মিয়ানমারে জান্তার অধীনে নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের আহ্বান এনইউজির
<![CDATA[
মিয়ানমারে সেনা সরকারের অধীনে আসন্ন নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়েছে ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি)। সেই সঙ্গে মিয়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় শিগগিরই একটি সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছে জান্তাবিরোধী এ সরকার।
সম্প্রতি কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সিভিল সোসাইটি কনফারেন্সে এই আহ্বান জানান এনইউজি সরকারের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী অং মিও মিন।
গত বছর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির কুখ্যাত সেনাবাহিনী। এরপর প্রায় বছর ধরে দেশ চালাচ্ছে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) নামে জান্তা সরকার। ক্ষমতা আরও পাকাপোক্ত করতে আগামী বছর একটি নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে এসএসি।
এদিকে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের কয়েক মাস পরই গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচির অনুগতরা এনইউজি নামে ছায়া সরকার প্রতিষ্ঠা করে। একই সঙ্গে দেশজুড়ে যে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে ওঠে তার অংশ হিসেবে নিজস্ব সেনাবাহিনী পিপল’স ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) নামে একটি সশস্ত্র বাহিনীও প্রতিষ্ঠা করে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার জান্তার বিরুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ
সেই থেকে প্রায় দুই বছর ধরে মিয়ানমার জান্তা সরকারকে উৎখাতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে এনইউজি। একই সঙ্গে স্বীকৃতি আদায়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এ সরকার।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ার সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন এ সরকারের প্রতিনিধি দল। শুধু তাই নয়, গত মাসে তৃতীয়বারের মতো চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর শি জিনপিংকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি দেন তারা।
শুক্রবার (৪ নভেম্বর) কম্বোডিয়ার রাজধানী নমপেনে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সিভিল সোসাইটি কনফারেন্সে অংশ নিয়ে এনইউজির প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান সরকারের মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী অং মিও মিন।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অধীনে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন আসিয়ানকে অবশ্যই বর্জন করতে হবে। অবৈধ এই নির্বাচনের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। বিপরীতে আমরা এমন একটি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যেতে চাই যার মাধ্যমে মিয়ানমারে একটি নতুন ফেডারেল গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন সম্ভব হয়।
এনইউজি সরকারের প্রতি সমর্থনের আহ্বান জানিয়ে মিন বলেন, আসিয়ানের উচিৎ এনইউজিকে মিয়ানমারের জনগণের বৈধ ও নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া। একই সঙ্গে অবৈধ সামরিক জান্তা সরকারের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক প্রত্যাখ্যান করা।
আরও পড়ুন: জিনপিংকে অভিনন্দন মিয়ানমার জান্তাবিরোধী জোটের
আসিয়ান হচ্ছে একটি অর্থনৈতিক সংগঠন, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০ টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত। যা পারস্পরিক সহযোগিতার প্রচার এবং সদস্য ও এশিয়ার অন্যান্য দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, নিরাপত্তা, সামরিক, শিক্ষাগত ও সামাজিক -সাংস্কৃতিক ঐক্য গড়ে তোলার উদ্দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
গত ২৬ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে তিন দিনব্যাপী একটি ভার্চুয়াল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কম্বোডিয়ার সভাপতিত্বে ওই সম্মেলনে মিয়ানমারে চলমান সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতারা। একইসঙ্গে সংঘাত বন্ধ করে দ্রুত গোলাগুলি থামানোর আহ্বান জানান তারা।
আগামী সপ্তাহে (১২-১৩ নভেম্বর) কম্বোডিয়ার নমপেনে ইউএস-আসিয়ান বার্ষিক সম্মেলন ও ইষ্ট-এশিয়া সামিট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ওই সম্মেলন দুটিতে অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে স্বয়ং উপস্থিত থাকবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
]]>




