মুন্সীগঞ্জে স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে হকিস্টিক দিয়ে মারধর
<![CDATA[
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়িতে স্কুলে ঢুকে এক প্রধান শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) উপজেলার ১৪নং পশ্চিম সোনারং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বাবুল জানান, বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের সিঁড়ির নিচে মুরগির খামারের বস্তাভর্তি খাবার মজুত রাখতেন একই এলাকার চুন্নু মাদবর। পাশাপাশি স্কুলের আঙিনায় খাবারগুলো শুকানোরও কাজ করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশে, সেখানে গ্রিল দিয়ে ফুলে গাছ রোপণ করেছেন। এসব কারণে চুন্নু মাদবর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারধর করেন।
বিদ্যালয়টির অন্যান্য শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ে ফুল গাছ রোপণের পর শিক্ষককে হেনস্তা করার চেষ্টা করে যাচ্ছিল চুন্নু মাদবর। এরই মধ্যে বিদ্যালয়টির একজন শিক্ষক পুরো সময় ক্লাস না করে ছুটি নিয়ে জরুরি প্রয়োজনে চলে গেছেন। হাজিরা খাতায় কেন তাকে অনুপস্থিত দেখানো হলো না? এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে স্কুলের সংলগ্ন একটি দোকানের সামনে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে চুন্নু মাদবর প্রধান শিক্ষকের সাথে দ্বন্দ্বে জড়ান। পরে প্রধান শিক্ষক স্কুলে চলে আসেন। এরপর হকিস্টিক চুন্নু মাদবরের ছেলে শরীফ মাদবর হকিস্টিক নিয়ে স্কুলে এসে প্রধান শিক্ষককে মারধর করেন। তাকে আটকানোর জন্য বিদ্যালয়ে দফতরিসহ অন্যরা প্রাণপণ চেষ্টা চালান। এর ফাঁকে অফিসে ঢুকে পড়েন চুন্নু মাদবর। তিনিও প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বাবুলকে বেধড়ক মারধর করেন। এই সময় প্রধান শিক্ষক আকুতি করেও রক্ষা করতে পারেননি। এসময় নারী শিক্ষকরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন উপজেলার শিক্ষক নেতারা। টঙ্গীবাড়ি উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান জানান, এ আঘাত পুরো শিক্ষক সমাজের ওপর আঘাত। স্কুল চলাকালে স্কুলে ঢুকে বহিরাগতের এমন হামলা শিক্ষক সমাজকে আতঙ্কে ফেলেছে।
আরও পড়ুন: চাঁদা না দেয়ায় রায়েরবাজারে মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে জখম, ৩ জনকে মারধর
প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলার খবরে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু. রাশেদুজ্জামান। তিনি জানান, যেহেতু আমলযোগ্য অপরাধের ঘটনা ঘটেছে, তাই প্রধান শিক্ষক মামলা করেছেন। এখন তদন্তপূর্বক পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
টঙ্গীবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজিব খান জানান, জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আঞ্জুমান আরা বেগম জানান, মুরগির খাবার রাখার কারণে দুর্গন্ধ ছাড়ানো ছাড়াও বিদ্যালয়টির স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছিল। এতে বিদ্যালয়ে আসা শিশুরা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই প্রধান শিক্ষককে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়। বিদ্যালয়টিতে ১৪২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
চুন্নু মাদবর ফোনে তার বিরুদ্ধের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রধান শিক্ষক প্রথমে তার গালে চড় মেরেছেন বলেই পরের ঘটনাগুলো ঘটেছে। আগে মুরগির খাবার রাখলেও বেশ কিছুদিন ধরে তা আর করা হচ্ছে না।
]]>