিসেম্বর মাসেই দুই দেশের মধ্যে বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। সম্মেলন উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মস্কো সফরে যাবেন বলেও ঠিক হয়েছিল। তবে সময়সূচি না মেলায় সম্মেলনে যাচ্ছেন না তিনি।

সূত্রের বরাত দিয়ে ডব্লিউআইওএন জানিয়েছে, গুজরাট ও হিমাচল প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন ও পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর কারণে ভারত-রাশিয়া বার্ষিক সম্মেলন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে উজবেকিস্তানে সাইহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন সম্মেলনের ফাঁকে বৈঠক করেন মোদি ‍ও পুতিন। এছাড়া বেশ কয়েকবার ফোনে কথা বলেন তারা।

ভারত ও রাশিয়ার বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন হল দুই দেশের নেতাদের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ প্রক্রিয়া। ২০০১ সালের নভেম্বরে মস্কোতে প্রথম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন: পি কে হালদারকে ১৩ জানুয়ারি ফের আদালতে তোলার নির্দেশ

এরপর থেকে এ পর্যন্ত ২১ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শেষ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল দিল্লিতে গত বছরের (২০২১) ৬ ডিসেম্বর। সে সময় রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন নয়াদিল্লি সফর করেন।

রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে পশ্চিমা দেশগুলো ও রাশিয়া—দুই পক্ষের সঙ্গেই তাল মিলিয়ে চলছে ভারত। যুদ্ধ শুরুর পরই দ্রুত ইউক্রেনে মানবিক সহায়তা দিতে এগিয়ে আসে নয়াদিল্লি। আবার যুদ্ধের ৯ মাস গড়ালেও এখনো রাশিয়ার অভিযানের নিন্দা জানায়নি তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই পক্ষের সঙ্গেই যেহেতু ভারতের সম্পর্ক ভালো, তাই চলমান যুদ্ধ থামাতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে দেশটি।

রাশিয়ার অভিযানের নিন্দা না জানানোর পেছনে একটি কারণ দেখান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এটা করা হয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষার বিষয়গুলো মাথায় রেখে।

আরও পড়ুন: মোদির মন্ত্রে গুজরাটে বাজিমাত বিজেপির, এগিয়ে গেলেন প্রধানমস্ত্রী হওয়ার দৌড়ে

দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও চলতি মাসে বলেছেন, ‘অন্যদের’ চাহিদা মেটানোর কথা মোটেও ভাবছেন না তিনি। এখানে অন্যদের বলতে পশ্চিমা দেশগুলোকে বুঝান জয়শঙ্কর।

ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক গত শতকে স্নায়ুযুদ্ধের সময় থেকেই। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র ও অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করে রাশিয়া।

২০১১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ভারতে আমদানি করা অস্ত্রের ৬০ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। আর রাশিয়া থেকে চলতি বছরের অক্টোবরে ভারতের মোট চাহিদার ২২ শতাংশ জ্বালানি তেল আমদানি করা হয়েছে।

তবে যুদ্ধ যতই জোরদার হয়েছে, বিশ্বজুড়ে বেড়েছে জ্বালানি ও খাদ্যের সংকট। ফলে রাশিয়া নিয়ে নিজেদের অবস্থান নতুন করে ভাবতে হচ্ছে দিল্লিকে।

সেপ্টেম্বরে উজবেকিস্তানে সাংহাই করপোরেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মোদি বলেছিলেন, ‘আমি জানি বর্তমান সময়টা যুদ্ধের নয়। এটা নিয়ে আপনার সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়েছে।’

আরও পড়ুন: মস্কোর শপিং সেন্টারে ভয়াবহ আগুন

সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত বড় অর্থনীতির ২০টি দেশের জোট জি-২০ সম্মেলনে মোদি বলেন, ‘আমাদের ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর একটা পথ খুঁজতে হবে।’ রাশিয়া নিয়ে ভারত অবস্থান পরিবর্তনের দিকে রয়েছে বলে মনে করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের (ওআরএফ) গবেষক বিবেক মিশ্র।

তার ভাষায়, ‘আমরা ১০ মাস ধরে দেখেছি, যুদ্ধ থামানোয় মধ্যস্থতা করতে ভারতের আগ্রহ বেড়েছে। এটা আরও পরিষ্কার হয়েছে ভারতের এটা বলার মধ্য দিয়ে যে এই সময়টা যুদ্ধের নয়। আগামী বছরে দিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে যুদ্ধে মধ্যস্থতা করতে ভারতের ভূমিকা আরও জোরদার হতে পারে।’

 

]]>

Show More

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
error: Content is protected !!